এক বন্ধু নামাজে, আরেক বন্ধু ২৪ লাখ টাকা নিয়ে উধাও!

টাকাজুয়েল ইসলাম মিঠু ও জাহিদুল ইসলাম রিপন বন্ধু। পুরান ঢাকার হক মার্কেটে অংশীদার ভিত্তিতে ফেব্রিক্সের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। করোনার মধ্যেও ব্যবসা তাদের চলছিল ভালোই। কিন্তু গত মঙ্গলবার (২৩ জুন) দুপুরের এক ঘটনায় এক বন্ধুর মাথায় হাত। সকালে ব্যাংক থেকে ২৫ লাখ টাকা তুলে নিয়ে আসেন দোকানে। এক লাখ টাকা পাওনাদারকে পরিশোধ করেন। ব্যবসায়িক অংশীদার ও বন্ধু রিপন এবং দোকান কর্মচারী ইমরানের জিম্মায় বাকি ২৪ লাখ টাকা রেখে জোহরের নামাজ পড়তে যান পাশের মসজিদে। ফিরে এসে দেখেন টাকাসহ বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার রিপন উধাও। মোবাইল ফোন বন্ধ। পরে বিষয়টি দ্রুত পুলিশকে জানান তিনি। তিন দিনের মাথায় রাজধানীর কোতোয়ালি থানা পুলিশ ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ খুলনা থেকে গ্রেফতার করে রিপনকে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, রিপনের সঙ্গে অহিদুল ইসলাম মিলন ও আমিনুল ইসলাম নামে আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মিলন ও আমিনুল চুরি করা টাকাগুলো নিজেদের কাছে গচ্ছিত রেখে রিপনকে সহযোগিতা করেছিল। মিলন ও রিপন সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে। খুলনা থেকে ঢাকায় এনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শনিবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।

পুলিশ জানায়, পুরান ঢাকার ইসলামপুর আহসান উল্লাহ সড়কের হক মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় দোকান ছিল জুয়েল ও রিপনের। নিজেদের নামের সঙ্গে মিল রেখে ‘মেসার্স জে আর ফেব্রিক্স’ নামে ব্যবসা পরিচালনা করতেন তারা। কিন্তু লোভে পড়ে ব্যবসায়িক পার্টনার ও বন্ধু রিপন ২৪ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, দোকানে ২৪ লাখ টাকা রেখে জুয়েল মসজিদে যাওয়ার পরপরই মাথায় লোভ চলে আসে রিপনের। কৌশল হিসেবে সে তাৎক্ষণিক দোকান কর্মচারী ইমরানকে নিচে গিয়ে তার জন্য এক কাপ চা আনতে বলে। ইমরান চা আনতে যাওয়ার পরপরই পুরো টাকা নিয়ে চম্পট দেয় রিপন।

পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় জুয়েল ইসলাম মিঠু বাদী হয়ে একটি মামলা (নং ১৬, তারিখ ২৩ জুন ২০২০) দায়ের করেন। পরে রিপনের অবস্থান জানার চেষ্টা করা হয়। দেখা যায়, সে ওইদিনই টাকা নিয়ে খুলনায় চলে গেছে। পরে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক পবিত্র একটি টিম নিয়ে বুধবার সকালে খুলনা চলে যান। তিনি সেখানে দুই দিন অবস্থান করে বৃহস্পতিবার রাতে রিপনকে গ্রেফতার করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিপন টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে। পরে তার দেখানো মতে মিলন ও আমিনুলের হেফাজত থেকে চুরি করা টাকা উদ্ধার করা হয়।

অভিযানিক দলের পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, রিপন স্বীকার করেছে সে লোভে পড়ে এই টাকা চুরি করেছিল। লোভের কারণে বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনারের টাকা নিতেও তার বিবেকে বাধেনি।