আসামির জন্য প্রেসক্রিপশন লিখে ধরা খেলো ‘ডাক্তার’!

আদালত
আদালতে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিন আবেদন করেছিলেন এক ব্যক্তি। এজন্য কথিত এক ডাক্তারের কাছ থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে জমাও দিয়েছিলেন আদালতে। কিন্তু আদালত প্রেসক্রিপশন দেখে জামিন আবেদন নাকচ করে সেই ডাক্তারকেই গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ যথাযথ যোগ্যতা না থাকার পরেও সেই ব্যক্তি নিজেকে ডাক্তার হিসেবে উল্লেখ করে প্রেসক্রিপশন লিখেছিলেন।

এছাড়া স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদালত ওই এলাকায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের অনুমোদনহীন আরও কতজন ব্যক্তি নিজেকে ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে তার একটি তালিকা করতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

সোমবার (২৭ জুলাই) পটুয়াখালীর দ্বিতীয় আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শিহাব উদ্দীন এই আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আসামির জন্য প্রেসক্রিপশন লিখে ‘ধরা খাওয়া’ ডাক্তার হলেন পটুয়াখালীর বাউফল থানাধীন মেডিক্যাল গেট এলাকার জুনায়েদ মেডিক্যাল হলের মাহমুদা বেগম।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বাউফল থানার জিআর মামলা (নং ১৭১/২০) মামলায় হাজতি ইব্রাহীমকে আদালতে হাজির করে তার উকিল একটি প্রেসক্রিপশন দাখিল করে আসামিকে অসুস্থ বলে দাবি করেন। আদালত প্রেসক্রিপশনটি পর্যালোচনা করে দেখেন প্রেসক্রিপশন প্রদানকারী ডাক্তার মাহমুদা বেগম কোনও এমবিবিএস ডিগ্রিধারী ডাক্তার নন। এমনকি বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ এর অধীনে নিবন্ধিতও নন। প্রেসক্রিপশনে ডাক্তার তার ডিগ্রি হিসেবে বিভিডিএ, ঢাকা উল্লেখ করেছেন।
আদালত তার আদেশে বলেন, ডাক্তার মাহমুদা বেগম এই প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করে আইন লঙ্ঘন ও দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন। এ অবস্থায় মাহমুদা বেগমের বিরুদ্ধে নিবন্ধন ছাড়া অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা প্রদান ও প্রতারণামূলকভাবে নিজেকে ডাক্তার হিসেবে প্রতিনিধিত্বকরণের অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়াকে আদালত সমীচীন মনে করেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইনের অধীনে অপরাধ আমলে নেওয়ার পাশাপাাশি আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যুর নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আরও একটি আদেশ দিয়েছেন। ওই আদেশে বাউফল উপজেলায় মাহমুদা বেগম ছাড়াও অনিবন্ধিত অন্য কোনও ডাক্তার রয়েছে কিনা তা ন্যায় বিচারের স্বার্থে তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। আদালত আদেশে বলেন, ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ এর অধীন নিবন্ধিত নন কিন্তু ডাক্তার পরিচয় দিয়ে বেআইনিভাবে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন এমন ব্যক্তিদের একটি তালিকা তদন্তের মাধ্যমে প্রণয়ন করে অত্র আদালতের কাছে আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে পাঠাতে সহকারী পুলিশ সুপার, বাউফল সার্কেলকে নির্দেশ দেওয়া হলো। তদন্তকারী কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা ছাড়াও সার্বিক সহযোগিতার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রদান করা হলো।’