ওপরে বিদেশি মুদ্রা, ভেতরে সাবান দিয়ে প্রতারণা!

প্রতারক চক্রের দুই সদস্যওপরে সৌদি আরবের মুদ্রা রিয়াল দিয়ে মোড়ানো। প্রথম দেখায় মনে হবে রিয়ালের বান্ডিল। কিন্তু একটি মুদ্রার নিচে বাকিগুলো সাদা কাগজ। আর তার ভেতরে সাবান রাখা। এই বান্ডিল কুড়িয়ে পাওয়ার কথা বলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতো একটি চক্র। কখনো সৌদি রিয়াল, কখনো বা ডলারের কথা বলতো। বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর নীলক্ষেত এলাকা থেকে এমনই একটি প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো—আজাদুর রহমান মাহফুজ (৪৮) ও জাহাঙ্গীর আলম (৩৫)। তাদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা মূল্যমানের সৌদি রিয়াল এবং একটি গামছার ভেতরে কাগজ দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় একটি সাবান উদ্ধার করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশ্যাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) আশরাফউল্লাহ জানান, এরা পেশাদার প্রতারক চক্রের সদস্য। বিদেশী মুদ্রার বান্ডিল কুড়িয়ে পাওয়ার কথা বলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে এরা। এই প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদেরও গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, অভিনব এই প্রতারক চক্রের সদস্যরা কোনও এক ব্যক্তিকে টার্গেট করে তার কাছে একশ’ টাকার একটি সৌদি রিয়ালের নোট দেখিয়ে এটি চলবে কিনা জানতে চায়। টার্গেটকৃত ব্যক্তি এ বিষয়ে আগ্রহী হলে তার কাছে আরও নোট আছে বলে জানায়। পরে টার্গেটকৃত ব্যক্তি লোভের বশবর্তী হয়ে এসব বিদেশী মুদ্রা আসল কিনা তা যাচাইয়ের জন্য মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ভাঙিয়ে নেয়। পরে প্রতারক চক্রের সদস্যরা সৌদি রিয়ালগুলো অর্ধেক দামে বিক্রির প্রস্তাব দিলে টার্গেটকৃত ব্যক্তিরা সাধারণত লোভের বশবর্তী হয়ে তা কিনে ফেলে। এই সুযোগে একটি-দুটি আসল সৌদি রিয়াল দিয়ে ভেতরে কাগজ ও সাবান দিয়ে বান্ডিলের আদলে তৈরি করে তা টার্গেটকৃত ব্যক্তির কাছে দিয়ে কেটে পড়ে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, গ্রেফতারকৃত মাহফুজ ও জাহাঙ্গীর দীর্ঘ দিন ধরে সাধারণ মানুষকে এভাবে বোকা বানিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। তাদের নামে রাজধানী ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে বরিশাল ও গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতারণার মামলা রয়েছে। এই চক্রের আরও অনেক সদস্য রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।