যাত্রী বেশে বাসে ডাকাতি, গ্রেফতার ৫

গার্মেন্টসের স্টাফ বাসে যাত্রী বেশে ডাকাতির ঘটনায় ৫ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ঢাকা জেলা। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) গভীর রাতে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানার দুর্গম চর বাচামরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রফতারকৃতরা হলেন মো. সুমন মিয়া (২৫), মো. শরীফ মোল্লা (২০), মো. মুহিত শেখ (২২),  মো. আলমগীর হোসেন (২৮), মো. রাজীব হোসেন (২১)। 

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে পিবিআই, ঢাকা জেলার উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সালেহ ইমরান বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য জানান।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২৪ জুলাই রাত আনুমানিক ২টায় গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাট যাওয়ার জন্য সাভার থানাধীন হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি অফিস স্টাফ লেখা বাসে উঠেন মামলার বাদী মাইদুল ইসলাম। বাসেটিতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাসচালকসহ অজ্ঞাত ৭-৮ জন তার হাত, পা, চোখ বেঁধে বাসের মেঝেতে ফেলে এলোপাতাড়ি মারধর এবং ভয়ভীতি দেখায়। তারা মাইদুলের কাছ থেকে মোবাইল সেট, কাপড় চোপড় ও ২৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাকে তুরাগ নদীর পাড়সংলগ্ন রিকু ফিলিংস্টেশনের বিপরীত পাশে ফেলে রেখে চলে যায়। এ ব্যাপারে ভিকটিম মাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে সাভার থানায় অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামি করে একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করেন।  

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সালেহ ইমরান জানান, গত কোরবানির ঈদের কিছুদিন আগে এই গ্রুপটি গার্মেন্টসের স্টাফ বাস নিয়ে ডাকাতিতে নামে। মূলত গার্মেন্টস ছুটির পর শ্রমিকদের পৌঁছে দিয়ে মধ্যরাতে তারা এই কাজটি করে। বাসটি চালাতেন লালন সরদার। লালনকে গ্রেফতার করে তার কাছ থেকে বাদীর মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। সে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সালেহ ইমরান জানান, এর আগে লালনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ধামরাই থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বাস এবং সহযোগী আলমগীরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি জানান, ওই ঘটনায় মোট ১১ জন ডাকাত যাত্রী বেশে গাড়িতে ছিল। লালনকে গ্রেফতারের পর এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। অবশেষে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার দুর্গম চর বাঁচামরা এলাকা থেকে উক্ত চক্রের মূল হোতা আলমগীরসহ ৫ ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়।

এই চক্রের সেকন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করে মুহিত। সে হেলপার হিসেবে গাড়ির গেটে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলে গেট লাগিয়ে দিয়ে ভেতরে লাইট বন্ধ করে দিতো। মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা, পয়সা, মোবাইল হাতিয়ে নিতো আলমগীর। যাত্রীদের মারধর করে হাত-পা-চোখ বেঁধে সাভার এলাকার রাস্তার পাশে অপেক্ষাকৃত নির্জন জায়গায় ফেলে দিতো। 

গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। পাশাপাশি ওই ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন ডাকাতের নাম প্রকাশ করেছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তদন্ত কর্মকর্তা। 

ওই ঘটনায় জড়িত আসামিদের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে ছিনতাই এবং মাদক মামলার অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনায় পলাতক অন্য ডাকাতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা।