সন্ত্রাসীর গুলি প্রতিহত করতেই সরকার পুলিশকে অস্ত্র দিয়েছে: আইজিপি

প্রায় পাঁচ মাস পর কক্সবাজারে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, সন্ত্রাসীরা গুলি করলে সেটা প্রতিহত করতেই সরকার পুলিশকে অস্ত্র দিয়েছে। প্রয়োজনের নিরিখে জীবন রক্ষার জন্য সরকারি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের (সিপিএইচ) নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের  প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, ‘বন্দুকযুদ্ধ হলে কি আমাদের লোকজন বন্দুক ফেলে পালিয়ে চলে আসবে? জকির ভয়াবহ ডাকাত, কক্সবাজারে গিয়ে খবর নেন। গত তিন বছরে তার কাছ থেকে কমপক্ষে দেড়শ’ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল (২৩ ফেব্রুয়ারি) যখন গোলাগুলিতে সে মারা গেছে, তখনও তার কাছ থেকে ৯টা অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। যখন এ ধরনের কোনও বিপজ্জনক আর্ম গ্যাং গুলি করবে, তখন কি আমরা শহীদ হয়ে চলে আসবো?’

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এলাকার মানুষ জানেন জকির ডাকাত কী জিনিস। তার হাতে কত লোক অপহৃত হয়েছেন, আর কতজন মারা গেছেন। তাই যেটা হয়েছে, সেটা আমি মনে করি, প্রয়োজন হলে হবে, না হলে হবে না। এখানে ঘোষণা দিয়ে চালু করা বা বন্ধ করার কোনও বিষয় নাই।’

তিনি বলেন, ‘যেখানে আর্ম গ্যাং আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহার করবে, সেখানে আমরা প্রয়োজনের নিরিখে জীবন রক্ষার জন্য সরকারি অস্ত্র ব্যবহার করবো। সরকারি অস্ত্র দেওয়া হয়েছে সেটাকে প্রতিহত করার জন্য। সরকার অস্ত্র দিয়েছে লাঠি হিসেবে ব্যবহারের জন্য না। লাঠি এক রকম আর লিথেল উইপন আরেক রকম। সরকার যদি শুধু লাঠি দেয়, আমরা লাঠিই ব্যবহার করবো।’

এর আগে সিপিএইচ'র নবনির্মিত ভবন প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, ‘গত বছরে মার্চে অতিমারি করোনার আবির্ভাব ঘটে, আর এতে সবচেয়ে বড় ক্যাজুয়ালিটি হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের। করোনায় প্রায় ৮৩ জন সদস্য শাহাদাতবরণ করেছেন। সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে ২১ হাজার সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল একটি জেনারেল হাসপাতাল ছিল, কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে আমরা এটিকে দ্রুত কোভিড হাসপাতাল হিসেবে রূপান্তর করি। সাড়ে ১১০০ থেকে ২৫০০ বেডে রূপান্তর করি। এখানে পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা ছাড়াও প্রায় ১৫০০ করোনা আক্রান্ত সাধারণ নাগরিককে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’

আইজিপি বলেন, ‘পুলিশ সদস্যরা খুব চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। নানা কারণে পুলিশে হার্টের রোগী, লাং, কিডনি ও ক্যানসারের রোগী প্রচুর। প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা খরচ করি তাদের বাইরে ট্রিটমেন্ট করানোর জন্য। এ হাসপাতালকে একটা পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল তৈরির চেষ্টা করছি, যাতে সব ধরনের চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়। আজকে যে ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি পেয়েছে, এরপর বাকি থাকবে আর ক্যানসার ইউনিট। আশা করছি আগামী বছর এটি চালু করা সম্ভব হবে।’