‘বস রাফি’সহ দুই জনের স্বীকারোক্তি

ভারতে এক তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার জেরে নারী পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আশরাফুল মণ্ডল ওরফে বস রাফিসহ দুই জন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বুধবার (৮ জুন) রিমান্ড শেষে চার আসামিকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর আশরাফুল মণ্ডল ওরফে বস রাফি ও তার সহযোগী আব্দুর রহমান শেখ ওরফে আরমান স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদারের আদালত আসামি আশরাফুলের এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসীমের আদালত আসামি আব্দুর রহমানের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

অন্যদিকে অপর দুই আসামি সাহিদা বেগম ওরফে ম্যাডাম সাহিদা ও মো. ইসমাইল সরদারকে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পরে আদালত তাদের সবাইকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গত ২ জুন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াছমিন আরার আদালত তাদের চারজনের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পাচার হওয়ার পর ৭৭ দিনের নির্যাতন ও বন্দীদশা থেকে সম্প্রতি পালিয়ে দেশে ফিরে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন ওই তরুণী। মামলায় মোট ১২ জনকে আসামি করা হয়ে। তারা হলেন- রিফাদুল ইসলাম হৃদয়, আনিস, আবদুল কাদের, মেহেদী হাসান বাবু, মহিউদ্দিন, হারুন, বকুল ওরফে ছোট খোকন, সবুজ, রুবেল ওরফে রাহুল, সোনিয়া, আকিল ও ডালিম।

সম্প্রতি ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশের এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের বেঙ্গালুরু পুলিশ রিফাজুল ইসলাম বাবু ওরফে টিকটক বাবু ওরফে হৃদয় বাবু, সাগর, মোহাম্মদ বাবা শেখ ও দুই নারীসহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করে। ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা ২৭ মে রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার আইন ও পর্নোগ্রাফি অ্যাক্টে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় টিকটিক বাবুসহ অজ্ঞাত আরও ৪ জনকে আসামি করা হয়। উক্ত ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আরও কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব উক্ত ঘটনা ছায়াতদন্ত শুরু এবং জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

জানা গেছে, নির্যাতিত ওই তরুণীকে ভারতে পাচার করে রিফাজুল ইসলাম বাবু ওরফে টিকটক হৃদয়। বস রাফি ওই তরুণীকে গত বছরের অক্টোবরে বেঙ্গালুরে নিয়ে সবুজের বাড়ির সেফ হাউজে রাখে। সেখানেই ভিডিওটি ধারণ করা হয় বলে জানা যায়। বেঙ্গালুরে বস রাফির বেশ কয়েকটি সেফ হাউজ রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে তার সেফ হাউজ রয়েছে। এরমধ্যে ম্যাডাম সাহিদার সেফ হাউজ অন্যতম।

আরো পড়ুন
‘বস’ রাফি ও ‘ম্যাডাম’ সাহিদার ভয়ংকর চক্র