জোর করে স্বীকারোক্তি নেওয়া দুঃখজনক: হাইকোর্ট

ছোট ভাই হত্যায় ১২ বছরের শিশু বড় ভাইয়ের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায়ের ঘটনা যদি সত্য হয়, তাহলে সেটি দুঃখজনক হবে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এক আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (২১ জুন) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। পরে আদালত আগামী ২৯ জুন মামলার পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য দিন নির্ধারণ করেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্লাহ।

শুনানিতে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘একজন বাবা তার এক সন্তানকে হারালেন, ওই সন্তান হত্যার অভিযোগে বড় ছেলে যার বয়স ১২ বছর, তাকে করা হলো আসামি। উল্টো বাড়িঘরও ছাড়তে হয়েছে তাদের বাবা-মাকে।’ ঘটনাটিকে অমানবিক বলেও উল্লেখ করেন এই আইনজীবী।

আইনজীবী আদালতকে আরও বলেন, ‘১২ বছরের একটি শিশুকে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে নেওয়া হলো। বিষয়টি শিশু আদালতের সামনে এলো, অথচ আইন থাকার পরও কোনও পদক্ষেপ নেই। এ কারণে বিষয়টি দেখভালের জন্য আমরা উচ্চ আদালতের কাছে এসেছি। যেন ঘটনার সঠিক তদন্ত হয়ে সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন হয়।’

এ সময় আদালত বলেন, ‘যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে এবং এটি যদি সত্য হয়, তাহলে সেটি আমাদের দেশের জন্য দুঃখজনক। আমরা এখনও জানি না কী ঘটেছে।’ এ সময় রাষ্ট্রপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার কথা বলেন আদালত।

পরে আদালত আগামী ২৯ জুন মামলার পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেন।

এর আগে `পুলিশের ভুলে ১২ বছরের শিশুর ঘাড়ে ছোট ভাই হত্যার দায়’ শিরোনামে একটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদ যুক্ত করে হাইকোর্টে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল থেকে ছোট ভাইকে হত্যার দায় নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে ১২ বছর বয়সী বড় ভাইকে। ওই বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়ার কাটাখালি গ্রামের একটি পাট ক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয় মহিদুল ইসলামের ছেলে সোহাগের মরদেহ। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পুলিশ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় বড় ভাইকে। জোর করে হত্যার স্বীকারোক্তিও নেওয়া হয়। এ মামলায় এখন বাড়ি ছাড়া পুরো পরিবার। এদিকে সন্তান হত্যা এবং আরেক সন্তানের বিরুদ্ধে মিথ্যার মামলার অভিযোগ থেকে রক্ষা করতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোনও সহায়তা না পেয়ে দিশাহারা পরিবারটি।