প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় আল আমিনকে খুন করে ডায়মন্ড

নওগাঁর মান্দায় আল আমিন হত্যার নেপথ্যে এক তরুণের প্রেম ভেঙে যাওয়ার কাহিনি রয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।

সিআইডির দাবি, মো. ডায়মন্ডের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল নওগাঁর মান্দা উপজেলার নিহত কুমারী পপি মণ্ডলের (১৫)। প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কিছু দিন পর বিষপানে আত্মহত্যা করে পপি মণ্ডল। এর আগে যৌন নিপীড়নের শিকার হয় পপি। প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া এবং যৌন নিপীড়নের জন্য আল আমিনকে (২৫) দোষারোপ করে ডায়মন্ড। এরপর ৩ সেপ্টেম্বর আল আমিনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে সে।

সিআইডি হেড কোয়ার্টারের একটি টিম ২১ সেপ্টেম্বর দিনাজপুরের হাকিমপুরের ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডায়মন্ডকে গ্রেফতার করে।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর জানান, গত ৩ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে ফেনী পৌরসভার পশ্চিম বিজয়সিংহ লুদ্দারপাড় গ্রামে একটি টিনশেড কলোনিতে আল আমিন নামে একজন ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। ঘটনার পর ছায়াতদন্ত শুরু করে সিআইডি। আল আমিন, তার বড় ভাই তোফাজ্জল হোসেন (২৭) ও আসামি মো. ডায়মন্ড (২৮) ওই কলোনির একটি কক্ষে ভাড়া থাকতেন। তারা তিন জনই নওগাঁ শহর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় হরেক রকমের জিনিসপত্র ফেরি করে বিক্রি করতেন (ফেরিওয়ালা)।

তিনি জানান, তদন্তে সিআইডি জানতে পারে আসামি ডায়মন্ডের সঙ্গে ওই গ্রামের কুমারী পপি মণ্ডল নামে এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। যদিও সম্পর্কটি বেশি দিন টেকেনি। ভুল বোঝাবুঝির কারণে সম্পর্কটি ভেঙে যায়। এর কিছু দিন পর কুমারী পপি মণ্ডল বিষপানে আত্মহত্যা করেন।

সিআইডি কর্মকর্তা জানান, পপির আত্মহত্যার পর একদিন ডায়মন্ড জানতে পারে আল আমিন ইচ্ছা করে কৌশলে ডায়মন্ডের ফোন ব্যবহার করে পপি মণ্ডলকে বলেছে ডায়মন্ড তাকে ভালোবাসে না। এর পরিপ্রেক্ষিতেই পপি আত্মহত্যা করে। এছাড়াও ডায়মন্ড আরও জানতে পারেন, আল আমিন তার ৩ সহযোগী রুবেল মণ্ডল, হাসিবুর রহমান, আবু বক্করকে নিয়ে কিছু দিন আগে পপির ঘরে ঢুকে তাকে যৌন নিপীড়ন করেন।

মুক্তা ধর জানান, ডায়মন্ড এসব ঘটনা জানতে পেরে আল আমিনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে সে ছুরি নিয়ে আল আমিনের বুকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। এ সময় আল আমিনকে বাঁচাতে বড় ভাই তোফাজ্জল এগিয়ে এলে তাকেও ডায়মন্ড ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় চিৎকার শুনে কলোনির বাসিন্দারা ছুটে এলে ডায়মন্ড পালিয়ে যান।

তিনি আরও জানান, ঘটনাটি বিভিন্ন সংবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সিআইডির এলআইসি শাখা ছায়াতদন্ত শুরু করে। অবশেষে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া এলাকা থেকে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।