করোনায় পিছিয়ে পড়া মামলা নিয়ে যত পরিকল্পনা

ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালগুলোর বিচারিক কার্যক্রম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অনেকদিন স্থগিত ছিল। যার কারণে ট্রাইব্যুনালের মামলাগুলো নিষ্পত্তির সময় বেশ পিছিয়েছে। মামলাগুলো এগিয়ে নিতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন পাবলিক প্রসিকিউটররা। তারা বলছেন, বিচারকরা সক্রিয় হওয়ায় দ্রুত এই পরিস্থিতি বদলাবে।

নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের মামলাগুলো বিচারের জন্য ঢাকায় ৯টি ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। সবগুলোর হিসাব পাওয়া না গেলেও চারটির হিসাব থেকে জানা যায়, এখন ১০ হাজারেরও বেশি মামলা বিচারাধীন।

ট্রাইব্যুাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ বিচারাধীন মামলা রয়েছে ৪ হাজার ৫৭০টি। এই বিপুল সংখ্যক মামলার ৭০ শতাংশ সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে আছে। ট্রাইব্যুনাল-৮-এ বিচারাধীন মামলা ১ হাজার ৯৭৮টি। এখানেও ৭০ শতাংশ মামলা সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে আছে। বাকিগুলো অভিযোগ গঠন, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন, আত্মপক্ষ সমর্থন ও রায়ের জন্য অপেক্ষমান। ট্রাইব্যুনাল-৭ এ বিচারাধীন মামলা ১ হাজার ২৫২। সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে আছে ৬০ শতাংশ।

করোনাকালে জমে যাওয়া মামলাগুলো নিয়ে কোনও পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদা আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা করোনার কারণে অনেক পিছিয়ে ছিলাম। আমাদের আদালতে নতুন বিচারক জুলফিকার হায়াত আসায় ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। তিনি অনেক সক্রিয়। আদালতে যারা কাজ করছেন, তারাও সক্রিয়। এরমধ্যে যে মামলাগুলো বাদীরা বিচারের জন্য এগিয়ে নেওয়ার কথা বলছে, আমরা বিচারকের কাছে দরখাস্ত দিয়ে সেগুলো আগানোর চেষ্টা করছি। যেগুলো সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে আছে, সেগুলোর সাক্ষীদের নিজেরা ফোন করে ডেকে সাক্ষ্য নিচ্ছি।’

তিনি আরও জানান, ‘মামলাগুলো নিয়ে প্রথমদিকে একটু হতাশ ছিলাম।’ এমনটা উল্লেখ করে পাবলিক প্রসিকিউটর রেজাউল করিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আদালতের বিচারক কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই চেষ্টা করছি দ্রুত কাজগুলো এগিয়ে নিতে। অফিসে এসে মামলার তারিখগুলো আপডেট করে দিয়েছি। যেন বাদী ও আইনজীবীদের কোনও সমস্যা না হয়।’

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পাবলিক প্রসিকিউটর আলী আকবর বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘আমাদের ট্রাইব্যুনালে তিন হাজারের মতো মামলা রয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে অনেকগুলো রয়েছে। সাক্ষীদেরকে মোবাইলে যোগাযোগ করেও আনতে পারছি না। কিছু মামলায় যুক্তিতর্ক চলছে।’