বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিরাই টার্গেট ছিনতাই চক্রটির

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বিদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। এ সময়ে প্রবাসীদের টার্গেট করে ছিনতাই ও ডাকাতিতে নেমেছে একটি চক্র। চক্রটি বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করে। এর পর যাত্রীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করে কৌশলে নির্জন স্থানে নিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় এমন একটি ডাকাতির ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রবিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, শনিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল থানার মীরবাগ এলাকা থেকে মো. মাসুদুল হক ওরফে আপেল, মো. আমির হোসেন হাওলাদার ও মো. শামীমকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা গোয়েন্দা বিভাগ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি পাসপোর্ট, ২টি এনআইডি কার্ড, ২টি এটিএম কার্ড, একটি আইপ্যাড, একটি ওয়ার্ক পারমিট কার্ড, একটি বিএমইটি কার্ড, একটি অফিস আইডি কার্ড, একটি স্টিলের চাকু ও নগদ ৫৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

হাফিজ আক্তার বলেন, ‘বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের টার্গেট করে সখ্যতা স্থাপন করে তারা। টার্গেট করা ব্যক্তিকে কৌশলে চেতনানাশক খাওয়ায়। ভিকটিম অচেতন হয়ে পড়লে তারা তার মূল্যবান দ্রব্যাদি নিয়ে দ্রুত চলে যায়। এ চক্রের সদস্যরা চা, কফি, জুস, ডাবের পানি ইত্যাদির সঙ্গে চেতনানাশক মেশায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ৭ সেপ্টেম্বর ভিকটিম মো. লিটন সরকার দীর্ঘ ৫ বছর পর মিশর হতে তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে আসেন। তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল হতে বিমান বন্দর গোল চত্বরে ফুটওভার ব্রিজের নিচে এসে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জন ধারালো চাকুর ভয় দেখিয়ে তার হ্যান্ডব্যাগ ও লাগেজ নিয়ে যায়। হ্যান্ডব্যাগ ও লাগেজে একটি পাসপোর্ট, মিশরের ভিসা, বিমানের টিকিট, আট আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন, ২টি মোবাইল সেট, একটি স্মার্ট কার্ড, প্রয়োজনীয় কাপড়চোপড়সহ নগদ ৪০ হাজার টাকা ছিল। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা ভিকটিমকে ঘটনাস্থল থেকে একটি বাসে তুলে ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু না জানানোর জন্য ভয়-ভীতি ও হুমকি দেয়। এ ঘটনায় গত ১৫ অক্টোবর বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করা হয়। এই মামলার পর তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ। মামলাটি তদন্তকালে তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।’