অর্থপাচার মামলা

আট মাসেও রুলের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টের অসন্তোষ

ক্যাসিনোকাণ্ডে যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অর্থপাচার মামলায় জারি করা রুলের দীর্ঘ আট মাসেও জবাব না পাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

রবিবার (২৪ অক্টোবর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগে গত ১৭ অক্টোবর যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া ও বহিষ্কৃত কমিশনার মোমিনুল হক সাঈদের বিরুদ্ধে  প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ওই প্রতিবেদনে আদালতে দাখিলের পর এ বিষয়ে শুনানি শুরু হয়।

শুনানির শুরুতে হাইকোর্ট এ মামলার বাকী ১৩ বিবাদী জবাব দাখিল না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ১৩ বিবাদী হলেন- অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সচিব, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদফতরের রেজিস্ট্রার।

পরে আদালত আগামী ২১ নভেম্বর রুলের জবাব দাখিলের জন্য দিন ঠিক করে দেন আদালত।

আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, কেন আদালতের আদেশ প্রতিপালন করা হয়নি? শুধু পুলিশ আদেশ প্রতিপালন করেছে, বাকিরা কোথায়? আমরা মামলাটি শুনানির দিন ঠিক করবো। এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আদালত আরও বলেন, এটা ঠিক নয়; আমরা কোর্ট একটা আদেশ দিলাম। আমরা রুল দিয়েছি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি। প্রায় এক বছর হয়ে গেল, রুলের জবাবটাই দাখিল করা হলো না। আর কি বলবো এ নিয়ে কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।

আদালত বলেন, আমরা সবাই ঘুমিয়ে পড়েছি। এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। শুধু আসলাম-গেলাম, তাতো না। দেশ ও জাতির জন্য কিছু করা দরকার, করতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য আপনাকেই করতে হবে। এটা নিয়ে শুধু সরকার করবে তা তো নয়, সরকারকে সহযোগিতা করার দায়িত্ব আমাদের।

এর আগে বিদেশে অর্থপাচারে জড়িতদের খুঁজে বের করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ অক্টোবর পুলিশের আইজি কর্তৃক প্রতিবেদনটি হাইকোর্টে আসে। প্রতিবেদন বলা হয়েছে, পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ এ অর্থ উদ্ধারের কাজ করছে বিএফআইইউ। 

ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট সহ সাতজনের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের প্রমাণ পেয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি। প্রতিবেদনে নাম আসা অন্যরা হলেন, খালিদ মাহমুদ ভুইয়া, এনামুল হক আরমান, রাজীব হোসেন রানা, জামাল ভাটারা, মোমিনুল হক সাঈদ ও শাজাহান বাবলু।