জাপানি দুই শিশুকে নিয়ে আপিল শুনানি ১২ ডিসেম্বর

আলোচিত জাপানি দুই শিশুকে নিয়ে তাদের জাপানি মায়ের করা আপিলের শুনানির জন্য ১২ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেছেন চেম্বার জজ আদালত। ওই দুই শিশু বাংলাদেশি বাবার কাছে থাকবেন উল্লেখ করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন তাদের মা ডা. এরিকো নাকানো।

মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি ও আহসানুল করিম। তাদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

এর আগে গত ২১ নভেম্বর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলাটি প্রক্রিয়াধীন রেখে রায় দেন।

হাইকোর্ট তার রায়ে জাপানি মা ডা. এরিকো নাকানো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক বাবা ইমরান শরীফের কাছেই বড় দুই কন্যাশিশুকে রাখার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে আদালত বলেন, জাপানি মা বছরে তিনবার বাংলাদেশে এসে ১০ দিন করে দুই শিশুর সঙ্গে থাকতে পারবেন। এ ছাড়াও প্রতি মাসের দুই সপ্তাহ পর ভিডিও কলে শিশুরা মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। দেশে থাকাবস্থায় মায়ের খরচ বাবাকেই বহন করতে বলেছেন আদালত। পাশাপাশি এরিকো নাকানোকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে ইমরান শরীফকে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে ৫ ডিসেম্বর আপিল দায়ের করেন ডা. নাকানো।

প্রসঙ্গত, দুই মেয়েকে হাইকোর্টে হাজির করাতে রিট করেছিলেন জাপান থেকে আসা ডা. এরিকো নাকানো। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ আগস্ট শরীফ ইমরানের জিম্মায় থাকা দুই শিশু সন্তানকে ৩১ আগস্ট হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছিলেন আদালত।

পরে দুই শিশুকে নির্যাতনের অভিযোগে তাদের মা পৃথক মামলা দায়ের করলে শিশুদের উদ্ধার করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। এরপর তাদের তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছিল।

শরীফ ইমরানের কাছ থেকে দুই শিশু সন্তানকে সিআইডি কর্তৃক উদ্ধারের পর গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে উন্নত পরিবেশে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৩১ আগস্ট শিশুদের হাইকোর্ট হাজির করতে এবং এ সময়ের মধ্যে আদালত উভয়পক্ষের আইনজীবীদের বিষয়টি সমাধান করতে ভূমিকা রাখার প্রচেষ্টা চালাতে পরামর্শ দিয়েছিলেন।

পরে গত ৩১ আগস্ট বাংলাদেশি বাবা ও জাপানি মায়ের দুই শিশুকে তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিবর্তে গুলশানস্থ বাসায় একসঙ্গে বসবাস করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ঢাকার সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক পদের একজনকে বিষয়টি তদারকির নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ডিএমপি কমিশনারকে তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল।

বিষয়টি সুরাহা করতে কয়েক দফায় দুপক্ষের আইনজীবীদের আলোচনায় বসার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে সুরাহা না হওয়ায় মামলাটি পুনরায় শুনানিতে ওঠে।

এদিকে জাপানে থাকা তৃতীয় কন্যাশিশুকে হাজির করানো ও দেখা করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে পৃথক আরেকটি রিট দায়ের করেন শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ। ওই রিট খারিজ করে দেন আদালত।

 

জাপানি দুই শিশুকে নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মায়ের আপিল