দুই সাংবাদিককে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছে জবি ছাত্রলীগ, থানায় মামলা

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাংবাদিক মোবারক হোসেনজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি বিডিনিউজের স্টাফ রিপোর্টার কাজী মোবারক হোসেনকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা। সঙ্গে থাকা অন্য এক সাংবাদিক এতে বাধা দিলে তাকেও পিটিয়ে আহত করা হয়। এসময় একজন হামলাকারীকে হাতেনাতে ধরলেও তাকে জোর করে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।  এ হামলায় শীর্ষ এই দুই ছাত্রলীগ নেতার ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার বিকেল ৩টার দিকে জবির প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। কোতোয়ালি থানায় এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। ঘটনার পর আহত মোবারককে সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (মিডফোর্ট) ভর্তি  করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় হত্যা চেষ্টার একটি মামলা করা হয়েছে, মামলা নং ১৪। শিগগিরই এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকেলে বিডিনিউজের স্টাফ রিপোর্টার কাজী মোবারক হোসেন এবং বাংলামেইলের স্টাফ রিপোর্টার ইমরান আহমেদ অপু মোটরসাইকেল যোগে জবি ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় প্রধান ফটকের সামনে কয়েকজন সন্ত্রাসী তাদের ওপর হামলা করে। ওই সময় আইন বিভাগের নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী জবি ছাত্রলীগ সভাপতি শরিফুল ইসলামের অনুসারী ইমরান বিশ্বাস সাদা রংয়ের একটি চাপাতি দিয়ে মোবারকের মাথায় কোপ দেয়।

কিন্তু আঘাত মাথায় না লেগে মোবারকের ডান চোখের ওপরে লাগে, এতে তিনি গুরুতর যখম হন। এসময় তার মোটরসাইকেলে থাকা ইমরান আহমেদ অপু এগিয়ে আসলে তাকেও বেধড়ক মারধর করে সন্ত্রাসীরা। পরে ছাত্রলীগ কর্মী ইমরান বিশ্বাসকে হাতেনাতে ধরে ক্যাম্পাসের ভেতরে নিয়ে যান সাংবাদিক ইমরান আহমেদ অপু। ছাত্রলীগ সভাপতি এফএম শরিফুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম সিরাজুল ইসলাম তাকে জোর করে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে কাজী মোবারক হোসেন বলেন, মাস্টার্সের সনদ উত্তোলনের জন্য তিনি ক্যাম্পাসে যান। ফেরার পথে কয়েকজন সন্ত্রাসী তার ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি ডান চোখে গুরুতর যখম হন।

জবি ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ঘাতকদের একজনকে শনাক্ত করা গেছে। শিগগিরই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জবি প্রক্টর ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, ঘাতক ইমরান বিশ্বাসকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ইমরান বিশ্বাসকে ছাড়িয়ে নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে জবি ছাত্রলীগ সভাপতি এফএম শরিফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, যারা হামলা করেছে তারা ছাত্রলীগের কেউ না, ওরা দুষ্কৃতকারী। আমরা ওদেরকে ছাড়িয়ে নেইনি। নিজেরাই পালিয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় জবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম সিরাজুল ইসলামের মোবাইলে ফোন করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

/আরএআর /