দ্য হিমালয়ান টাইমস

ভূমিকম্পের এক বছর: দুর্যোগ প্রস্তুতি এখনও অনেক দূর

দ্য হিমালয়ান টাইমসগত বছর ভূমিকম্পের এক বছর পূর্ণ হওয়াতে নেপালজুড়ে শোক পালন করা হচ্ছে। এক বছর পার হলেও নেপালের জনগণের এখনও উদ্বেগের বিষয় দুর্যোগ প্রস্তুতিতে ঘাটতির বিষয়। রবিবার দেশটির দ্য হিমালয়ান টাইমসের প্রধান শিরোনাম প্রতিবেদনে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

গত বছর ২৫ এপ্রিল ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে প্রায় নয় হাজার লোক প্রাণ হারান। রিখটার স্কেলে ৭.৮ মাত্রার ভুমিকম্পটি পুরো দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে অনুভূত হয়। ভূমিকম্পে প্রায় ২২ হাজার মানুষ আহত হন এবং প্রায় দশ লাখ বাড়ি ও ভবন সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারি হিসাবে, এতে ক্ষয়ক্ষতির মূল্য ছিল প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের। ভয়াবহ ওই দুর্যোগের এক বছর পরও এখনও কয়েক লাখ লোক গৃহহীন অবস্থায় বাস করছেন। দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ অনেক নাগরিকের।

আরও পড়ুন: ইকুয়েডরের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৪৬, আটদিনের জাতীয় শোক

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভয়াবহ ভূমিকম্পের এক বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত তল্লাশী ও উদ্ধার অভিযানের সামর্থ্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি ঘটেনি। বিশৃঙ্খলভাবে ভবন ও অবকাঠামো নির্মাণও বন্ধ হয়নি। ভবন নির্মাণ আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন না করা ও সরকারের দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণেই এটা ঘটছে।

সরকারের অদক্ষতা এবং প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো মতানৈক্যের কারণে ভেঙে পড়া ও ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন: বিয়ে নয়, জীবনসঙ্গীর মৃত্যু স্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক!

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান রামেশ্বর দাঙ্গাল জানান, সরকার ত্রাণ সংরক্ষণের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। ক্রেন, ড্রেজারের মতো সামগ্রী ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এখনও প্রশিক্ষিত উদ্ধার টিম গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, ধ্বংসস্তুপে তল্লাশী ও উদ্ধার অভিযান চালানোর মতো লোকবল ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমাদের এখনও নেই।

ভূ-তাত্ত্বিক অধ্যাপক বিশাল নাথ জানান, ২৫ এপ্রিলের ভূমিকম্পে হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারত। শনিবার, দিনের বেলা এবং শীত ও বর্ষা মওসুম না হওয়ার ফলে ক্ষতি অনেক কম হয়েছে। সিসমিক জোনে নেপাল থাকার কারণে যে কোনও সময় বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটতে পারে। তিনি বলেন, গত বছরের ভূমিকম্প থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের দুর্যোগ মোকাবেলায় সামর্থ্য বৃদ্ধি করতে হবে।

আরও পড়ুন: একজন নারী ফ্যাশন ডিজাইনারের পোশাকে ফিলিস্তিনি ঐতিহ্যের গল্প

নেপালের জাতীয় সিসমোলজিক্যাল কেন্দ্রের তথ্য মতে, গত বছরের ভূমিকম্পের পর এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার আফটার শক রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৪৮টি আফটার শক ছিলো ৪ মাত্রার উপরে। সংস্থাটির প্রধান লোক বিজয় অধিকারী জানান, এমন পরিস্থিতির মধ্যেও তাদের লোকবল কমানো হয়েছে। এক বছর আগে তাদের লোকবল ছিল ১৪ জন। আর এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬ জনে।

/এএ/