চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) প্রাঙ্গণে আফজাল গুরুকে নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন এবং তাতে রাষ্ট্রদ্রোহী স্লোগানের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করেছে। এই বিষয়টিকেই প্রভাবশালী ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ তাদের মঙ্গলবারের (২৬ এপ্রিল) প্রধান শিরোনাম করেছে।
আরও পড়ুন: কথিত রাষ্ট্রদ্রোহীদের সাজা দিলো নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়
সোমবার (২৫ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জেএনইউ ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট কানহাইয়া কুমারকে ১০ হাজার রুপি জরিমানা করা হয়েছে। পিএইচডি-র শিক্ষার্থী অনির্বাণ ভট্টাচার্য এবং উমর খালিদকে ওই অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা উল্লেখ করা হয়। উমরকে এক সেমিস্টারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কারের কথা বলা হয়েছে। কাশ্মিরের শিক্ষার্থী মুজিব গাট্টুকে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে সবচেয়ে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয় অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে। তাকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত বহিষ্কার করা হয়। এরপর চলতি বছরের ২৫ জুলাই থেকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য তাকে ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের ২০ হাজার রুপি করে জরিমানাও করা হয়েছে। আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীকেও ১০ থেকে ২০ হাজার রুপি জরিমানা করা হয়েছে। জেএনইউ-তে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এই শাস্তি ঘোষণা করা হলো।
আরও পড়ুন: বিমানে কানহাইয়ার গলা চেপে ধরলেন ‘মোদির সমর্থক’
চলতি বছরের ১৪ মার্চ জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) এক উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি ক্যাম্পাসে ৯ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য কানহাইয়া কুমার, উমর খালিদ, অনির্বাণ ভট্টাচার্যসহ ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করে। কমিটির অভিযোগ ওই অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে কথিত ভারত-বিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়। তদন্ত কমিটির সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই ওই শিক্ষার্থীদের জরিমানা ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
তবে সোমবার এক বৈঠকের পর জেএনইউ ছাত্র সংসদ ওই রায়কে মানতে অস্বীকার করেছে। কানহাইয়া তদন্ত কমিটির দিকেই প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘ওই তদন্ত কমিটি একপাক্ষিক তদন্ত করেছে। যা অগ্রহণযোগ্য।’
আরও পড়ুন: পুরুষ মডেলের আদলে মোনালিসাকে এঁকেছিলেন ভিঞ্চি!
উল্লেখ্য, ৯ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের স্বাধীনতাপন্থী হিসেবে পরিচিত আফজাল গুরুর ফাঁসির বিরোধিতা করে অনুষ্ঠান আয়োজন ও তাতে দেশবিরোধী বক্তব্য ও স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এরপর দেশদ্রোহিতার অভিযোগে ১২ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সভাপতি বামপন্থী ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমারকে। ২৩ ফেব্রুয়ারি উমর খালিদ ও অনির্বাণ ভট্টাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে এসে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। পরবর্তীতে দিল্লি হাইকোর্ট তাদের তিনজনকেই অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন।
/এসএ/