বইপ্রেমীদের জন্য ‘দীপনপুর’

দীপনপুর-১দুষ্কৃতিকারীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়া  প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের ৪৫তম জন্মদিনে যাত্রা শুরু করলো অত্যাধুনিক বুকশপ ক্যাফে 'দীপনপুর'। রাজধানির এলিফ্যান্ট রোডে প্রায় ২৮০০ বর্গফুটের এই বুকশপ ক্যাফে প্রতিষ্ঠা করেছেন প্রয়াত দীপনের স্ত্রী রাজিয়া রহমান জলি। কথাসাহিত্যিক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, ফয়সল আরেফিন দীপনের পিতা শিক্ষাবিদ আবুল কাশেম ফজলুল হক, অর্থনীতিবিদ আবুল বারাকাত ফিতা কেটে এই বুকশপের উদ্বোধন করেন।

দীপনপুর-২উদ্বোধনের পরপর মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, 'আমার দুঃখ একটাই। দীপনের পাশে বেশি সময় কাটাতে পারিনি। কখনও কল্পনা করিনি এভাবে তাকে চলে যেতে হবে। সে খুবই বইপ্রেমী একজন মানুষ ছিল। তার পরিবারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। কারণ এখনকার ছেলেমেয়েরা বই পড়েনা, তারা শুধু ফেসবুকিং করে। আমি চাই নতুন প্রজন্ম বই পড়ুক। তাদের বই পড়াতে শেখাতে পারলে আমরা মনে করবো যে এগিয়ে যাচ্ছি। এরকম আরও প্ল্যাটফর্ম দরকার আছে।"
দীপনের স্ত্রী রাজিয়া রহমান জলি বলেন, 'ঢাকা শহরে আমরা বাচ্চাদের জায়গা দিতে পারিনা। স্কুলগুলো একটি একটি কারাগারের মতো। তাই তাদের জন্য জায়গা করতে এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। বাতিঘরের কর্ণধার দীপংকর দাস আমার সাহায্যে এগিয়ে না আসলে এই জায়গা করা সম্ভব ছিলনা। তার পরামর্শেই এই জায়গা করা'।

দীপনপুর-৪দীপনপুরে প্রায় পুরোটা জুড়ে রয়েছে বই। বই কেনার পাশাপাশি এক কাপ চা বা কফির সঙ্গেও বই পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া বই অনলাইনে কেনার ব্যবস্থাও রয়েছে। প্রয়োজনীয় কোনও বই না পাওয়া গেলে সেই বই বাসায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে।

শুরুতে দেশি বইয়ের সমাহার থাকলেও ভবিষ্যতে বিদেশি বইও সংগ্রহে রাখার কথা রয়েছে। বইয়ের পাশাপাশি স্টেশনারি এবং শিল্পীর আঁকা ক্যানভাসও পাওয়া যাচ্ছে।
দীপনপুরে ছোটদের বই নিয়ে করা হয়েছে শিশুতোষ কর্নার 'দীপান্তর'। বিভিন্ন ধরনের স্ন্যাকস, চা, কফি, ফ্রেশ জুস নিয়ে যে অংশ রয়েছে তার নাম 'দীপাঞ্জলি'। আর ছোট্ট এক টুকরা মঞ্চের নাম দেওয়া হয়েছে 'দীপনতলা'। এছাড়া ক্যাফেটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং ওয়াইফাই সুবিধাও রয়েছে।দীপনপুর-৩অনুষ্ঠানে প্রকাশক সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, পুস্তক বিক্রেতা সমিতির সভাপতি খান।মাহাবুব সহ অন্যান্য প্রকাশক, লেখক, সাহিত্যিক, শিক্ষক সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। 
উল্লেখ্য, জাগৃতি প্রকাশনির প্রতিষ্ঠাতা ফয়সল আরেফিন দীপন জন্মগ্রহন করেন ১৯৭২ সালের ১২ জুলাই। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে প্রকাশনা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার প্রতিষ্ঠান প্রকাশ করেছে ৩ হাজারেরও অধিক বই। ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর নিজ কার্যালয়ে দুষ্কৃতিকারীদের হাতে খুন হন।

/এফএএন/