আতঙ্কের নাম ‘ব্লু হোয়েল গেম’

ভাবতে পারেন ‘আত্মহত্যা’ করাটাও একটা খেলা হতে পারে? হ্যাঁ, এমন একটি খেলা চলছে অনলাইন জুড়ে! এই খেলা এতটাই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে যে, এর শিকার হয়ে রাশিয়ায় ১৩০ জন, ভারতে ৩ জনসহ আরও অনেক দেশেই টিনএজাররা আত্মহত্যা করেছে। আপনি যদি অভিভাবক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার টিনএইজ ছেলে-মেয়ে অনলাইনে কী করছে এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন।

টিনএইজ ছেলে-মেয়ে অনলাইনে কি করছে এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন
এরমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার এই ওয়েবসাইটের একসেস বন্ধ করে দিচ্ছে। লন্ডনের স্কুল কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে তাদের অভিভাবকদের সতর্ক করেছে। এদিকে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যেহেতু হ্যাকাররা এই সুইসাইড চ্যালেঞ্জ পরিচালনা করে তাই এটা ট্র্যাক এবং হান্টিং করা খুব কঠিন কাজ।
কী খেলা এটি
‘ব্লু হোয়েল গেম’ বা আত্নহত্যার খেলা একটি অনলাইন গেম। ইন্সটল করা পর একে একে বিভিন্ন নির্দেশ দেওয়া হয় এর ব্যবহারকারীকে। এটিই হচ্ছে মূল খেলা। প্রায় পঞ্চাশটি নির্দেশের সর্বশেষটি হচ্ছে আত্নহত্যা করতে বলা! অন্যান্য নির্দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোরে জেগে উঠে হরর ভিডিও দেখা যা গেমের অংশ হিসেবে মেইলে পাঠানো হয়েছে, রেজার দিয়ে হাত কেটে সেটার ছবি পাঠানো, হাত কেটে ব্লু হোয়েল বা তিমির ছবি এঁকে সেটার ছবি তুলে পাঠানো, ছাদের একেবারে কিনারে গিয়ে ছবি তুলে পাঠানোসহ আরও ভয়ংকর কিছু। গেমের অংশ হিসেবে ব্যবহারকারীকে একসময় পাঠানো হয় তার মৃত্যুর তারিখ। সেই তারিখ অনুযায়ী সর্বশেষ নির্দেশ আসে উঁচু বিল্ডিং থেকে লাফ দিয়ে আত্নহননের!
খেলাটি একবার শুরু করলে এমনভাবে মনস্তত্বকে প্রভাবিত করে যে চাইলেও অনেকে ফিরে আসতে পারে না। এছাড়া খেলোয়াড়রা তাদের ব্যক্তিগত ফোন নম্বর এবং ইমেল ঠিকানা ভাগ করে নেওয়ার ফলে ডেভেলপাররা বিভিন্ন ধরনের মানসিক কৌশল ব্যবহার করে তাদের আবার খেলায় অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করায়!
অভিভাবকদের করণীয়
যদি আপনার টিনএইজ সন্তান ইন্টারনেট ব্যবহার করে তবে তাদের সতর্ক করুন এই গেম সম্পর্কে।  এটি খেলার জন্য যেন কোন লিংক গ্রহণ না করে সেটি তাদের বলুন এবং গেমের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানান। সন্তান অনলাইনে কী করছে সেই সম্পর্কে খোঁজখবর রাখুন। সন্তানের ব্যবহারে কোনও অস্বাভাবিকতা চোখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক হয়ে যান। তাদের সাথে প্রচুর সময় কাটান। প্রয়োজনে ভালো কোনও মানসিক ডাক্তার দেখান।
বি:দ্র: সঙ্গত কারণে এই অনলাইন খেলাটির আসল নাম গোপন রাখা হয়েছে।

লেখক: সাংবাদিক, ব্রিকলেইন, লন্ডন