একই ছাদের নিচে সকল নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস একসাথে পাওয়া যাবে তা কখনও কেউ কল্পনা করেনি। মাছ, মাংস থেকে শুরু করে চাল, ডাল, তেল, সবজি, ফল কিংবা ফ্রোজেন আইটেম কী নেই এখানে। ক্রেতাদের সুবিধার্থে কাঁচা মাছ বাছাই করে পরিষ্কার করে সাজিয়ে রাখা হয় সামনে। আবার কেউ যদি জীবন্ত মাছ নিতে চায় তার জন্যও রয়েছে সেই ব্যবস্থা। মূলত হাওরের মাছ দিয়ে সাজানো হয় পসরা। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বর্তমানে তাজা সামুদ্রিক মাছও বিক্রি হচ্ছে সহজলভ্যে।
অভিজ্ঞ কর্মচারি দিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে ক্রেতাদের। ক্রেতাদের যেকোন অনুসন্ধানে তাৎক্ষনিক সেবা দেওয়ায় বদ্ধপরিকর প্রত্যেক কর্মী। রাজধানীর আসাদ এভিনিউ’র আউটলেটের ম্যানেজার জাহিদুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্রাহক সেবা নিয়ে কোনও প্রকার আপসের সুযোগ নেই এখানে। সবার প্রথমে গ্রাহকের চাহিদা এবং সেবা।
ফিশ অ্যান্ড মিট সেকশনে ফজলে রাব্বি কাজ করছেন দীর্ঘ দিন ধরে। তার মতে এখানে কাজের পরিবেশ খুব ভালো এবং শেখার সুযোগ আছে প্রচুর। অন্যদিকে ফ্রুটস সেকশনে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে কাজ করছেন সাহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি সুন্দর পরিবেশে কাজ করছি, শেখাও হচ্ছে আবার নিজেকে চালাতেও পারছি।
মীনা বাজারের নিজস্ব উৎপাদিত অর্গানিক পণ্য রয়েছে সকল আউটলেটে। ক্রেতাদের কাছে এসকল পণ্যেরও রয়েছে বেশ কদর। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করছেন শিমুল চাকমা। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিতে এসেছিলেন মীনা বাজারে। এত দোকান থাকতে মীনা বাজারে কেন আসলেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এক ছাদের নিচে সব পাওয়া যায় এটা একটা বড় ব্যাপার, আর গ্রাহক সেবায় আমি সন্তুষ্ট বলেই বারবার এখানে আসি”।
নারীবান্ধব পরিবেশে কাজ করে উপকৃত হচ্ছেন অনেক নারী কর্মচারী। তারা জানান লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজেকে স্বাবলম্বী করার সুযোগ করে দিয়েছে মীনা বাজার। গ্রাহক সেবার পাশাপাশি কঠোর নজরদারি দেওয়া হয় পণ্যের মান নিয়ে। পণ্য পরিবেশনের আগেই তার গুণগতমান এবং প্যাকেটিং পুনরায় নিরীক্ষা করে সাজানো হয় ডিসপ্লেতে। এ বিষয়ে সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে বলে জানান ধানমন্ডি ২৭ নম্বর আউটলেটের ম্যানেজার রুপম রায়।
বাংলাদেশে ১৫ বছর ধরে সেবা দিয়ে আসছে মীনা বাজার। দেশি ও নিজস্ব উৎপাদিত পণ্যের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি আউটলেটে বিদেশি পণ্যও পাওয়া যায়। তাই শুধু দেশি ক্রেতাই নয় পাশাপাশি বাংলাদেশে বসবাসরত বিদেশি ক্রেতাও এখান থেকে কেনাকাটায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। প্রতিদিনই কয়েক লাখ গ্রাহককে সেবা দিয়ে থাকে মীনা বাজার। তাই প্রায় সবসময় প্রতিটি আউটলেটেই লেগে থাকে ভিড়। ক্রেতাদের ভিড়ে অনেকসময় হিমসিম খেতে হয় কর্মচারীদের।
গ্রাহক সেবার পাশাপাশি মীনা বাজার তৈরি করেছে নতুন কর্মসংস্থান। বর্তমানে প্রায় এক হাজার কর্মচারি নিজেদের স্বাবলম্বী করার সুযোগ পাচ্ছেন বলে জানান মিনা বাজারের সি ই ও শাহিন খান। তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে সারাদেশে ১৮টি আউটলেট আছে, আগামী তিন বছরে আরও ১৫টি আউটলেট তৈরি করতে চাই আমরা। ১৫ বছরে যারা আমাদের সঙ্গে যারা ছিলেন তাদের সম্মাননা দেওয়ার পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন পণ্যে ছাড়সহ নানা ধরনের অফার দিয়েছি”।