কী হচ্ছে নতুন বছরের প্রতিজ্ঞা?

কালকে থেকে যেভাবেই হোক ব্যায়ামটা শুরু করতে হবে। পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলোকেও দিতে হবে আড়ি। বেশ কয়েক মাস ধরে সরকারী কর্মজীবী শাহরিয়ার ঠিক এমনটাই ভাবছে। একদিন, দুইদিন করতে করতে বছরই বিদায় নিয়ে নিলো। তবুও যেন নিজের সঙ্গে করা প্রতিজ্ঞাটি রাখতে পারছে না সে। অবশেষে বছরের শেষে সে কঠিন সংকল্প নিলো, নতুন বছরে যেভাবেই হোক বদলে ফেলতে হবে কিছু বদঅভ্যাস। জীবনযাপন পদ্ধতিতে নিয়ে আসতে হবে পরিবর্তন।
এদিকে কাজী তাসনুভা তারান্নুম পেশায় ব্যবসায়ী। পেশাগত ব্যস্ততার ফাঁকে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিতে পছন্দ করে সে। আর আড্ডা মানেই সেলফি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেটি প্রকাশ করা। একদিন হঠাৎ বন্ধুরা অবাক  হয়ে দেখলো তাসনুভা পুরো আড্ডায় একবারও ফোন হাতে নেয়নি! কারণ সে ঠিক করেছে নতুন বছরে ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে।

paper-3042645_1920-1024x678
প্রতিটি দিনের সূর্যই নতুনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোকিত করে পৃথিবী। তবে বছরের প্রথম সূর্য যেন একটু বেশিই আবেগ নিয়ে আসে। পুরনোকে পেছনে ফেলে নতুনকে গ্রহণ করার আহ্বান যেমন থাকে বছরের শুরুতে, তেমনি থাকে নিজেকে খানিকটা বদলে ফেলে নতুন করে শুরু করার ইচ্ছা। অনেকদিন ধরেই নিজের যেসব অভ্যাস বদলে ফেলা উচিত বলে মনে করছেন আপনি, বছরের শুরুতেই দৃঢ় শপথ করে ফেলুন। পরিবর্তন আনুন নিজের মধ্যে। শুরু করুন একটি সুন্দর বছর। তো, নতুন বছরে কী হচ্ছে আপনার প্রতিজ্ঞা?
সুস্থ থাকার জন্য...    
স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল- একথা আমরা সবাই জানি। সুস্থ থাকার জন্য তাই বদলে ফেলতে পারেন কিছু অভ্যাস। যেমন তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা, রাতে সঠিক সময়ে ঘুমানো। ডায়েট করতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক ডায়েট চার্ট মেনে চলুন। ফাস্টফুড, কোল্ড ড্রিঙ্কে আসক্তি থাকলে কমিয়ে ফেলুন সেগুলোও। সুস্থ থাকতে চাইলে সিগারেটের আসক্তি কমানোও জরুরি। মোট কথা, প্রতিদিন করবো করবো করেও যেগুলো করা হচ্ছে না সেগুলো শুরু করুন এখন থেকেই।

সঠিক ডায়েট প্ল্যান মেনে চলুন
কর্মক্ষেত্রে মনঃসংযোগ করুন
কর্মক্ষেত্রে ভালো পারফর্মেন্স আপনার জীবনে পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে অনেকটাই। নতুন আইডিয়া নিয়ে কাজ করুন। ভালো কিছু কাজ আপনার মানসিক অবসাদ কাটাতে সাহায্য করবে।
অহেতুক চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন
ছোটখাট কারণে টেনশন করার অভ্যাস থাকলে সেগুলো ঝেড়ে ফেলুন। মনে রাখবেন দুশ্চিন্তা অনেক রোগের কারণ। নিজেকে খুশি রাখার জন্য ছোট ছোট কাজের প্রতি নজর দিতে পারেন। এতে বাড়তি দুশ্চিন্তা কাছে ঘেঁষবে না।
সময় দিন পরিবারকে
ব্যস্ততার কারণে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একটু একটু করে দূরত্ব বাড়ছে। এটি অনেকদিন ধরে লক্ষ করলেও সমাধানের পথ নিয়ে ভাবেননি। বছরের শুরুতেই পারিবারিক জীবন নিয়ে একটু নতুন করে ভাবুন। কাজের ব্যস্ততা থাকবেই। সপ্তাহে অন্তত একদিন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে যান। বিশেষ কোনও দিন উপলক্ষে একসঙ্গে খাবার খান। ছোট ছোট এসব মুহূর্ত আপনার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
নতুন মানুষকে জানুন
নেটওয়ার্কিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন। এতে যেমন আপনার অভিজ্ঞতার থলি সমৃদ্ধ হবে, তেমনি সহজ হবে অনেক সমস্যার সমাধান করা।

মোবাইল ব্যবহার কমিয়ে ফেলুন
অহেতুক ফোন ব্যবহার নয়
সারাক্ষণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় থাকার কারণে হয়তো বাস্তব জীবনের অনেক সুন্দর মুহূর্ত নষ্ট করে ফেলছেন নিজের অজান্তেই। তাই প্রয়োজনের বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না, বছরের শুরুতেই এই সংকল্প নিন।
প্রতিদিন কিছুক্ষণ বই পড়ুন
বই পড়ার অভ্যাস করুন। প্রতিদিন অন্তত কিছু সময় কাটান প্রিয় লেখকের বই পড়ে।

নিজেকে সময় দিন
ভালো থাকার জন্য নিজের সঙ্গে সময় কাটানো খুব জরুরি। প্রতিদিন কিছু সময় রাখুন একান্তই নিজের জন্য।
সঞ্চয় শুরু করুন
টাকা কেবল উপার্জন ও ব্যয় করলেই হবে না, ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সঞ্চয় খুবই জরুরি। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে তাই প্রতি মাসেই কিছু টাকা জমান।   
আত্নবিশ্বাস আনুন নিজের মধ্যে
নেতিবাচক চিন্তা পরিহার করুন ও নিজের মধ্যে আত্নবিশ্বাস নিয়ে আসুন। সুখী থাকতে এর বিকল্প নেই। মনে রাখবেন, জীবনে সমস্যা আসবেই। এতে ভেঙে পড়লে চলবে না। বরং সমস্যা সঠিকভাবে মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হবে সামনে।  

নতুন নতুন স্থান ভ্রমণ করুন
ভ্রমণ করুন নতুন স্থান
নতুন বছরে নতুন কোন দেশ বা শহর ভ্রমণ করবেন, ঠিক করে ফেলুন সেটি। সেই লক্ষ্যে টাকা জমান ও প্রস্তুতি নিন।