উমগট নদী: স্বচ্ছ পানির জীবন্ত অ্যাকুয়ারিয়াম!

হঠাৎ দেখলে মনে হবে পানিতে নয়, যেন শূন্যে ভেসে ভেসে চলছে নৌকা! একটু ভালো করে তাকালে বুঝতে পারবেন নৌকার নিচের অসম্ভব স্বচ্ছ পানির সূক্ষ্ম আস্তরণ। অদ্ভুত নীল পানির এই নদীর নাম উমগট। পাহাড়ি নদীটির অবস্থান ভারতের মেঘালয়ে।

উমগট নদীর স্বচ্ছ পানি, : ছবি- রকি

উমগট নদীতে ঘুরতে পারেন নৌকায়
একটা নদীর পানি ঠিক কতটা স্বচ্ছ হতে পারে? এর উত্তর পেতে চাইলে আপনাকে উমগট নদীতে যেতেই হবে। কল্পনাকেও হার মানানো স্বচ্ছ পানি এখানে। ১০ ফুট থেকে শুরু করে ২০০ ফুট পর্যন্ত পানি একেবারে স্বচ্ছ। এতই স্বচ্ছ যে পানির নিচের পাথর, মাছ, সাপ, বালি- সবকিছুই পুঙ্খানুপুঙ্খ দেখা যায়। সূর্যের ঝলমলে আলো নদীর নিচ পর্যন্ত চলে যায় এক নিমিষেই।

ডুব দিয়ে দেখতে পারেন মাছের ঘর সংসার

DSC_0873

ভর দুপুরে এই নদী পরিণত হয় ঝলমলে এক প্রাকৃতিক অ্যাকুয়ারিয়ামে। এখানে মাছের দল দৌড়ে চলে চোখের সামনে, নদীর নিচের টুকরো পাথরে সূর্যের কিরণ ঠিকরে পড়ে এক অদ্ভুত ভালোলাগায়। কাঁচের মতো স্বচ্ছ এই নদীতে ডুব দিয়ে আপনি দেখতে পারবেন পানির নিচের জগত। দেখতে পারবেন কীভাবে সংসার পেতেছে ছোটবড় মাছ। আর নৌকায় উঠে পড়লে দেখা মিলবে জীবন্ত অ্যাকুয়ারিয়ামের! রূপকথার মতো এই নদীটির পাড়ে তাঁবু টাঙিয়ে থাকতেও পারেন চাইলে।

তাঁবু টাঙিয়ে থাকতে পারেন নদীর পাড়ে
উমগট নদীই আমাদের দেশে ঢুকেছে গোয়াইন নদী হিসেবে, যেটাকে আমরা অনেকেই বলি জাফলং নদী। বাংলাদেশের একদমই কাছে এর অবস্থান। জাফলং থেকে বড় জোর ৮ কিলোমিটার গেলেই পেয়ে যাবেন স্বচ্ছ পানির এই নদীটি। উমগটের সৌন্দর্য দেখতে চাইলে এখনই আদর্শ সময়। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নদীর পানি থাকে স্বচ্ছ।

25551829_1950711244944869_9058972366914649494_n
যেভাবে যাবেন
বাসে করে সিলেটে চলে যান। এরপর তামাবিল বর্ডার পার হয়ে ট্যাক্সি নিয়ে চলে যান ডাউকির উমগট নদী। ট্যাক্সি ভাড়া পড়বে ৩৫০ রুপি। সময় লাগবে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট। ট্যাক্সি সোজা সোনেংপেডাং গ্রামে নিয়ে যাবে, সেখানে নেমে পায়ে হেঁটে উমগট নদীর উপরে ঝুলন্ত ব্রিজ পার হয়ে নদীর পাড়ে যাওয়া যায়। নদীর পাড়ে তাঁবু টাঙিয়ে থাকার ব্যবস্থা আছে। ৪ জনের তাঁবুর খরচ পড়বে ১৫০০ রুপি, ২ জনের তাঁবুর ভাড়া ১০০০ রুপি। উমগট নদীতে রয়েছে বোটিং করার ব্যবস্থা। ঘণ্টায় ৫০০ রুপি মতো পড়বে খরচ।

26219950_10155000004396817_3703172054673529145_n

জেনে নিন 

  • নৌকায় ঘুরতে চাইলে লাইফ জ্যাকেট পরবেন অবশ্যই।
  • ডাউকির একদম কাছাকাছি রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় জায়গা। এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম ও গাছের তৈরি প্রাকৃতিক সেতু দেখে আসতে পারেন।
  • নদীতে বা আশেপাশে অপচনশীল কিছু ফেলে আসবেন না। 

25660348_10154995719821817_9029687557479641731_n

ছবি: ওয়াইল্ড অ্যাডভেঞ্চার গ্রুপ