রংপুরে গোলাপের কলিতে ক্যাপ পরিয়ে সাফল্য

প্রতি বছর বসন্ত ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্রচুর ফুলের চাহিদা থাকে। বিশেষ করে ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনকে লাল গোলাপ উপহার দেওয়ার রীতি বেশ জোরেশোরেই পালন করা হয়। ফলে গোলাপ ফুলের চাহিদা বৃদ্ধি পায় ব্যাপকভাবে। ফুল চাষিরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোলাপ ফুল বিক্রি করে বাড়তি টাকা রোজগার করেন। কিন্তু গোলাপ ফুল গাছে কলি আসার পরপরই গাছ থেকে ফুল না কেটে নিলে ফুলের পাপড়ি ঝরে পড়ে। ফুল চাষিরা বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসের আগে কোনোভাবেই ফুল গাছ থেকে কেটে রাখতে চান না। এবার ফুল চাষিরা নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন ফুল সুরক্ষার জন্য। যাতে আগাম ফুল ঝরে না পড়ে সেজন্য ফুলের কলি বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাপ পড়িয়ে দিচ্ছেন ফুল চাষিরা। অন্তত বসন্ত উৎসব আর ভালোবাসা দিবসের আগ পর্যন্ত এভাবেই ফুল রক্ষা করছেন তারা।

FLOWER PHOTO 2

সরেজমিন রংপুর নগরীর পান্ডার দিঘি এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বিশাল গোলাপ ফুলের বাগান। ফুল চাষি আব্দুল কাদের  গোলাপের কলিতে  ক্যাপ পরিয়ে দিচ্ছেন যেন ফুল না ফোটে। তিনি জানান,  ১২ ফেব্রয়ারি  দুপুরের পর থেকে ফুল কাটা হবে। কিছু ফুল কাটা হবে বসন্তের দিন সকালে। আগাম ফুল কেটে রাখলে শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে এর চাহিদা যেমন থাকে না, তেমনি দামও পাওয়া যায় না। এজন্য যেন কলি না ফোটে এবং পাতা ঝরে না পড়ে সেজন্য তারা কলিতে ক্যাপ পরিয়ে দেন।
তিনি বলেন, ‘আগে আমরা রাবার দিয়ে কলি বেঁধে রাখতাম। এতে করে ফুলের পাতা নষ্ট হয়ে যেত। এ কারণে বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে নিজেই ক্যাপ তৈরি করেছেন। বিক্রি করার আগ পর্যন্ত কলিতে ক্যাপ পরানো থাকে। এতে ফুলের পাতা যেমন ঝরে পড়ে না, তেমনি ফুল নষ্টও হয় না। গত দু বছর ধরে তিনি এভাবে ফুলের কলিতে ক্যাপ পরিয়ে রাখছেন বলে জানান।

কলিতে ক্যাপ পরাচ্ছেন ফুল চাষি আব্দুল কাদের
কাদের জানান, প্রথমে ২০ শতক জমিতে ফুল চাষ শুরু করেন। এখন তার জমির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১শ শতকে। নগরীর চিড়িয়াখানা সড়কের পাশে তার নিজস্ব দোকান রয়েছে। বসন্ত ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্রতিটি গোলাপ ২০-২৫ টাকা হিসেবে বিক্রি হয়। এবার যে পরিমাণ গোলাপ ফুল হয়েছে তাতে করে শুধু গোলাপ ফুল বিক্রি করে ২ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করলেন। তিনি জানান রংপুর নগরীতে অনেক ফুলের দোকান তার জমি থেকেই গোলাপ ফুল কিনে নিয়ে যায় পাইকারি দরে। হতদরিদ্র কাদের মিয়া ফুল বিক্রি করে ফিরিয়েছেন ভাগ্য। কলিতে ক্যাপ লাগিয়ে ফুল রক্ষা করার পদ্ধতি এখন অনেকে ব্যবহার করছেন বলেও জানালেন তিনি।