গরমের ঈদে আরামের ডাই

‘ডাই’ শব্দটির অর্থ রং। নিত্য নতুন প্রাকৃতিক রঙে কাপড়ে যে নকশা বা ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা হয় সেটা টাই, বাটিক কিংবা ভেজিটেবল ডাই। অন্যান্য কাপড়ের সঙ্গে এর পার্থক্যই হলো এতে যে রং ব্যবহার করা হয়; সেটা প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপাদান যেমন- তুঁতে, মেহেদি পাতা, গাঁদা, শিউলি ফুল কিংবা খয়েরের সংমিশ্রণে তৈরি। তবে আজকাল কৃত্রিম উপায়েও রঙের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। ডাই দেওয়া কাপড় বেশ আরামদায়কও বটে।

প্রিয়তমেষুর ভেজিটেবল ডাই শাড়ি
আরাম এবং একইসঙ্গে ফ্যাশনের কথা মাথায় রেখেই এবারের ঈদে এই কাপড়ের পোশাক চোখে পড়ছে বেশ। একটা সময় ছিল যখন ডাই বলতে শুধু বাটিকের কাপড়কেই বোঝানো হত। এখন সেই চিত্র পাল্টে গেছে। মোম বা বাটিকের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে সবজি এমনকি বিভিন্ন কৃত্রিম রংও।
গরমে আরাম
অনলাইন পেজ সুইট পটেটোর প্রতিষ্ঠাতা রোকসানা রশীদ জানান, এবারে ঈদ যেহেতু গরমের সময়ে পড়ে গেছে, তাই আরামের কথা মাথায় রেখেই ডাইয়ের পোশাকের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। ডাই দেওয়া পোশাকের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এটি করা হয় নরম কিংবা পাতলা কোনও কাপড়ে। যা এই আবহাওয়ার সঙ্গে মানানসই।
সুইট পটেটো এবার টাঙ্গাইল সুতি শাড়ির মধ্যেও ফুটিয়ে তুলেছে বিভিন্ন মোটিফের নকশা। আবার কিছু শাড়িতে ভেজিটেবল ডাইয়ের আদলে কাজ করা হয়েছে। ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে হলুদ, খয়েরি, বেগুনি, সবুজের মতো রংগুলোকে। এছাড়াও রয়েছে খানিকটা মেটে রং। এই অফ ট্র্যাকের রংটাও পছন্দ করছেন ক্রেতারা।
প্রকৃতির কাছাকাছি ডিজাইন এবং নকশা
অনলাইন পেজ ‘প্রিয়তমেষু’র প্রতিষ্ঠাতা মাশহুদা হক ইফা বলেন, ‘এবার যতটা সম্ভব চেষ্টা করেছি পোশাকে প্রকৃতি তুলে ধরার। একইসঙ্গে দেশীয় ঐতিহ্য হিসেবে ফুল, পাতা, কলকি ফুটিয়ে তুলেছি।’ ইফা জানান, ঠাকুরগাঁয়ের শাড়িতে ডাইয়ের কাজ করা হয়েছে। নরম এসব কাপড় গরমে খুবই আরামদায়ক। এছাড়া এবারের ঈদে টাঙ্গাইল শাড়ির নকশি পাড়ে ডাই দিয়ে কাজ করা হয়েছে।
পোশাকে ভিন্ন কাট এবং নতুনত্ব
মাশহুদা হক ইফা জানালেন, এবারে ভিন্ন কাট থাকছে পায়জামা এবং পালাজোতে। একটু ঢিলেঢালাভাবেই বানানো হচ্ছে এগুলো। সেই সঙ্গে নতুন হিসেবে পকেট থাকছে। এছাড়া ব্লক দিয়েও ডাইয়ের কাজ থাকছে ফিউশন কামিজে।
নিখাত বুটিক হাউজের স্বত্বাধিকারী রুনা শারমীন জানান, কামিজ এবং শাড়িতে দুটোতেই বিভিন্ন শেডের উপস্থিতিতে ন্যাচারাল ডাইয়ের কাজ করেছেন এই ঈদে।

সুইট পটেটোর টাইডাই শাড়ি
এছাড়াও ফ্যাশন হাউক অরণ্য তরুণদের কথা মাথায় রেখে ডাইয়ের তৈরি টি-শার্ট নিয়ে এসেছে বাজারে। কমলা, মেটে হলুদ, উজ্জ্বল আকাশি রঙের এই টি-শার্ট মানিয়ে যাবে সহজেই।
দরদাম
মাশহুদা হক ইফা জানান, প্রাকৃতিক রং প্রক্রিয়াজারকরণ শ্রমবহুল। সেই সঙ্গে অর্থেরও ব্যাপার রয়েছে। তাই ডাইয়ের পোশাকগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে একটু বেশি পড়ছে। শাড়ি এবং কামিজের দাম শুরু হচ্ছে ২ হাজার টাকা থেকে। নিখাত বুটিক হাউজের ডাইয়ের শাড়ি এবং যেকোনো পোশাকের দাম পড়বে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। ভেজিটেবল ডাইয়ের মূল্য একটু বেশি হওয়ায় সুইট পটেটো নিয়ে এসেছে এই আদলে করা শাড়ি। যা দেখতে আসল ভেজিটেবল ডাইয়ের মতই। এগুলোর দাম পড়বে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। অরণ্যের টি-শার্টগুলোর দাম ১ হাজার ১৭৫ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা।