সাকরাইন মেতেছে আলোর খেলায়

‘সাকরাইন’ পুরান ঢাকাবাসীর জন্য এক মহোৎসব। দিনভর ঘুড়ি ওড়ানোর পর সন্ধ্যায় আতশবাজি, আগুন খেলা ও ফানুশ নিয়ে মেতে ওঠে তারা। একই সঙ্গে চলে গভীর রাত পর্যন্ত গান বাজনার আয়োজন। দুই দিনব্যাপী উৎসবটি পুরান ঢাকাসাবী দুই অংশে বিভক্ত হয়ে উদযাপন করে।
মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) তাঁতিবাজার, শাঁখারিবাজার, পাটুয়াটুলি, রায় সাহেব বাজার, নয়াবাজার, আরমানিটোলা ও বংশাল ঘুরে দেখা যায়, বড় বড় প্রতিটি ভবনের ছাদে উৎসবের আমেজ লেগেছে। আকাশ ছেয়ে আছে রঙবেরঙের ঘুড়িতে। সন্ধ্যার পর শুরু হয় আগুন খেলা, ফানুশ ওড়ানো ও আতশবাজির আলোকচ্ছটা।

3
মূলত পৌষের শেষ ও মাঘ মাসের শুরুর দিন এই উৎসব পালন করে পুরান ঢাকাবাসী।
শাঁখারিবাজারে একটি ভবনে ছাদে বন্ধুদের নিয়ে এবার এই উৎসবে শামিল হতে ডিজে পার্টির আয়োজন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া প্রান্ত দাস। আয়োজন সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ছোট থেকে দেখে আসছি আমাদের বাসার ছাদে বাবা চাচারা মিলে উৎসবের আয়োজন করতো। গত চার বছর যাবৎ তাদের আয়োজনের সাথে যুক্ত হয়েছি আমিও। এবারের আয়োজনে আগের মতই আতশবাজি ফোটানো, আগুন খেলা ও ফানুশ উড়ানোর আয়োজন থাকলেও নতুন করে যুক্ত করেছি ডিজে পার্টির। আমার বাসার আশেপাশের বন্ধুরা যুক্ত হয়েছে এই অনুষ্ঠানে,  সঙ্গে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন বন্ধুও।’

4
পানিটোলার ৪৫ ঊর্ধ্ব স্থায়ী বাসিন্দা উত্তম বিশ্বাস বলেন, ‘এ পর্যন্ত ৩৫টি উৎসবে অংশগ্রহণ করেছি। বাপ চাচাদের দেখানো উৎসব এখনও আমরা করে যাচ্ছি। ছোটবেলায় আমরা সাকরাইনের আগের রাত থেকেই অপেক্ষায় থাকতাম কখন ভোর হবে। ভোর হলেই নাটাই হাতে বাসার ছাদে উঠে আসতাম। আশেপাশের বন্ধুরা আসলে একসঙ্গে ঘুড়ি উড়াতাম। মা চাচিরা পিঠার আয়োজন করতো। এখন ঘুড়ি উড়ানোর চেয়ে ডিজের প্রচলনটাই বেশি দেখছি।’

2
মহাখালী থেকে বন্ধুদের আমন্ত্রণে সাকরাইন উৎসব এসেছেন ফারহানা রিতা। তিনি বলেন, ‘এর আগে দুইবার এ উৎসবে এসেছি। ঘুড়ি উৎসবে ভীষণ আনন্দ পাই। যদিও ঢাকার কিছু কিছু অংশে সাকরাইন উৎসব অল্প পরিসরে হয়, কিন্তু পুরান ঢাকার মতো এত বড় আয়োজন কোথাও হয় না।’

1
দুই দিনব্যাপী এই উৎসবের প্রথম দিন ১৪ জানুয়ারি উৎসব ছিল সদরঘাট, লক্ষীবাজার, সুত্রাপুর ও দয়াগঞ্জসহ আশেপাশের এলাকায়। আজ ১৫ জানুয়ারি শাঁখারিবাজার ও তাঁরিবাজারসহ আশেপাশের এলাকায় উৎসব পালন হচ্ছে।