একসময় শহর-মফস্বলের পাড়া মহল্লা থেকে গ্রামেও পাওয়া যেতো ঈদ কার্ড। বর্ণিল ডিজাইন আর বাহারি রঙের ঈদ কার্ডে আঁকা গম্বুজ, মিনারের উপর চাঁদ-তারা বা লাল গোলাপ, নায়ক-নায়িকাদের ছবির উপর লেখা ঈদ মোবারক দ্বিগুণ করে দিত ঈদ আনন্দ। কিন্ত সময়ের ব্যবধানে এখন আবেদন হারিয়েছে ঈদ কার্ড।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রযুক্তির উৎকর্ষতার কাছেই হার মেনেছে ঈদ কার্ড সংস্কৃতি। ঈদ কার্ডের জায়গা দখল করেছে মুঠোফোনে ক্ষুদেবার্তা, ভার্চুয়াল শুভেচ্ছা কার্ড, ভার্চুয়াল উপহার। ১০-১২ বছর আগেও জমজমাট ছিল কার্ডের ব্যবসা। সেসময় ছোটো দোকানগুলোও প্রতি ঈদে ৭০-৮০ হাজার টাকার কার্ড বিক্রি হতো।
মূলত ৪-৫ বছর আগে থেকে চাহিদাশূণ্য ঈদ কার্ড। সাধারণ ক্রেতাদের কাছে খুচরা বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে প্রায়। টিকে থাকতেই বিয়ের কার্ড, ক্যালেন্ডার, ডায়েরির ওপর নির্ভর করছেন কার্ড ব্যবসায়ীরা।
ছোটোদের জন্য নানা মজার মিনি কার্ড ছাপানো হতো। জনপ্রিয় সব কার্টুন চরিত্র থাকতো মিনি কার্ডগুলোতে। সেগুলোও ছাপানো বন্ধ হয়েছে।
সদরঘাটে প্রজাপতি প্রোডাক্টসের দিলীপ কুমার বলেন, ঈদ কার্ড ব্যবসায় নব্বই দশক ছিল সবচেয়ে জমজমাট। সেসময় নিয়মিতদের পাশাপাশি মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও ঈদ কার্ড ছাপাতো। ঈদের একমাসে আগে থেকে আমাদের ব্যস্ততার শেষ ছিলো না। এখন আর মানুষ ঈদকার্ডের খোঁজও কেউ করেনা। সবাই মোবাইলে ঈদের শুভেচ্ছা জানায়।
আইডিয়াল প্রোডাক্টসের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম খান বলেন, ১০ বছর আগেও শবে বরাতের পর থেকেই ঈদ কার্ডের চাহিদা শুরু হতো। মানুষ লাইন দিয়ে ঈদ কার্ড নিতো সেসময়। সারা দেশের পাইকারি ও খুচরা ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে দম ফেলার ফুসরত ছিলো না আমাদের। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে মানুষের ঈদ কার্ডের প্রতি আগ্রহ নেই। আমরা এবছর কোনো কার্ড করিনি, গতবছরের কিছু কার্ড আছে সেগুলোই রেখেছি।