সাত থেকে আটটা চামচের সঙ্গে আনন্দ পাল আনলেন এক বোতল কোমল পানীয়। এটা কেন? দুপুরের তপ্ত রোদে ঘেমে নেয়ে যাওয়া টিমমেটদের জন্য ঠাণ্ডা পানীয় এনেছেন দলনেতা।
৪০ বছর ধরে দেশের নানা স্থানে ঘুরেফিরে রান্না করছেন। পূজা এলে তাকে নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যায় পূজা আয়োজন কমিটিগুলোর মধ্যে। সঙ্গে থাকেন সহধর্মিনী শেফালি চন্দ্র পাল। ৩০ বছরের সংসার, ছয় ছেলেমেয়ে। তিনজনের বিয়ে হয়ে গেছে। দুজন বাবার মতো রান্নার পেশায় এসেছে।
বিয়ে বাড়ির পোলাউ, কোরমা, রেজালা থেকে শুরু করে পূজার ভোগ কোনো রান্নাতেই আপত্তি নেই আনন্দ-শেফালি দম্পত্তির। রান্না করাটাই এক ধরনের পূজা তাদের কাছে। প্রতিদিন রান্না শুরুর আগে পূজা সেরে নেন। কোন হাতা দিয়ে কোন রান্না নাড়া দেওয়া হবে সেটিও সকালেই আগে ঠিক করে নেন। এখানে নিয়ম ভীষণ কড়া।
বাবার সঙ্গে রান্না শুরু করেছিলেন আনন্দ পাল। তবে ঠাকুরদাদা রান্না করতেন না। তিনি জমি চাষ করতেন আর প্রতিমা গড়তেন। আনন্দ নিজেও প্রতিমা গড়েছেন অনেক। রান্নার চাপ কম থাকলেই বসে যান প্রতিমা গড়ার কাজে। সেটা সখ। সে কাজেও সঙ্গ দেন স্ত্রী শেফালি।
এত মানুষের জন্য রান্নার কাজটা ভীষণ উপভোগ করেন শেফালি পাল। রান্নাঘরে তার এবং আনন্দ’র প্রধান নীতি কিচ্ছু ফেলা যাবে না, আর সব ঋতুভিত্তিক ফল, সবজি খাবারে ব্যবহার করতে হবে। তাই ভোগের খিচুড়িতে জলপাইয়ের দেখা মেলে। লাউয়ের খোসা ফেলে না দিয়ে ভাজা হয়ে ভোগের থালায় ওঠে অমৃত হয়ে। সারারাত বসে থেকে ঐ কুটেছেন সকালে সবাইকে চমকে দেবেন বলে।
এত হাজার মানুষের জন্য রান্নার মধ্যে বাড়িতে রেখে আসা ছেলে-মেয়ের কথা বলছিলেন বারবার। ছোট মেয়েটা এবার জেএসসি পরীক্ষার্থী। পূজায় বাবা-মাকে কখনোই পায় না। তাই নিয়ে একটু আফসোস করলেও এত মানুষ খেয়ে খুশি হচ্ছে সেই প্রশান্তিতেই ভীষণ পুলকিত তারা। অন্নপূর্ণার আশীর্বাদ নিয়ে এভাবেই পূজা-পার্বন বা বিয়েতে রান্না করেই জীবন কাটিয়ে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন দু’জনে। রান্নার ফাঁকে ফাঁকে চলে এই দম্পতির খুনসুটি। হাসি-আনন্দেই চলে আনন্দের রান্না।
বাঁধাকপি- দুই কাপ (মিহি কুচানো)
পোস্ত দানা- ১ চামচ
মরিচ গুঁড়া- ১ চামচ
কাঁচা মরিচ কুচি- ১ চামচ
হলুদ গুঁড়া- আধ চা চামচ
জিরা গুঁড়া- আধ চা চামচ
চালের গুঁড়া- এক মুঠো
ময়দা- ১ মুঠো
লবণ- স্বাদ মতো
সব উপকরণ একসঙ্গে মেখে বেশ কিছুক্ষণ মেখে রাখুন। আধঘণ্টা পর ডুবো তেলে মুচমুচে করে ভেজে তুলুন বাঁধাকপির পাকোরা।