জামদানি উৎসব উপভোগ করেছেন ২৫ হাজার দর্শনার্থী

পাঁচ সপ্তাহব্যাপী জামদানি উৎসবের পর্দা নামলো গতকাল ১২ অক্টোবর। ৬ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে শুরু হয়েছিলো ঐতিহ্যের বিনির্মাণে জামদানি উৎসব। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব বেলায়েত হোসেন। উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের, বাংলাদেশ জাতীয় কারুশিল্প পরিষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য রুবি গজনবী, নির্বাহী সদস্য ও জামদানী উৎসব ২০১৯ এর কিউরেটর চন্দ্র শেখর সাহা ও বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী।

4
স্মারক বক্তব্যে লুভা নাহিদ চৌধুরী বলেন, ‘জামদানি উৎসব জামদানি শিল্পের পুনরুজ্জীবনে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। পাঁচ সপ্তাহব্যাপী এই উৎসবে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের সমাগম ঘটেছে আমাদের বেঙ্গল শিল্পালয়ে। চন্দ্র শেখর সাহা বলেন, ‘এই উৎসবটি আমাদের স্বপ্ন ছিল। আর তা বাস্তবায়িত হয়েছে শুধুমাত্র আমাদের তাঁতি ভাইদের জন্য। আমাদের অতীতের ধারা বয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। সঠিক পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব।’
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘জামদানি শিল্পকে তুলে ধরতে হবে। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে আমরা সব সময় চেষ্টা করি এই শিল্পকে তুলে ধরার জন্য। কিন্তু আমাদের সাপোর্ট আরও বাড়াতে হবে। বিশ্ববাজারে ও দেশের বাজারে জামদানির আরও সম্প্রসারণ করতে হবে।’ 

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম গাজী দস্তগীর
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম গাজী দস্তগীর বলেন, ‘আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের তাঁতি ভাইদের। কারণ যুগ যুগ ধরে তাদের অপরিসীম শ্রমের কারণেই এই শিল্প এখনও টিকে আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তাঁতি ভাইরা ভালো নেই। তারা আমার কাছে আসেন বয়স্ক ভাতার জন্য। এ থেকেই বোঝা যায় যে এই শিল্প এখনো সঠিক পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ভুগছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই তাঁতিদের কাছ থেকে এখনও জামদানি শাড়ি কেনেন। জামদানি শিল্পের জন্য আলাদা রিসার্চ সেন্টার তৈরির জন্য আমরা এবার উদ্যোগ নিয়েছি। শুধু দেশে না বিদেশেও জামদানি উৎসব হওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।’
রুবি গজনবি সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ ঘোষণার মাধ্যমে জানান যে, বিশ্ব কারুশিল্প কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওকে জামদানি বুনন শিল্পের জন্য ‘ওয়ার্ল্ড ক্রাফট সিটি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।

1 (1)
পাঁচ সপ্তাহব্যাপী এই আয়োজনে জামদানি শিল্পের প্রদর্শনীর পাশাপাশি সেমিনারও অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে এই শিল্পের অতীত, বর্তমান ও আগামীর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে জামদানি বয়নশিল্পীদের হাতে সনদ প্রদান করেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গোলাম গাজী দস্তগীর। উৎসবের ১৭ জন প্রধান বয়ন শিল্পী ও তাদের ৪৭ জন সহকারীর হাতে সনদপত্র দেওয়া হয়। উৎসব সহযোগী প্রতিষ্ঠান আড়ং, কুমুদিনী, আজান্তা ও টাঙ্গাইল শাড়ি কুটিরের কর্মকর্তাদের শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।

10
এ উৎসবে ৪৭ জন জামদানি তাঁতির অংশগ্রহণ করেন। উৎপাদিত কাপড়ের পরিমাণ ৮০টি, সংগৃহিত জামদানি আলোকচিত্র রয়েছে ২০০টি। এই প্রকল্পে মোট সময় লেগেছে ২ বছর।