ঘুড়ি ও আতশবাজিতে মুখর সাকরাইন উৎসব

ঘুড়ি তৈরি, নাটাই-সুতা প্রস্তুত করাসহ আরও নানা আয়োজন শুরু হয়েছিল সেই সকাল থেকেই। বিকেল নামতে না নামতেই নাটাই-ঘুড়ি হাতে হইহই বেরিয়ে আসে ছেলে-বুড়ো সবাই। লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে পুরান ঢাকার ছাদ, আকাশ ঢেকে যায় রঙ-বেরঙের ঘুড়িতে। সেসব ঘুড়ির কতই না রূপ! কোনওটা পাখির আদলে তো কোনওটা মুখোশের মতো বিশাল।

5
আজ ১৪ জানুয়ারি পৌষ সংক্রান্তিতে পুরান ঢাকাবাসী মেতেছে ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসবে। বিকেলে চলেছে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা। সন্ধ্যার পর শুরু হয় ফানুশ ওড়ানো, আতশবাজি ও আগুন খেলা। রঙিন সব আলোর ঝলকানিতে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরান ঢাকা।

1
ঢাকার বনশ্রী থেকে ইমাম হোসেন তার দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে এসেছিলেন স্বজনের বাড়িতে। তিনি জানালেন, এদিন পুরান ঢাকায় থাকা স্বজনের বাসায় দাওয়াত থাকে ঢাকা শহরে থাকা সব আত্মীয়-বন্ধুর। এটি প্রতি বছরের অলিখিত নিয়ম। একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া আর আড্ডা তো চলেই, পাশাপাশি ছেলেমেয়েরা মহা উৎসাহে ঘুড়ি ওড়ায়।

8
সাকরাইনে বাড়িতে বাড়িতে থাকে মজার সব খাবারের আয়োজন। পিঠাপুলি, মুড়ি-গুড়, পায়েশ পরিবেশন চলে। পুরান ঢাকার আদি নিবাসী নাঈম সিনহা জানান, সংক্রান্তি শব্দটি থেকেই পুরান ঢাকার এই ‘সাকরাইন’ উৎসব। মূলত ঘুড়ি উৎসব এটি। আগে সারাদিন ঘুড়ি উড়িয়ে সন্ধ্যায় ঘুড়ি-নাটাই ফেলে নতুন মাস শুরু করতো সবাই। ঘুড়ি, ফানুস, মশালসহ নানা আয়োজন থাকে এই উৎসবে। কেউ কেউ ছাদে মেজবানের ব্যবস্থা করে।’

7
উল্লেখ্য, পৌষের শেষ আর মাঘের শুরুর সন্ধিক্ষণে পুরান ঢাকায় পালিত হয় ঘুড়ি উৎসব। আগামীকাল দ্বিতীয় ও শেষ দিনের উৎসবে মুখর হবে নগরীর একাংশ।

ছবি:  নাঈম সিনহা।