ছবিতে মনিপুরীদের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব

সাদা কাগজের নিপুণ নকশা আর কারুকাজ সজ্জিত মণ্ডপে ঢাকঢোল, করতাল আর শঙ্খধ্বনিতে ব্যাপক উল্লাসের মধ্য দিয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে মনিপুরী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। শনিবার (২০ নভেম্বর) উষালগ্নে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে শেষ হয় এই মহোৎসব। শুক্রবার দুপুর ১২টায় রাখাল নৃত্যের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল উৎসবটি। এটি মনিপুরী সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব হলেও প্রতি বছরের মতো এবারও উৎসবে জমায়েত হয়েছিলেন নানা শ্রেণি-পেশা ও সম্প্রদায়ের মানুষ। রাধা-কৃষ্ণের লীলাকে ঘিরে এই উৎসবের আচার ধর্মীয় হলেও মহারাস মনিপুরীদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বহন করে। কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর জোড়া মণ্ডপ প্রাঙ্গণে মনিপুরী মহারাসলীলা সেবা সংঘের উদ্যোগে বিষ্ণুপ্রিয়া মনিপুরীদের ১৭৯তম বার্ষিকী ও রাস উৎসবের আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। রাসকে ঘিরে একইসাথে বসেছিল মেলা। মেলায় খৈ, মুড়ি, বাতাসা, ছোটদের বিভিন্ন ধরনের খেলনা, পোশাক-পরিচ্ছদ, ঘর সাজানোর বিভিন্ন উপকরণ ও প্রসাধনী, শ্রীকৃষ্ণের ছোট-বড় বিভিন্ন আকৃতির ছবিসহ বাহারি পণ্য শোভা পেয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৭৬৯ সালে রাজা ভাগ্যচন্দ্র সিংহের আয়োজনে মনিপুরীরা প্রথম রাসলীলা পালন করেন। সে সময় মনিপুরী রাজা স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে কন্যা লাইরোবিকে রাধার ভূমিকায় অবতীর্ণ করে রাস অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেন। মৈথিলি ও ব্রজবুলি ভাষার বিভিন্ন পদের মনিপুরী সংগীতের নিজস্ব গায়কী ও মুদ্রা-পদবিক্ষেপে জটিল এবং ধ্রপদি ধারার গীতি-নৃত্যধারায় তা পালন করা হয়েছিল।