সিল্ক নিয়ে এফডিসিবি’র ফ্যাশন উইক

ঢুকতেই চোখে পড়বে রেশম বুননের চরকি। একটু সামনে এগোতেই দেশীয় কৃষ্টি রেশম কাপড়ে তৈরি নজরকাড়া সব পোশাক। দেশীয় ফ্যাশান ডিজাইনারদের হাতের জাদুতে সাজানো হালকা কাজের পোশাকগুলো আপনার মন ভরাতে বাধ্য। রেশম বা সিল্কের শাড়ি ছাড়াও রয়েছে টাফোটা সিল্ক, বলাকা সিল্ক, ডুপিয়ান, এন্ডি, আরগানজার মত পোশাক। 

 
রাজধানীর গুলশানে ওয়াটারএজ গ্যালারিতে  ‘বাংলাদেশ কুটর উইক ২০২১’ -এর আয়োজন করেছে ফ্যাশন ডিজাইনারদের সংগঠন ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অব বাংলাদেশ (এফডিসিবি)। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) শুরু হওয়া রেশম বা সিল্ক পোশাকের তিনদিনের এই প্রদর্শনী চলবে আগামীকাল শনিবার (৪ ডিসেম্বর) পর্যন্ত। সকাল ১১ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে দর্শনার্থীদের জন্য।  



আয়োজকরা বলছেন দেশীয় ঐতিহ্য রেশম বা সিল্ক শিল্পকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ও আন্তর্জাতিকভাবে এই শিল্পের প্রভাব তৈরি করতেই এই আয়োজন। ঝুঁকির মুখে থাকা এই শিল্পকে বাঁচাতে ফ্যাশন উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সরকারের সংশ্লিষ্টদেরও বিশেষ নজর প্রয়োজন বলে দাবি তাদের।

 
আয়োজক সংগঠন এফডিসিবির সভাপতি মাহিন খান বলেন, 'আমরা এফডিসিবি একটি অলাভাজনক প্রতিষ্ঠান, গত ৭-৮ বছর ধরে দেশীয় পণ্য ও শিল্প নিয়ে কাজ করছি। বেশ কয়েকবার খাদি নিয়ে কাজ করছি। এবার রাজশাহী ও চাপাইনবয়াবগঞ্জের রেশম শিল্প ও রেশম কাপড় নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে। সবাইকে দেশীয় হাতে তৈরি শিল্পে উৎসাহিত করা আমাদের লক্ষ্য। আমরা চেষ্টা করছি এটাকে গ্লোবাল লুক দিতে যাতে গোটা বিশ্বে আমাদের দেশের শিল্পকে শক্ত অবস্থান দেওয়া যায়।'

ডিজাইনার শৈবাল সাহা বলেন, 'সিল্ক ইন্ডাস্ট্রিতে বিদেশি সুতো ঢুকে গেছে। কিন্তু একসময় দেশীয় রেশমের ব্যাপক চাহিদা ছিলো। এমনকি রেশম সুতোর কারিগরের সংখ্যাও কমছে। এক্ষেত্রে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা দরকার। আমরা যারা করছি ব্যক্তিগত উদ্যোগে। সরকারি উদ্যোগে এধরণের আয়োজন যত করতে পারবো আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের দেশীয় পণ্য ও শিল্পগুলোর তত বেশি প্রচার করতে পারবো।'
 
প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ১৭ জন দেশী ডিজাইনারের পোশাক। তাদের মধ্যে ডিজাইনার মাহিন খান, এমদাদ হক, শৈবাল সাহা, চন্দনা দেওয়ান, লিপি খন্দকার, শাহরুখ আমিন, ফাইজা আহমেদ, আফসানা ফেরদৌসি, তাসফিয়া আহমেদ, সায়িদা রশিদ, ফারাহ আনজুম, রিফাত রহমান, সারা করিম, ফারজানা নোভা, রুপু শামস, রিমা নাজ, নওসিন খায়েরের নকশা করা পোশাক রয়েছে।

 
ডিজাইনার রুপু শামস বলেন, 'আমাদের দেশের মানুষ মনে করে রেশমের পোশাক পড়ে আরাম বা কমফোর্ট থাকবে কিনা। আমরা লাক্সারি ব্যাপারটা রেখে অনেক হালকা ডিজাইনে কাজ করেছি যাতে পোশাকগুলো মানুষের জন্য আরামদায়ক হয়। এছাড়া এই ডিজাইনগুলোকে কুটর বলছি, কারণ এইগুলো শুধু একটাই ডিজাইন, শুধুমাত্র আপনার কাছেই থাকবে।'

 
প্রদর্শনীর প্রথমদিনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মণি। এদিন ডিজাইনারদের তৈরি রেশম কাপড়ের পোশাকে হাঁটেন একঝাঁক মডেল। দ্বিতীয় দিনেও ছিলো ফ্যাশন শো-এর আয়োজন। তৃতীয় দিনে রয়েছে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান। 
 
ছবি: সাজ্জাদ হোসেন