গনগনে রোদ্দুর প্রখর তাপ হয়ে ঝরে গ্রীষ্মের প্রকৃতিতে। তপ্ত বাতাস জ্বালা ধরিয়ে দেয় শরীর ও চোখে। আবার এই আগুনঝরা গ্রীষ্মই আমাদের দৃষ্টিতে প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে যায় তার বর্ণিল ফুলের সমারোহে। চারপাশের সব রুক্ষতা যেন হারিয়ে যায় এ রঙের ঝাঁপির মাঝে। চলতি পথে কৃষ্ণচূড়ার গাঢ় লাল দেখে থমকে দাঁড়ায় তৃষ্ণার্ত পথিক। আবার কখনও লালের ফাঁকে উঁকি দেয় বেগুনি জারুল ফুল। সোনাঝরা সোনালু ফুলের গাছ ঝলমল করতে থাকে আপন মহিমায়। এছাড়াও রাধাচূড়া, শিমুল,ভাটফুল, কুরচি,করবীসহ নানা ফুলের চমৎকার রঙ গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে খানিকটা হলেও স্বস্তি দিয়ে যায় আমাদের। ইট কাঠের ফাঁকে ফাঁকে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল গাছের ফুলগুলো তীব্র রোদের ঝলকানিতে আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
কৃষ্ণচূড়া
গ্রীষ্মের সবচেয়ে রঙিন ফুলটি বোধহয় কৃষ্ণচূড়া। এর জাদুকরী রঙের ছটায় মুহূর্তেই রঙিন হয়ে ওঠে প্রকৃতি। গাঢ় লালের এ সমারোহ দেখে মনে হতে পারে, এত কৃষ্ণচূড়া গাছ লুকিয়ে ছিল আমাদের চারপাশে!লালের পাশাপাশি হলুদ ও কমলা রঙের হয় এ ফুল। কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিখ রেজিয়্যা। চমৎকার পত্রপল্লব ও আগুনরঙা ফুলের জন্য প্রসিদ্ধ এ গাছ। কৃষ্ণচূড়া যে শুধু লাল রঙেরই হয় তা নয়, পাশাপাশি কমলা লাল ও হলুদ রঙেরও হয়। দৃষ্টিনন্দন ফুলগুলোর শোভা বাড়ায় উজ্জ্বল সবুজ রঙের সূক্ষ্ম চিরলপাতা। কৃষ্ণচূড়া গাছের আরেক নাম গুলমোহর। আমাদের দেশে সহজপ্রাপ্য এ গাছটির আদিনিবাস মাদাগাস্কারে। উৎপত্তিস্থল শুকনো পাতা ঝরা বৃক্ষের বন হলেও বর্তমানে বনে এ গাছ বিলুপ্তপ্রায়। ক্যারাবিয়ান অঞ্চল, আফ্রিকা, হংকং, তাইওয়ান, দক্ষিণচীন, বাংলাদেশ, ভারত সহ বিশ্বের অনেক দেশে এটি জন্মে। কৃষ্ণচূড়ার সবুজ কচি ফলগুলো সবুজ পাতার ভিড়ে লুকিয়ে থাকে। শীতে গাছের পাতা খসে পড়লে দেখা যায় গাঢ় ধূসর রঙের পাকা ফল। বসন্তকাল থেকে নিঃশব্দে ঝরে যাওয়া বিবর্ণ ফলগুলোর জায়গা একটু করে দখল করে নিতে থাকে রক্তিম ফুল। গ্রীষ্মে মনে হয় হঠাৎই যেন আগুন লেগে গেছে গাছজুড়ে! আগুন লাল ফুলে ছেয়ে যায় পুরো কৃষ্ণচূড়াগাছ। উজ্জ্বল লাল রঙের এ ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়িযুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মতো লম্বা হতে পারে। শোভাবর্ধন করার পাশাপাশি উষ্ণ আবহাওয়ায় সুশীতল ছায়া দিতেও জুড়ি নেই কৃষ্ণচূড়াগাছের। গ্রীষ্মের তাপ সঙ্গে নিয়ে আসা কৃষ্ণচূড়া ফুল বর্ষার রিমঝিম ছন্দের সঙ্গেও তাল মেলায়। তবে কখনও বিবর্ণ হয় না এ ফুল। ঝরে পরার আগ পর্যন্ত তার গাঢ় লালচে রঙে মুগ্ধ করে সবাইকে। নগরীর মানিক মিয়া এভিনিউ এর সড়ক দ্বীপ, বোর্টানিক্যাল গার্ডেন,রমনা পার্ক,সোহরাওয়্যার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে কৃষ্ণচূড়া গাছের মেলা। নীল আকাশের ক্যানভাসে ফুটে থাকা লাল কৃষ্ণচূড়ার মাঝে অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুঁজে নিতে চাইলে যেতে পারেন এর যেকোনো জায়গায়।
জারুল
দৃষ্টিনন্দন বেগুনি রঙে প্রকৃতির শোভা বাড়ায় জারুল ফুল। গ্রীষ্মের শুরু থেকেই সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিতে থাকে এ ফুলটি। বিশাল গাছের শাখা উপশাখা জুড়ে বিচরণ জারুলের। এর বৈজ্ঞানিক নাম লেজারস্ট্রমিয়া স্পেসিওজা। এটি দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রজাতি। জারুল ভারতীয় উপমহাদেশের গাছ। বাংলাদেশ ছাড়াও চীন, মালয়েশিয়া, ভারতের জলাভূমি অঞ্চলে এর জন্ম। জারুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ ইংরেজরা উনিশ শতকে এখান থেকে বীজ নিয়ে কুয়ালালামপুর ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের অনেক শহরে জারুল লাগায়। নিম্নাঞ্চলের জলাভূমিতে ভালোভাবে বেড়ে ওঠে জারুল গাছ। তবে শুকনো এলাকায়ও মানিয়ে নিতে পারে। অনেক শাখা-প্রশাখায় মেলে ধরা সবুজ ছাতার মতো দেখায় গাছটি। এর কাণ্ড ধূসর ও পাতা লম্বাটে। পত্রদণ্ডে বিপরীত দিকে সাজানো থাকে। শীতে পাতা ঝরে যায় এর। আবার বসন্তে রিক্ত শাখাগুলো ভরে ওঠে সবুজ পাতায়। আর গ্রীষ্মে হালকা বেগুনির বর্ণচ্ছটায়। প্রথমে ডিম্বাকৃতির ফল আসে গাছে।এতো প্রচুর পরিমাণে হয় ফল হয় যে ভারে শাখা নুয়ে পড়ে। শীতে পাতার সঙ্গে ফলও ঝরে পড়ে। বীজ থেকে সহজেই চারা গজায়। বাড়েও দ্রুত। জারুল ফুলগুলো থাকে শাখার ডগায়, পাতার ওপরের স্তরে। লম্বা মঞ্জরিতে গাঢ় সবুজের পটভূমিতে বেগুনি ফুলের গুচ্ছ দোলে বাতাসে। ফুলে ছয়টি পাপড়ি থাকে।মাঝখানে পুংকেশরের সঙ্গে মাখামাখি হলুদ পরাগকোষ ফুলের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তোলে। অনেক দিন ধরেই ফুলের শোভা পায় গাছজুড়ে। গ্রীষ্মের শুরুতে ফুল ফোটে। কিছুটা কমে এলেও শরৎ অবধি সবুজে-বেগুনিতে জারুল হয়ে থাকে মনোরম। পথের শোভা বাড়াতে জারুলের জুড়ি নেই। চাইলে বাগানেও রোপণ করতে পারেন এ গাছ।
জারুল কাঠ অত্যন্ত মূল্যবান। লালচে রঙের কাঠ শক্ত ধরণের হয়। ভিজলেও সহজে নষ্ট হয় না। ভেষজ গুণও চমৎকার।
সোনালু
সোনালুর ঝলমলে রূপ দেখে মনে হয় কেউ যেন যত্ন করে সাজিয়েছে তাকে! দীর্ঘ থোকায় সাজানো উজ্জ্বল হলুদ ফুলের মায়াবি রূপ গ্রীষ্মেরই অবদান। সোনালুর বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাশিয়া ফিস্টুলা।
বৈশাখের শুরুতে দীর্ঘ মঞ্জরির ফুলগুলো ফুটতে শুরু করে। নতুন পাতাও জেগে ওঠে একই সঙ্গে। দেখতে দেখতে ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় গাছ। দেখে মনে হয় যেন কাঁচা সোনা রঙে ভরে গেছে গাছটি। ডালপালা সেজে ওঠে কচি সবুজ পাতায়। লম্বা ঝুলন্ত পুষ্পমঞ্জরি সোনালুর প্রধান আকর্ষণ। বৈশাখী হাওয়ায় ফুলের থোকাগুলো দুলতে থাকে কানের দুলের মতো। সোনালু গাছ আকারে ছোট,ছড়ানো-ছিটানো ডালপালা। পাপড়ির সংখ্যা পাঁচ। ফল গোল, লাঠির মতো লম্বা। এ কারণে সোনালু কোথাও কোথাও বানরলাঠি নামেও পরিচিত। বানরলাঠি ঘিরে লোকসমাজে নানা গল্প প্রচলিত রয়েছে। পূর্ব এশিয়া থেকে আগত সোনালুর ফল, ফুল ও পাতা বানরের প্রিয় খাদ্য। এ গাছের কাঠ জ্বালানি ছাড়াও অন্যান্য কাজে লাগে।
রাধাচূড়া
অনেকটা কৃষ্ণচূড়ার মতোই দেখতে রাধাচূড়া ফুল। অনেকে কৃষ্ণচূড়া ভেবে ভুল করেন রাধাচূড়াকে। একটু লক্ষ্য করলেই পার্থক্যটা বোঝা যায় অবশ্য। ছোট কাঁটাওয়ালা রাধাচূড়া ফুলের গাছ কৃষ্ণচূড়ার মতো বড় হয় না। ফুল হয় হলুদ এবং লাল রঙের। অনেক সময় একই গাছে লাল হলুদ দুই রঙের ফুলই দেখা যায়। রাধাচূড়ার জন্মস্থান ওয়েস্ট ইন্ডিজ। লাল ও হলুদ মিশেলের ফুলগুলো দৃষ্টিনন্দন। পাতা ও ফুলের গড়ন কৃষ্ণচুড়ার কাছাকাছি পার্থক্য শুধু রঙে। বর্ষার শেষে ছোট ছোট চ্যাপ্টা, তামাটে রঙের ফল আসে গাছে। শীতে পাতা ঝরে যায় গাছের। আবার বসন্তে নতুন পাতায় ভরে যায়। রাধাচূড়া গাছে ফুল ফোটে গরমের একদম শুরুতে। সবুজ পাতা ভরা গাছের বড় বড় খাড়া মঞ্জরীতে ফুটে থাকা থোকা থোকা হলুদ ফুল বাড়ায় প্রকৃতির সৌন্দর্য।
কনকচূড়া
উজ্জ্বল কমলা রঙের কনকচূড়া ফুল বর্ণিলতা ছড়ায় গ্রীষ্মের প্রকৃতিতে। এই গাছটিও দেখতে কৃষ্ণচূড়া গাছের মতো। গাঢ় সবুজ পাতা ও হলুদ রঙের ফুলগুলো রোদ্র ঝলমল গ্রীষ্মকে দান করে লাবণ্য। কনকচূড়া আমাদের দেশের নিজস্ব গাছ নয়। কনকচূড়ার আদি নিবাস আন্দামান, শ্রীলঙ্কা, মালয় ও উত্তর অস্ট্রেলিয়া।এর শাখা বহু প্রশাখায় বিভক্ত, ঘনবিন্যস্ত এবং ছায়ানিবিড়। পত্রমোচী গাছ মোটামুটি ২০ মিটারের মতো লম্বা হতে পারে। চারপাশে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দিয়ে বেড়ে ওঠে। পাতা যৌগিক। গাছ, পাতার আকৃতি কৃষ্ণচূড়াগাছের মতোই। কনকচূড়ারও শীতের শেষভাগে পাতা ঝরে যায়। গ্রীষ্মে নতুন কচি পাতা আর ফুলে ফুলে ভরে ওঠে। ফুলে পাপড়ির সংখ্যা পাঁচটি। পাপড়িগুলো কুঞ্চিত। ফুল ফোটে শাখার ডগার লম্বা মঞ্জরিতে। অজস্র প্রস্ফুটন। ফলে, দূর থেকে সবুজের ওপর স্বর্ণালির প্রলেপের মতো দ্যুতিময় দেখায়। ফুল সুরভিময়।
কনকচূড়ার ফল শিমের মতো। কৃষ্ণচূড়ার ফলের মতো অতটা বিশালাকৃতির নয়। দুই থেকে ছয় সেন্টিমিটার লম্বা। রং তামাটে। ফুলের মতো ফলও প্রচুর। তামাটে রঙের পাতলা ধরণের হয় ফলগুলো।
কাঠগোলাপ
পাতার ফাঁকে ফুটে থাকা সাদা, লাল, গোলাপি আর হলুদাভ রঙের কাঠগোলাপ আরেকটি চমৎকার ফুল গ্রীষ্মের। এর বৈজ্ঞানিক নাম প্লুমেরিয়া অবটুসা। এটি মেক্সিকো, মধ্য আমেরিকা, ভেনেজুয়েলা ও দক্ষিণ ভারতের স্থানীয় ফুল। কাঠগোলাপের গাছ ঝোপ আকৃতির এবং পরিস্থিতিভেদে কয়েক মিটার লম্বা হতে পারে। পাতা কিছুটা বড় ও লম্বা। পাঁচটি ছড়ানো পাপড়ির ফুলগুলো পাঁচ থেকে আট ইঞ্চি চওড়া। পাপড়ির কেন্দ্রে কিছুটা হলদে বা কমলা রঙের ছোঁয়া থাকে। ফুলের পাশাপাশি এর পাতার বিন্যাসের সৌন্দর্যও দৃষ্টি কাড়ে। অনেক সময় গাছে পাতা গজানোর আগেই ফুল ফোটে। এর পাতাগুলো ডালের শেষ প্রান্তে গুচ্ছবদ্ধ হয়ে থাকে। পাতা ঝরার পর ডালে চিহ্ন থেকে যায়। কাঠগোলাপ ছাড়াও গুলাচ, কাঠচাঁপা, গোলকচাঁপা, গৌরচাঁপা, চালতাগোলাপ ইত্যাদি নামে একে ডাকা হয়।
কুরচি
দেখে মনে হয় যেন সাদা মেঘ টুকরো হয়ে নেমে এসেছে গাছে। পুরো গ্রীষ্মকাল সবুজ গাছে এভাবেই জেগে থাকে সাদা রঙের সুগন্ধি কুরচি ফুল। কুরচির আদি নিবাস ভারতে। এ ফুল ফোটে থোকায় থোকায়। ফুল ফোটার সময় গাছ পাতা শূন্য হয়ে যায়। দিনে খুব একটা সুগন্ধ না বিলালেও সন্ধ্যায় মিষ্টি গন্ধে জেগে ওঠে কুরচি ফুল। ছোট গাছে বড় ও চ্যাপ্টা আকারের পাতার ফাঁকে ফাঁকে ফুটে থাকে সাদা ফুলগুলো। কুরচির বুনো নাম গিরিমল্লিকা। ইংরেজি নাম ইস্টার-ফ্লাওয়ার। কবিরাজি ঔষধে ব্যবহার করা হয় এটি। ফুল ও বাকল আমাশয়ের, পাতা ব্রঙ্কাইটিস ও বাতের আর বীজ অর্শ, এজমা ও শূলব্যাথার উপশমে ব্যবহার করা যায়।
মধুমঞ্জরী লতা
গ্রীষ্ম ও বর্ষায় ফুল আসে মধুমঞ্জরী লতায়। ফুলটিকে মাধবীলতা বলে অনেকেই ভুল করেন। এর বৈজ্ঞানিক নাম কুইসকুয়ালিস ইন্ডিকা। স্নিগ্ধ সবুজ পাতার ফাঁকে ডালের আগাতে থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা হালকা গোলাপি ও সাদার মিশ্রণে ফুলগুলো স্নিগ্ধতা নিয়ে আসে প্রকৃতিতে। মালয়েশিয়ার প্রজাতি এটি। কখনও কখনও শীত পর্যন্ত থেকে যায় মধুমঞ্জরী লতার ফুল। সন্ধ্যায় নতুন ফোটা ফুলের সুগন্ধ মন মাতিয়ে তোলে। ঘরের আঙিনা, বাগানসহ নানা জায়গায় এর দেখা মেলে। এছাড়াও রমনা পার্ক, চন্দ্রিমা উদ্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতেও মধুমঞ্জরিলতার দেখা পাবেন।
হিমচাঁপা
উত্তপ্ত প্রকৃতিতে খানিকটা শীতলতা নিয়ে আসতেই যেন ফোটে হিমচাঁপা বা উদয়পদ্ম ফুল। কালচে সবুজ পাতার মাঝে দৃষ্টিনন্দন সাদা ফুলের সৌন্দর্য মুগ্ধ করে। এর বৈজ্ঞানিক নাম ম্যাগনোলিয়া গ্রান্ডিফ্লোরা। মূলত আমেরিকার ফ্লোরিডা ও টেক্সাসের প্রজাতি এটি। আদি জন্মস্থানে গাছ বড় হলেও আমাদের দেশে ৬-১০ মিটার উঁচু হয়। গাছের গড়ন হালকা ও কিছুটা লম্বাটে। বসন্তের শেষভাগে ছোট ডালের মাথায় কলি ধরতে শুরু করে। হিমচাঁপার ফল ডিম্বাকার। কিছুটা গোলাপি রঙের, ৮-১০ সে.মি. লম্বা হয়। ফল বীজে পরিপূর্ণ। বীজ পাখিদের আকর্ষণ করে, পাখি ও অন্যান্য প্রাণির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। লবণাক্ত মাটি, বায়ুপূর্ণ সমুদ্রতীরবর্তী এলাকাতেও এটি ভাল হয়। ছয় থেকে বারোটি পাপড়িতে বিন্যস্ত বড় সাদা ফুলে কিছুটা লেবুর সুগন্ধি থাকে। কবিগুরু তাকে ডেকেছেন উদয়পদ্ম নামে। সাতসকালে সদ্য ফোটা উদয়পদ্ম দেখতে বেশ আকর্ষণীয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাপড়িগুলো ছড়িয়ে পড়ে এবং মলিন হয়ে যায়। হিমচাঁপা চিরসবুজ গাছ। বছরব্যাপী পাতা ঝরে ও নতুন পাতা গজায়। কালচে সবুজ পাতাগুলো বড় লম্বাটে, বিন্যাসে একক ও আয়তাকার। শোভাবর্ধনকারী বৃক্ষ হিসেবে আমেরিকাসহ ইউরোপ- এশিয়ার নানা দেশে হিমচাঁপা বেশ জনপ্রিয়।
হিমচাঁপা গাছের কাঠ ভারী ও শক্ত। এটি আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। রমনা পার্ক, মিরপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন, বলধা গার্ডেন, শিশু একাডেমীর বাগান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় হিমচাঁপার দেখা মেলে।
ছবি: উইকিপিডিয়া