প্রাচীনকাল থেকেই খাবার সংরক্ষণের জন্য লবণ ব্যবহার করে আসছে মানুষ। লবণ খাবার থেকে পানি বের করে এবং কার্যকরভাবে শুকিয়ে খাবার সংরক্ষণ করতে কাজ করে। একসময় মাংস, মাছ, শাকসবজি এবং ফল সংরক্ষণের জন্য লবণ ব্যবহার করা হতো। এখন নিশ্চয় অবাক হচ্ছেন এটা ভেবে যে তবে লবণের মেয়াদ কি আসলেই শেষ হয়ে যায়?
সংক্ষিপ্ত উত্তর হচ্ছে যে লবণের মেয়াদ শেষ হয় না। যে জীবাণুগুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং খাদ্যে বিষক্রিয়া হয় তাদের বেড়ে ওঠার জন্য পানির প্রয়োজন হয়। কিন্তু খাঁটি লবণে পানি থাকে না, যার মানে এটি কখনই খারাপ হয় না। লবণ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থায়ী হয়। অর্থাৎ বিশুদ্ধ লবণ চিরকাল থাকবে।
লবণের মেয়াদ শেষ না হওয়ার আরেকটি কারণ রয়েছে, এটি বেশিরভাগ জীবাণুর জন্য বিষাক্ত। ন্যাশনাল একাডেমি ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের রিপোর্ট অনুসারে, খাবারে লবণ যোগ করার ফলে মাইক্রোবিয়াল কোষগুলো অসমোটিক শক হতে পারে, যার ফলে কোষ থেকে পানি কমে যায় এবং এর ফলে কোষের মৃত্যু বা বৃদ্ধি ধীর হয়। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার অনুসারে, লবণ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থায়ী হয়, যতক্ষণ না আপনি প্যান্ট্রিতে ঠান্ডা ও শুষ্ক অবস্থায় রাখেন।
তবে লবণযুক্ত পণ্যগুলো নির্দিষ্ট সময় পর নষ্ট হয়ে যায়। একসময় লবণযুক্ত মাখন নষ্ট হয়ে যায়, এমনকি টিনজাত পণ্যের মতো উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাবারের মেয়াদও শেষ হয়ে যায়। কারণ লবণের পাশাপাশি অন্যান্য উপাদান যেমন আয়োডিন, মসলা বা রঙ থাকে যেগুলো সময়ের সাথে সাথে খারাপ হতে পারে।
তবে বিশুদ্ধ লবণে সোডিয়াম ক্লোরাইডের বাইরে যৌগ এবং উপাদান থাকে। যেমন হিমালয় লবণ খনিজ অমেধ্য থেকে তার গোলাপী রঙ পায়। অপরিশোধিত সামুদ্রিক লবণে প্রচুর পরিমাণে শৈবাল থাকে। আয়োডিনযুক্ত লবণে আয়োডিন থাকে। টেবিল সল্ট, কোশের লবণ এবং অন্যান্য ধরনের লবণে অ্যান্টি-কেকিং এজেন্ট থাকে যা সময়ের সাথে সাথে ক্ষয় হতে পারে, যা ক্লাম্পিং হতে পারে। এই যোগ করা যৌগগুলো চিরতরে তাজা থাকে না, তাই লবণও থাকবে না। তবে এটি নষ্ট করবে না বা খাদ্যজনিত অসুস্থতা সৃষ্টি করবে না।
লবণ নষ্ট হলে কীভাবে বুঝবেন?
লবণের মেয়াদ শেষ হয় না। তবে এর গুণমান হ্রাস পেতে পারে। আর্দ্র জলবায়ুর কারণে লবণ জমাট বেঁধে যেতে পারে বা গলে যেতে পারে। নিউট্রিয়েন্টস জার্নালের এটি গবেষণা বলছে, লবণে আয়োডিনের পরিমাণ সাধারণত সময়ের সাথে সাথে হ্রাস পায়।
তথ্যসূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট