লিচুর মৌসুম আর বেশি দিন নেই। তবে এখনও কিন্তু বাজারে পাওয়া যাচ্ছে মিষ্টি ও রসালো লিচু। ১০০ গ্রাম লিচুতে রয়েছে ৬৬ ক্যালোরি, ১৬.৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১৫.২ গ্রাম চিনি, ৭১.৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ও ১.৩ গ্রাম ডায়াটারি ফাইবার। এছাড়া কপার, পটাশিয়াম ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎস লিচু। লিচুতে পানির পরিমাণ অনেক বেশি। ফলে গ্রীষ্মের গরমে আপনাকে হাইড্রেট রাখতে পারে এই ফল। একটি লিচুতে ১.৫-১.৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে। বেশিরভাগ কার্বোহাইড্রেট শর্করা থেকে আসে। ফলে অতিরিক্ত লিচু খেলে কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীরা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন লিচু।
লিচু খাওয়ার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
- লিচু আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে। অন্যদিকে লিচুতে থাকা রাসায়নিক উপাদানগুলো শ্বেতরক্তকণিকা বাড়াতে সাহায্য করে।
- হার্টের জন্য খুবই উপকারী লিচু। এতে রয়েছে অলিগোনল, যা নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করতে সাহায্য করে। এই নাইট্রিক অক্সাইড আবার রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। এতে ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে যা ভাসকুলার ফাংশন উন্নত করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।
- একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনন্দিন ৭৫ থেকে ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি প্রয়োজন হয়। প্রতিদিন ১০০ গ্রাম লিচু খেলে এই চাহিদার প্রায় পুরোটাই পূরণ হয়ে যায়। ভিটামিন সি আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বক, দাঁত ও হাড় সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- লিচুতে থাকা আঁশ জাতীয় উপাদান খাদ্য পরিপাক ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এ ছাড়া এই আঁশগুলো শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতেও ভূমিকা রাখে।
- ক্যানসার এবং ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে লিচুতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।
- প্রচুর পরিমাণে পানি এবং পটাসিয়াম পাওয়া যায় লিচু থেকে। কিডনিতে জমা হওয়া টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে এগুলো। লিচু ইউরিক অ্যাসিডের ঘনত্বও কমায় যা কিডনির ক্ষতির ঝুঁকি হ্রাস করে।
- লিচুতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাংগানিজ এবং কপার। এসব উপাদান হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। ফলে নিয়মিত লিচু খেলে হাড়ের ভঙ্গুরতা কমে এবং অস্টিওপোরোসিস ও ফ্র্যাকচারের সম্ভাবনা হ্রাস পায়।
- লিচুতে রয়েছে কপার যা শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। এছাড়া এতে থাকা আয়রন নতুন রক্তকোষের জন্ম দেয়।
- ভিটামিন সি এর পাশাপাশি ভিটামিন কে এবং ই পাওয়া যায় লিচু থেকে। এতে কম মাত্রায় রাইবোফ্লাভিন এবং নিয়াসিন রয়েছে। গরমে নিয়মিত লিচু খেলে দৈনিক ভিটামিন বি৬-এর চাহিদার ১০ শতাংশ পাওয়া যায়। এটা লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে এবং প্রদাহজনিত রোগ থেকে রক্ষা করে।
- লিচু খেলে ত্বক থাকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। এটি ত্বকের বলিরেখা ও কালচে দাগ দূর করে ত্বক পরিষ্কার রাখে।
তথ্যসূত্র: হেলথলাইন ও ওয়েবএমডি