‘আমার স্ত্রী শুধু অন্যের পরামর্শ শোনে’

প্রশ্ন: আমার বয়স ২৩ বছর, মেডিক্যাল স্টুডেন্ট। সহপাঠীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলাম। আমাদের বিয়ে করার কথা ছিল পড়াশোনা শেষ করে। এর মধ্যে আমি প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়ি। তার ফ্যামিলির সাথে কথা বললে তারা বিয়েতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন আমার বয়ফ্রেন্ড বলে অ্যাবর্সন করে ফেলতে, কিছুদিন পর সময় নিয়ে সে তার পরিবারকে বোঝাবে। যদিও আমার বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা ছিল, তারপরেও চিকিৎসকের পরামর্শ না মেনে আমি  অ্যাবর্সন করি। কিন্তু এরপরই বদলে যায় আমার বয়ফ্রেন্ডের আচরণ। সে বলে তার পরিবার অন্য মেয়ে ঠিক করেছে, তাকেই বিয়ে করবে। আমি মানসিকভাবে একদম ভেঙে পড়েছি। পড়াশোনা করতে পারছি না, রাতে ঘুমাতে পারছি না। সারাক্ষণ শুধু কান্নাকাটি করি। আমি কীভাবে নিজেকে সামলাবো?

উত্তর: আপনি বর্তমানে খুব বড় ধরনের মানসিক ট্রমার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় আপনাকে কোনও মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে বলবো কারণ এই মুহূর্তে আপনার কিছু ঔষধ প্রয়োজন হবে। একা একা এই আঘাত সামলানো আপনার জন্য একটু কঠিন হতে পারে। তবে আপনার মানসিক দৃঢ়তা অনেক বেশি, আপনি অত্যন্ত সৎ এবং সাহসী প্রকৃতির মানুষ। জীবনে এ ধরনের বিপর্য়ের মুখোমুখি হলেও আপনি দৃঢ়তার সাথে সেসব মোকাবেলা করতে পারবেন। মেডিটেশন, ব্রিদিং এক্সারসাইজ, ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ এগুলো আপনার মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে। আমাদের অতীতের ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অভিজ্ঞতা আমাদেরকে অধিকতর কষ্টসহিষ্ণু করে তোলে ফলে আমরা ভবিষ্যৎ জীবনকে অধিকতর দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করতে পারি। জীবনে কঠিন পরিস্থিতি উদ্ভব হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমরা সেসব পরিস্থিতি কতটা স্পোর্টস অ্যাটিচুড নিয়ে, চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মানসিকতার মাধ্যমে কতটুকু মোকাবেলা করতে পারি, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন: আমার বয়স ৩২ বছর, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছি। প্রেম করে বিয়ে করেছি ২ বছর আগে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে ভালো নেই। আমার স্ত্রী শুধু অন্যের পরামর্শ শোনে। আমাদের দাম্পত্য জীবনের সব কথা গিয়ে বন্ধুদের বলে কিংবা মাকে বলে। নিজেদের কোনও কথা কাটাকাটি হলে সেটা সবাই জেনে যায়। অনেক বুঝিয়েও এই সমস্যার সমাধান করতে পারিনি। কী করবো?

উত্তর: আপনার স্ত্রীর স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য যদি এমনই হয় তাহলে এটি থেকে উনাকে বের করা প্রায় অসম্ভব একটি বিষয়। এ ব্যপারে আপনাকেই সমঝোতায় আসতে হবে। যেহেতু সে দাম্পত্য জীবনের গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারে না, তার সাথে আপনাকে প্রয়োজনীয় গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে। এটা যদি তিনি মেনে না নিতে পারেন, তাহলে ঠান্ডা মাথায় বারবার উনাকে স্মরণ করিয়ে দেবেন যে যেহেতু সে দাম্পত্য জীবনের গোপনীয়তা বজায় রাখতে অক্ষম, সেহেতু তার সাথে সংসার করতে গেলে সবকিছু (যেমন বিভিন্ন ঘটনা, আবেগ, ইত্যাদি) স্বাভাবিকভাবে শেয়ার করা আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। সুতরাং আপনার সাথে থাকতে হলে এগুলো মেনে নিয়েই তাকে থাকতে হবে। তাছাড়া আপনাকে নিজের সাথে বোঝাপড়া করতে হবে কতটুকু ছাড় দিয়ে আপনি আপনার স্ত্রীর এই বৈশিষ্ট্য মেনে নিয়ে সংসার করে যেতে পারবেন। তার প্রতি আপনার ভালোবাসার মাত্রা অত্যন্ত গভীর হলেই সেটা আপনার পক্ষে সম্ভব। বয়সের সাথে সাথে আপনার স্ত্রীর আচরণে পরিমিতিবোধ বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে। বাকিটা নির্ভর করছে আপনার ধৈর্য্য, আন্তরিকতা ও বিচক্ষণতার উপর।