বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার প্রত্যয় পেন বাংলাদেশের

বার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখছেন পেন বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ মনজুরুল ইসলামনতুন উদ্যমে ও নতুন পরিকল্পনায় বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার প্রত্যয় নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো পেন বাংলাদেশের ৪৬তম সাধারণ সভা। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ধানমন্ডিস্থ ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের প্রধান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই বার্ষিক সাধারণ সভা।

সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন পেন বাংলাদেশের নির্বাহী উপদেষ্টা কথাসাহিত্যিক কাজী আনিস আহমেদ, সভাপতি কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আনিসুর রহমানসহ পেনের সহ-সভাপতিরা, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাধারণ সদস্যরা।

81079944_1039917213016355_6663284998285557760_nবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রথমেই বরণ করে নেওয়া হয় নতুন সদস্যদের। এ বছর নতুন সদস্য হিসেবে পেন বাংলাদেশে যোগ দিয়েছেন বিশিষ্ট্য শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক মোহিতুল আলম, কথাসাহিত্যিক হাইফেল হাশমী, অনুবাদক জ্যাকি কবির, কথাসাহিত্যিক পাঁপড়ি রহমান।

পেন বাংলাদেশের নির্বাহী উপদেষ্টা কথাসাহিত্যিক কাজী আনিস আহমেদ বলেন, ‘এ বছরই এই সংগঠনটি বাংলাদেশের একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধন অর্জন করেছে। সার্বিকভাবে বাংলাদেশে আইনিভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং পেন ইন্টারন্যাশনাল স্বীকৃত। এর মাধ্যমে বিশ্ব প্ল্যাটফর্মে বাংলাসাহিত্য ও বাংলার মানুষকে তুলে ধরার পথটি আরও সুগম হলো।’

কাজী আনিস আহমেদ উল্লেখ করেন, ‘চার দশকের পুরনো একটি সংগঠনটি স্বাধীনতার পর থেকেই কার্যক্রম শুরু করেছিল। পেন বাংলাদেশের ক্রান্তিকালে এর দায়িত্ব গ্রহণ করেন কথাসাহিত্যিক ফরিদা হোসেন, তবে নানা ঘাত-প্রতিঘাতে এর কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছিল। নতুন কমিটি ইতোমধ্যে পেন বাংলাদেশকে সচল করতে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন পেন বাংলাদেশ প্রাসঙ্গিকভাবে এর সদস্যদের নানা কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করবে।

পেন বাংলাদেশের নির্বাহী উপদেষ্টা আর বলেন, ‘২০২০ সাল হবে পেন বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর বছর। দেশে বিদেশে এর সদস্যদের নানাবিধ সম্পৃক্ততা প্রতিষ্ঠিত হবে।’ তিনি নবাগত সদস্য, পেনের নির্বাহী কমিটির সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

এই আয়োজনে আরও বক্তব্য রাখেন পেন বাংলাদেশের সভাপতি কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পেনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে গত এক বছরে নানা সময় বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে, এরপরও উত্তরোত্তর এর সদস্য সংখ্যা বাড়ছে এবং বছরজুড়ে নানা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।’ এভাবেই এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

বক্তব্য শেষে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম পেনের সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। 

এই আয়োজনে পেন বাংলাদেশের কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বার্ষিক আয়-ব্যয়ের খতিয়ান প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন পেন পরিচালিত বছরব্যাপী কার্যক্রম তুলে ধরেন এবং সম্ভাব্য কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। সাধারণ সম্পাদক জানান, পেন বাংলাদেশ যে লোগোটি ব্যবহার করছে তাতে বাংলা ছাড়াও বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ণমালা তুলে ধরা হয়েছে। বাংলার সংস্কৃতিকে সর্বাত্মকভাবে প্রতিষ্ঠিত করাই পেন বাংলাদেশের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হবে।

বিশেষ সম্মাননা গ্রহণ করছেন পেন বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি ফরিদা হোসেনএ বছর পেন বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি ফরিদা হোসেনকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। ১৩ বছর দায়িত্ব পালন করা পেন বাংলাদেশের সাবেক এই সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমি অনেকদিন থেকেই পেনের দায়িত্ব কারও হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। বর্তমান কমিটি আমার সেই চেষ্টাকে সফল করেছে। পেনের বর্তমান কার্যক্রম আমাকে মুগ্ধ করেছে।’ তিনি পেন বাংলাদেশকে লেখকদের জন্য লেখককুঞ্জ তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণের অনুরোধ জানান। একইসঙ্গে পেন ইন্টারন্যাশনালের সহায়তাক্রমে চলচ্চিত্র নির্মানের মতো কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।