মনোরঞ্জন ব্যাপারীর সাক্ষাৎকার (শেষ পর্ব)

nonameমনোরঞ্জন ব্যাপারীর জন্ম বরিশালে। দেশভাগের পর পরিবারসহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। জীবনের বিভিন্ন সময়ে অর্থের প্রয়োজনে বিভিন্ন রকমের কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কলকাতার মুকুন্দপুরে একটি বধির স্কুলে রান্নার কাজ করেছেন, চালিয়েছেন রিকশাও, কিন্তু সেসব টানাপোড়েন অতিক্রম করে সাম্প্রতিককালের বাংলার দলিত জীবনের অন্যতম কাহিনিকার তিনি।

তৃতীয় পর্বের পর থেকে

মুশফিকুর রহমান : সেই জায়গা থেকে আমাদের ভারতবর্ষে যারা সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শের তারা ব্যর্থ কিনা, আপনি কী মনে করেন?

মনোরঞ্জন ব্যাপারী : আমরা ব্যর্থ বলেই তো, ওরা সফল, আমরা তো ব্যর্থ, ব্যর্থ তো অবশ্যই। হলো কী বা হয়েছে কী, আমি যেটা দেখেছি লিখেছিও সেটাই। একটু আগেই বলছিলাম যে, কিউবার মত একটা ছোট্ট দেশ আমেরিকার মত দেশের বিরুদ্ধে লড়াই করে জিতলো, ওর কী অস্ত্র ছিলো? আমেরিকার তুলনায় শক্তিশালী অস্ত্র কী ছিল? ওর কাছে ছিলো আদর্শ, আর কিছুই ছিল না। ওই সব ঘটনাক্রম পুঁজিবাদীরা আমদের থেকে বেশি পড়াশোনা করছে। আমরা যত না পড়ি, তার থেকে বেশি পড়ে ওরা। ওরা বুঝেছে যে, বোম মেরে কোনো আদর্শকে শেষ করা যায় না, বরং আরো শক্তিশালী হয়ে যায়। তাহলে কী করতে হবে, নিজেদের পেটোয়া লোক ওই রাজনীতির মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে হবে, যেন ভেতর থেকে সে ‘খোকলা’ করে। সিপিএম পার্টির শেষ সময়ের পরিণতি যদি তুমি দেখো, তাহলে দেখবে তারা পুঁজিবাদীদের হয়ে কথা বলেছে। ছোটোবেলায় বলা হয়েছিলো যে, আমাদের যে আশিটা পরিবার ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় শত্রু, তার মধ্যে টাটার নাম সবথেকে আগে থাকতো। সেই টাটাকে কমরেড বলা শুরু করে দেওয়া হলো। এই যে কমরেড বলা লোকটা, পুঁজিবাদীদের দ্বারা প্রভাবিত, বিকৃত পেটোয়া। কিন্তু তারা মার্ক্সবাদ অনেক বেশি পড়েছে, খুব তাত্ত্বিক-ফাত্ত্বিক, মার্ক্স এই বলেছে, ওই বলেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। হ্যাঁ, শিল্প চাই, কমিউনিস্ট পার্টির কাজ শিল্প করা না, কমিউনিস্ট পার্টির কাজ বিপ্লব করা। শিল্প আমি করতে পারি, যদিও আমার বিপ্লবের কাজকে তা এগিয়ে দেয়। আর যদি শিল্প আমাকে পিছিয়ে দেয় তাহলে সেটা আমি করব না, বিপ্লবটাই আমার প্রধান লক্ষ্য হবে। অর্থাৎ ৩৪ বছর তুমি ক্ষমতায় ছিলে, তোমার সংগঠন আছে, একটা গুপ্ত সংগঠন হবে তোমার। আজ তুমি বিজিপিকে পশ্চিমবঙ্গ বা ভারত থেকে হারিয়ে দাও ভোটে, বিলুপ্ত করে দাও, মুছে দাও, কিন্তু আরএসএস পারবে কি? পারবে না। তারমানে একটা গুপ্ত সংগঠন ওরা এমনভাবে গড়েছে যেখানে মতাদার্শটা বেশ শক্ত। আমি যখন ছত্রিশগড়ে ছিলাম, আদিবাসীরা মিছিল বের করেছে, সংরক্ষণের বিরুদ্ধে। কিন্তু সংরক্ষণ দ্বারা তো তারাই লাভবান, লেখাপড়া করে চাকুরী পাবে। কিন্তু তারা সংরক্ষণ চায় না, তারা মাধ্যমিক স্কুলে এসে আন্দোলন করেছে। কারণ তাদের মন-মস্তিস্ককে এমনভাবেই দূষিত করা হয়েছে যে তারা ওদের পক্ষে করে চলে গিয়েছে। এখন সংরক্ষণ ভাল নাকি মন্দ সে প্রসঙ্গে পরে যাবো। ১৯২৫-এ আরএসএস এর প্রতিষ্ঠা, হিন্দু মহাসেনা ১৯১৫ সালে, ১৯০৬-এ মুসলিম লীগ। মানে ২০২৫-এ আরএসএস-এর ১০০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই ১০০ বছরে ওরা যে নিরালসভাবে গ্রাম-গঞ্জ গিয়ে মানুষের মধ্যে মিশে থেকে বনবাসী কল্যাণ আশ্রম, আদিবাসী কল্যাণ আশ্রম, অহল্যা বাহিনী, দুর্গা বাহিনী, অমুক বাহিনী, তমুক বাহিনী আলাদা আলাদা নামে রেজিস্ট্রেশন করে আলাদা আলাদাভাবে কাজ করে গেলো। আরএসএস ব্যান হয়ে গেলেও ওগুলো ব্যান হবে না, ওদের কাজ ওরা চালিয়ে যেতে পারবে। আমাদের কর্মীদের আমরা এভাবে নিযুক্ত করতে পারলাম না। যেই ক্ষমতায় আমাদের দল এলো, তারা দেখলো আরে, যেই পুলিশটা পাছায় ডাণ্ডা মেরে কালকে জেলে ঢুকাতো আজকে সেলুট মারছে! এসি গাড়িতে চড়ছি, এসি বাড়িতে থাকছি! এখন সে ভাবলো যে, বিপ্লব হলে তো আমি অনেক কিছু হারাবো কিন্তু বিপ্লব না হলে তো আমি এগুলো পাবো। তাহলে বিপ্লব আমার কী দরকার? তারা আর বিপ্লবের নাম মুখেই নিলো না। এইখানটাতেই আমাদের পরাজয় শুরু হলো এবং ওদের যে পেটোয়া লোকজন, এই পর্বে প্রচুর পরিমানে আমদের মধ্যে ঢুকে গেলো। তারপর তো আমাদের ‘টাটা জিন্দাবাদ’ বা ‘টাটা কমরেড’ বলতে আমদের বাঁধবার কথাও নয়। এবার যখন বিজিপি এলো, তাদের কাছে কিন্তু বিজিপি আর সিপিএম পার্থক্য কিছু নেই। দুটোই হচ্ছে ক্ষমতা-কেন্দ্রিক। বিজিপি আর সিপিএম দুটোই ক্ষমতা-কেন্দ্রিক। এই ক্ষমতার কেন্দ্রটা নড়বড়ে হয়ে গেছে আমি ওখানে চলে গেলে, আমি ওই ক্ষমতা কেন্দ্রের সহয়তা পেলে আমার মক্ষলাভ হবে। কিন্তু আমি যদি মার্ক্সবাদটা বুঝতাম, আমি যদি সেই দর্শনটাকে বুঝতাম তাহলে আমি প্রাণ দিতাম কিন্তু আমি বিজিপি হতে পারতাম না, এই জায়গাটা আমরা তৈরি করিনি।

জনৈক : এই যে বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে যে সরকার ও দল ক্ষমতায় আছেন, তারা কিন্তু সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী না এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষশক্তি। এবং আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা উনি এবং তার রাজনীতি অসাম্প্রদায়িক। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা তেমন সাংস্কৃতিক অগ্রগতির দিকে যাচ্ছি না। বরং বোধকরি সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা বাড়ছে, আর এভাবে চলতে থাকলে একদিন হয়তো বিজেপির মতো মৌলবাদী একটি দল বাংলাদেশেও তৈরি হতেই পারে। কারণ আদর্শিকভাবে আমরাও বলিষ্ঠতা দেখাতে পারছি কি? হয়ত না। আপনি কি সেই একই রকম যোগসূত্র দেখতে পাচ্ছেন না?

মনোরঞ্জন ব্যাপারী : কিছু করার নেই। এই যে একটু আগেই বলছিলাম, মানুষকে কী বার্তা দিতে চাই সেগুলো নিয়ে। আমার কথা হচ্ছে, আমাদের যা করার ছিলো আমরা শেষ করে ফেলেছি। আমাদের যখন তোমাদের মত বয়স ছিলো আমরা লড়েছিলাম।

পৃথিবীটাকে শিশুর বাসযোগ্য বানাবো কিন্তু লড়তে লড়তে লামরা পারিনি। এখন আমাদের অন্তিম সময়। এবার তোমরা যদি মনে করো পৃথিবী বাসযোগ্য, তাহলে বাস করো। আমরা তো চলেছি! কবরে এক পা আমাদের, চিতায় আরেক পা। তোমরা যদি মনে করো, এই অবস্থায় শ্বাস নিতে পারছি না, লড়ো। লড়লে তুমি জিতবেই এমন কোন কথা নেই, কিন্তু অন্তত সন্তুষ্টটি হবে যে, আমি অন্যায় ব্যবস্থাটাকে মাথা পেতে মেনে নেইনি। আমার ক্ষুদ্র শক্তি তবু আমি লড়েছি এর বিরুদ্ধে। কানাইয়া কুমারের একটা গল্প আছে, আগুন লেগে গেছে, পাখি ঠোঁটে করে এনে জল দিচ্ছে, তাই দেখে একটা বাঘ পাখিকে বলছে, ‘আরে তোর ঠোটের এইটুক জলে কী হবে? পারবি নেভাতে? পাখি তখন বলছে, না, আগুন তো একদিন নিভবেই কিন্তু ইতিহাস যেদিন লেখা হবে তখন লেখা হবে যে আমি নিভাবার দলে ছিলাম আর তুমি জ্বালাবার দলে ছিলে।

আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, আমার কিছু ছিলো না, দু’লাইন আমি লিখতে পেরেছি তাই আমি লিখেছি, আমি আগুন নেভাবার দলে ছিলাম। অনেক অফার আমার এসেছে। আজও এসেছে কাল এসেছে। ছত্রিশগড়ে চাকরি ছেড়ে চলে এসেছিলাম, আমি সরকারি চাকরি করি, সরকারের কাজ করবো।

সরকার কংগ্রেসের বলে আমি কংগ্রেস পার্টির মিছিলে যাবো না, ভোটের প্রচারে যাবো না। বলল, তাহলে চাকরি ছেড়ে দাও। আমি বললাম, ছেড়ে দেবো চাকুরী।

মুশফিকুর রহমান : কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, সমাজতান্ত্রিক মতাবলম্বীদের বিপ্লবের আগুনের চেয়ে সিগারেটের মুখে আগুন জ্বালানোতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করতে দেখা যায়।

মনোরঞ্জন ব্যাপারী : ভ্রান্তি ত্রুটি তো আছেই, তুমি কেন দেখছ সেটা? মানুষকে তো দূষিত করে দেওয়া হয়েছে। সেইটাকে কি আমরা সমালোচনা করতে থাকবো নাকি আমরা সেটাকে সংশোধন করার জন্য কিছু অন্তত নিজেদের তরফ থেকে চেষ্টা করব। আমার তরফ থেকে কিছু আমি চেষ্টা করি কিছু তুমি চেষ্টা করো, তাহলেই তো কিছু হবে, তাই না? আমি চেষ্টা করেছি আমার আদর্শকে আকড়ে রাখতে, আমি বিরানি-পোলাও খেতে আসিনি। আমি আমার সমাজের মানুষের যন্ত্রণার কথা বলতে এসেছি। আমি আমার গামছা পরা সমাজের কথা বলতে চেয়েছি, বলে বেড়াচ্ছি।

মুশফিকুর রহমান : যাক, টাই-পরা সমাজ আর গামছার সমাজের মধ্যে বিভাজন থাকলে পানির মধ্যে কোনো বিভাজন নেই।

মনোরঞ্জন ব্যাপারী : একদম আছে, একদম আছে, আমার সমাজের লোক নদী বা টিউবওয়েলের পানি খায়। আর বাবু সমাজ এটার (একটা পানির বোতল দেখিয়ে)।

মুশফিকুর রহমান : হ্যাঁ, তবে যারা বোতলের জল খাচ্ছে তারাও কি আবার কলের জল খায় না?

মনোরঞ্জন ব্যাপারী : সেগুলো দায়ে পড়লে খায়।

মুশফিকুর রহমান : হা হা হা, তবে কি আপনিও দায়ে পড়ে বোতলের জল খাচ্ছেন?

মনোরঞ্জন ব্যাপারী : হ্যাঁ, তা বলা যায়!

মুশফিকুর রহমান : আচ্ছা এমনও তো হতে পারে যে, জনগন দায়ে পড়েই পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে?

মনোরঞ্জন ব্যাপারী : জনগনকে বাধ্য করা হচ্ছে, দায় সে তো নিশ্চয়ই আছে। পুঁজিবাদ ধাক্কা দিয়ে বাধ্য করছে তাকে। কি করার থাকে তার!

মুশফিকুর রহমান : হা হা হা, যেমনটা এই যে, আজ আপনি বাধ্য হলেন।

মনোরঞ্জন ব্যাপারী : পুঁজিবাদী ব্যবস্থা তো অক্টোপাসের মতো আটটি পা দিয়ে আটকে রেখেছে। বিভিন্নভাবে ধরে রেখেছে, মানুষ তার থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। ছটফটানি আছে, চেষ্টা আছে, কিন্তু মানুষ বের হতে পারছে না, এখন সে কী করবে। ধর্ম বলো, রাজনীতি বলো, সমাজনীতি বলো, সব কিছুর পরতে পরতে পুঁজিবাদ আঁটি গেড়ে বসে আছে। আমরা তো সেই পুঁজিবাদ থেকে মুক্তি পেতে পারছি না। আমি না খাওয়া মানুষের কথা লিখেছি, আমার বই আমাজন ছাপছে, কর্পোরেট হাউজ। চোখের জলকে সে বিক্রি করে পুঁজি বানাবে। কী করব আমি! আটকাতে তো পারিনি। শত শত ‘বাতাসে বারুদের গন্ধ’ যে বইটা আমার দেশ-দুনিয়া কাঁপাচ্ছে, সেটা কাদের নিয়ে লেখা, নকশাল আন্দোলন নিয়ে লেখা, কর্পোরেট হাউজ কি নকশাল আন্দোলনের সাপোর্ট হতে পারে? কিন্তু তারা বইটা ছেপেছে, কারণ হাজার হাজার কপি বিক্রি হচ্ছে। তারা লাভের অংশ ঘরে তুলছে।

মুশফিকুর রহমান আপনিও কি তাদের সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত হচ্ছেন না? তারা খবর বিক্রি করে আর আপনি এখন খবরের ইস্যু। তাহলে…

মনোরঞ্জন ব্যাপারী : হ্যাঁ। অবশ্যই, আমি স্বীকার করছি।

মুশফিকুর রহমান : এখন কথা হচ্ছে কেউই তো বের হতে পারছেন না। বেরুতে চান কীভাবে? এর পথ কী?

মনোরঞ্জন ব্যাপারী : একটা ব্যাপার দেখো, আমি যদি পুঁজিবাদী কর্পোরেট হাউজের সঙ্গে হাত না মেলতাম, তাহলে এই যে বাংলাদেশের মানুষ আমাকে কি চিনতো? বা আমাজন ছেপেছে বলেই নকশাল বাড়ি আন্দোলনের ওপর লেখা বই আমেরিকায় বসে লোকজন পড়ছে। এর আগে কিন্তু তিনবার তিন জন প্রকাশক আরো ছিলো তখন কিন্তু কেউ এত হৈ-চৈ করেনি বইটা নিয়ে কেউ চর্চা করেনি, কিন্তু আমাজন ছাপার পর যখন ভারতবর্ষসহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে গেল, বড় বড় পুরস্কারের তালিকায় যখন নাম আসতে লাগল তখন তারাই তাদের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঢুকিয়ে দিলো। তখন লোক পড়ছে কীসের কথা? নকশাল আন্দোলনের কথা, ওই পুঁজিবাদী দেশে বসেই লোক পড়ছে নকশাল আন্দোলনের কথা। আর আমাজন বিক্রি করে সে কোটিপতি থেকে আরো কোটিপতি হচ্ছে। আমার স্বার্থটা হচ্ছে এখানে এই যে, এ কথাটা তো আমি লন্ডনের লোকদের জানাতে পারতাম না, এই সিস্টেমের মাধ্যমে পারছি।

মুশফিকুর রহমান : মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন যে, আপনি সমাজতন্ত্রের একজন লোক এবং তাদের সঙ্গে (পুঁজিবাদীদের) হাত মেলাচ্ছেন মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্যে। মানে সোশ্যাল ইন্ড্রাস্ট্রি বা পুঁজিবাদ আপনাকে মানুষের কাছে নিয়ে যাচ্ছে।

মনোরঞ্জন ব্যাপারী : এইবার মানুষ বুঝুক, আমি তো ওই সংস্থার কাছে যেতে চাইনি। বাঙালি যারা আমার প্রকাশক, তারা আমাকে রয়্যালটি দিতো না। বিক্রি করতো হাজার বই, বলতো তিনশো। ঐ যে তিনশো ছেপেছিলাম, তার মধ্যে তিরিশখানা এখনো আছে, বছর বছর চলছে ৩০ খানা, এখনো আছে। যারা বইয়ের ওপর সার্ভে করে, তারা বলছে আমাকে তোমার অন্তত ১০-১২ হাজার বই মার্কেটে আছে। আর আমার প্রকাশক বলছে, গতবারে ৫০০ আর এবারে ৫০০ ছেপেছি। তাহলে শুধু ওই ৫০০ রয়্যালটি দেবে, কারণ আমার পক্ষে তো জানা সম্ভব না যে, ৫০০ নাকি ৫০০০ ছেপেছে। ঐ বইয়ের দোকানের কর্মচারী আমাকে চেপে ধরেছে, দাদা! আমাদের একটু খায়াও-টাওয়াও, তোমার হাজার হাজার বই বেঁচে দিলাম। আমি বললাম, বই দেখলাম ৫০০, তুমি হাজার হাজার পেলে কোথায়!

মুশফিকুর রহমান : হা হা হা! তাহলে দাদা আমরা যারা এপার বাঙালায় বই বেঁচে দিলাম তারাই তো ভালো।

মনোরঞ্জন ব্যাপারী : একদম ভালো। ভীষণ ভালো। আছে ভালো, দু’একজন। একদম নেই তা না, আছে অনেকে ভালো! যেমন, দে’জ পাবলিশিং, ওরা যদি বলে আমি ৫০০ ছেপেছি, তাহলে কিন্তু সে ৫০০ রয়্যালটির নয়া পয়সায় আমি পাবই।

আরো পড়ুন : মনোরঞ্জন ব্যাপারীর সাক্ষাৎকার, পর্ব : তিন

(সাক্ষাৎকারটি ঢাকায় অনুষ্ঠিত Dhaka Lit Fest 2019-এর ২য় দিন গ্রহণ করা হয়েছে।)