শান্তনু চৌধুরীর ‘নারীসঙ্গ’




nonameঅমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৬ উপলক্ষে প্রকাশিত হলো শান্তনু চৌধুরীর উপন্যাস ‘নারীসঙ্গ’। বইটি পাওয়া যাচ্ছে ‘উৎস প্রকাশন’-এর স্টলে। প্রচ্ছদ এঁকেছেন প্রবাসী শিল্পী জাহেদুর রহমান রবিন। মূল্য ১৫০ টাকা।
উপন্যাসের শুরুতে চমক দিতে চেয়েছেন শান্তনু চৌধুরী। লিখেছেন, ‘তর শরীর, নকুরের দোকানের বাদাম দেয়া সুজির মতো, পরোটা দিয়ে খেতে দারুণ লাগে।’ এই লাইনটি পড়ে পাঠক সহজেই ধরে নেবে ভেতরে পাতায় পাতায় বনানী আবহে ছুঁয়ে যাবে চিনচিনে প্রেমের বাতাস। রঙ লাগবে শরীরের ভাঁজে ভাঁজে। কিন্তু পুরোটাই কি তাই নাকি তার চেয়ে বেশি কিছু? মেয়েদের শরীরের ঘ্রাণ শুধু কি পাগল করে বেড়াবে গল্পের নায়ক বদিউল আলম ওরফে বদ আলম ওরফে পাভেলকে? নাকি সাথে সাথে নিয়ে যাবে পাঠককেও?’
পুরো উপন্যাসটিতে লেখক এমন চমক আরো দিতে চেয়েছেন, যেমন গল্পেক একজন নায়িকার ফেরিওয়ালার কাছ থেকে চুরি কেনার দৃশ্যে বর্ণণা করেছেন এভাবে, ‘ফেরিওয়ালাদের কাবু করার একটা বিশেষ ভঙ্গিমা আছে কুলসুমের। এটা বেশ কয়েকদিন ভাবার পর বের করতে পারে আলম। ফেরিওয়ালার সামনে গিয়ে অন্যান্য ক্রেতার মতো আলগা হয়ে বসে চুড়ি দেখে, শাড়ি দেখে আর কোন ফাঁকে যে নিজের পরনের শাড়িটা সরে গিয়ে ঢেকে রাখা স্তনকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে তা যেন দেখেও দেখে না কুলসুম। সে বুঝতে পারে ফেরিওয়ালার চোখ এখন পসরার চেয়ে তার বুকের দিকে। মাঝে মাঝে আরো সস্তায় জিনিস নেয়া বা কারো মাধ্যমে চুরি করার ইচ্ছে থাকলেও বুকের গিরিখাতের লোভ দেখাতেও ছাড়ে না কুলসুম।’
শুধু শরীরি বর্ণণা না, নারী স্বাধীনতা, নারীদের নিয়ে সমাজের দৃশ্যভঙ্গি বা নারী লোলুপতার অনেক চিত্রও তুলে ধরেছেন লেখক। কোথায় নিরাপদ নারীরা, না রাস্তায় না ঘরে? কোথাও না। তাই আমাদের আগে ঠিক করতে হবে আমরা কি খোলা জানালা চাই, নাকি পুরো আকাশ চাই, সামাজিক অধিকার আদায়ের আন্দোলন করবো নাকি নিজের চেনা পরিসরটুকুর অধিকার আদায় আমাদের লক্ষ্য। আমরা কি সাহসী হয়ে উঠবো নাকি নিছক ভীতু হয়ে বাস্তবের বিছানায় পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়বো?’
শান্তনু চৌধুরী উপন্যাস প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘নারী, একজন মানুষের জীবনে কতো ধারা-উপধারায় নদীর মতো প্রবাহিত হতে পারে, তারই একটা ছোট আখ্যান এটি। এই নারীরা যেমন আমাদের সমাজের, তার কাছে যাওয়া, কাছে পাওয়ার ব্যাকুলতা বা লোলুপতা নিয়ে যারা বসে আছে তারাও আমাদের কাছেরই মানুষ। উপন্যাসটি এই মানুষগুলোর পরিচয় তুলে ধরার প্রয়াস মাত্র। এই বইয়ে বেশ কিছু বার্তা রয়েছে আমাদের সময় ও সমাজের জন্য।’