তিনটি কবিতা

noname

আয়ুর মহিমা

মানুষ দেখতে দেখতে পথ আলাদা হয়ে গেছে। সরষে খেতের হলুদ বিষাদ খেয়ে ফেলছে ওই ছাতিম ফুল। পা ও পাত্র মিশে গেছে ঘাসবন্দি নদীর ভেতর। ওহ আমাদের সবুজ বিকেল, এই দেখো সূর্য গিলে খাচ্ছে চতুর অজগর...

পা থেমে যেতে যেতে জেগে উঠছে কোনো সোনালি গ্রাম। নিষেধের ঢেঁকিতে একা একা মুখ গুঁজে চেয়ে নিই শস্যের ঘ্রাণ...

মানুষ ছলনাপ্রিয়, লালশাকে হাত মেখে দেখিয়ে যায় খুনের ভয়। কেবলই বেলফুলের আশ্বাস—আমাদের বিশ্বাসে ধরিয়ে দেয় চিড়। যাপনসমুদ্রে লাফ মারে মুদ্রা-ইলিশ। বলো তো, কোন টেবিলে ফালা ফালা হয় কাছিমের আয়ুর মহিমা?

 

হনন-মুহূর্ত

হননমুখে দাঁড়িয়ে সত্য ছাড়া কিছু বলে না পাগল। উচ্চাশার মোহরগুলো মা ফাতেমার পায়ে দিয়ে ছালা-গায়ে কাটিয়ে দিয়েছে জনম। খ্যাতির লালসাকে কেটে কেটে বানিয়েছে তরমুজ ফালি। অশ্রু তার মিলিয়েছে দূর কোনো পাহাড়ের কুয়াশার ভেতর। এ জগৎ দুর্গন্ধময়! মায়ার শরীর—সেও তো রূপান্তরে বিনাশের সিঁড়ি। হরণের উল্টো পিঠে প্রেম, মুচকি হেসে শিখিয়েছে বিনয়ের ভাঁজ। তাই পাগল বিনয়ী খুব—হাসিমুখে খুঁজছে হননের পথ...

 

আত্মহত্যার আগে পাগলটি মাটিতে পুঁতেছিল একটি গোলাপের গাছ...

 

পাগল-লোক

পাগল এসে লোকটিকে বলল : ‘কাকা এই কাটা হাত লইয়া আমি কী করিব! আপনি লন। মুরগার বদলে আজ হাত লইয়া যান। ভালো মাল ও মসলা দিয়া রান্না কইরা খান।’ একথা শুনে লোকটির চোখ মাথায় উঠল। পা দুটো উঠে এলো চোখের ডেরায়। পাগলটা জিজ্ঞেস করল : ‘আপনের সাইকেল কই? টায়ার কি লিক হইয়া গেছে? কাকলি বাড়িত আছে, আজ তারে কলা দেন নাই?’ লোকটি এবার ফ্রিজ হয়ে গেল। যেন বাষ্পহীন নিথর দেহ। ‘ধুর মিয়া আমি যাইগা’ বলে পাগলটা মিশে গেল মানুষের ভিড়ে।

শুধু কাটা হাত ঝুলে রইল রিকশার হাতলে।