বেজান মাতুরের কবিতা

বেজান মাতুর আধুনিক তুর্কি কবিতার উজ্জ্বল নাম। তিনি তুরস্কের কাহমানমারাশ অঞ্চলে এক কুর্দি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার কবিতায় সাধারণ জীবন-যাপন থেকে শুরু করে রাজনীতি, তুরস্কের হাজার বছরের সুফি পরম্পরার ঐতিহ্য, ধার্মিক-অধার্মিক, ইসলাম, পৌত্তলিকতা ইত্যাদি প্রতীকিরূপে উপস্থিত রয়েছে। কুর্দি-আরমেনীয় সমস্যা নিয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। এই দুটো কবিতা মূল তুর্কি থেকে হিন্দিতে অনুবাদ করেছেন দিল্লির জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুর্কি ভাষার ছাত্র নিশান্ত কৌশিক।noname

 

শোকের সময়

সে এমন এক জায়গার কথা বলে

যা কখনো ছিল না—

না কোনো ভাষা, আলাপ এমনকি শব্দও!

 

জগতকে জানার দায়িত্ব কাঁধে নিলে

কে তবে বোঝাবে মৃত্যু

কে তবে বোঝবে কীভাবে শ্বাস নেয় পাহাড়?

তরতরিয়ে গড়িয়ে পড়া অন্ধকারকে

কে বোঝাবে?

কী-বা গেঁথে আছে ছোট্ট শিশুর স্বপ্নে?

কে জানে?

 

কোনো প্রাচীন গল্পে আটকে থাকা পাখি

আমার সমস্ত শরীর জুড়ে ঝাপটে যাচ্ছে তার পাখা

অথচ শরীর নাকি পাথরের

বলে পুরনো লোকেরা

 

এটা ঠিক যে, আমি এক বিলাপী

পাহাড়ের ওই পাড়ে

যখন অন্ধকার নেমে আসে

যার কথা মনে পড়ে, মুখ ভেসে ওঠে

আর দুঃখভরা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে

 

যদি এটা কোনো শোকের সময় হয়ে থাকে বন্ধুরা

তাহলে কান্না এখনো শুরু হয়নি।

ছায়া

বেগুনি পাহাড়ের মখমলে ছায়া—

বিস্তৃতি, উপত্যকার গান—আর কিছু নেই এখন

আমার দুঃখী হৃদয়, ফিরে যাচ্ছি

নিজের ভূমিতে—নিজের শিকড়ে দিকে

নিজের জ্ঞাতি আর বিজয়ের ইতিহাসে একা

 

এই পাহাড়—যার সঙ্গে গেঁথে আছে

অতীতের সব দুঃখ আর উদাসীনতা

তার ইতিহাস আমাদের নয়।