দুটি কবিতা

noname

এখনই জাগার সময়

ভাল থাকার আশায় একদা গ্রাম ছেড়ে শহরে ভিড়ে;

কোলে-কাঁখে বাচ্চা সংসারের সমস্তটুকু পোঁটলায় ভরে,

রোদ বৃষ্টি মাথায় করে অভুক্ত তাঁহারা হাইওয়ে ধরে;

বিপন্নতার নতুন মিছিল চলে উল্টো মুখে, এবারে—

শহর থেকে গ্রামের দিকে, শয়ে শয়ে কিলোমিটার হাঁটে,

করোনার থাবার আগে অনেকেই তাঁহারা মারা পড়ে।

শতকে শতকে দুনিয়ার দেশে দেশে বিপন্ন মানুষ;

ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে, প্রবাদটায় ভুল নেই কোনো।

তাহাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে দেয়ালের নাম বঞ্চনা।

বিপন্ন তাঁহাদের মিছিল, বিপদ শিকড় ধরে নাড়ে।

এ তো মহামারী নয়, মানুষ হবার দারুণ সুযোগ।

দুনিয়ার যুবকগণ ওঠো, জাগো, এখনই তো জাগার সময়;

‘ল্যাটার রিলিফ ইজ নো রিলিফ’ (Later relief is no relief).

 

যে পথে জিরোবার জায়গা নাই

দিন পাল্টায় ‘খাঁচাবন্দি’ মানুষ ঘুরে বেড়ায় পশু ও পাখি;

কতটা পাল্টেছে বসে থাকা বেকার খতিয়ান লিখে রাখি।

জনপদে মুক্ত আমাদের মাস্ক বানায় জেলখানার কয়েদি;

সেগুলো বিলায় জনপদে অবহেলিত দলিত আমআদমি

 

রাতে ও দিনে রাজপথে পুলিশ মানুষকে জাগাতে গান ধরে।

অলস দুপুরে হাইজিন মেনে ছাপোষা মধ্যবিত্ত হাপিত্তেশ করে;

ব্যালকনিতে বসে বসে ফিঙে আর হাঁড়িচাচার হরবোলা শুনে;

বিজ্ঞান ওপরওয়ালা দোটানা ভাবনা বিভ্রান্ত প্রহর গুনে।

 

মখলুকাত পাখিডাক ভুলি, বনবাদাড় গিলি, জলাধার খাই,

দুমুঠো ভাত বেশি খাই দিনে দিনে মখলুকাতের আদার কেড়ে।

ফেসবুকে কুকুরের ছবিতে লাইক দিয়ে পাশুবাদি আদমি—

বাড়ির সামনের কুকুরটা না খেয়ে মরে কোন মন্বন্তরে?

 

প্রান্তিক তাঁহারা কাজ হারিয়ে তল্পিতল্পা নিয়ে শহর ছাড়ে;

করোনা আঁধারে ‘জিডিপি ইজ ওয়াকিং হোম’ হাইওয়ে ধরে।

 

পায়ের ওপর ভর করে শ’ শ’ মাইল পাড়ি দিতে তাঁহারা—

যে পথে খাবার নাই, পানি নাই, পথে জিরোবার জায়গা নাই|

 

ক্লান্ত পা আর চলে না। ‘এ জন্য তিনি দুঃখিত’। চলুন লাইক দেই।