দুটি ফরাসি কবিতা 

উপত্যকার ঘুমন্ত সৈনিক
আর্তুর র‍্যাঁবো

এটা একটা উপত্যকার সবুজাভ ঢাল, যেখানে নদী গান গাইছে,
উন্মত্তভাবে আঁকড়ে ধরে থাকা ঘাসের রুপালি গোছা;
যেখানে সূর্য গর্বিত পাহাড়ের উপর থেকে জ্বলছে;
এটা সূর্যের রশ্মিতে সফেন একটা ছোট উপত্যকা।

একজন তরুণ সৈনিক, মুখ খোলা, মাথা শিরস্ত্রাণহীন,
এবং তার ঘাড় নীল জলজ লতায় স্নান করছে,
সে ঘুমন্ত; সাদা মেঘের নিচে তার দেহ ঘাসের উপর ছড়ানো,
তার ফ্যাকাশে সবুজ বিছানায় রোদ্র বৃষ্টি ঝরছে।

তার পা-জোড়া কসমস ফুলের উপর পরে, সে ঘুমায়।
তার মুখে হাসি, একটা অসুস্থ শিশু যেভাবে হাসে!
সে একটা ঘুম দিয়ে নিচ্ছে;
প্রকৃতি তাকে উষ্ণভাবে দোলাচ্ছে; সে শীতল হয়ে গেছে।

সুগন্ধি আর তার নাকে কাঁপুনি দেয় না;
সে সূর্যের নিচে ঘুমন্ত, তার দুই হাত বুকের উপর,
সে শান্ত, তার বুকের বা-দিকে দুটি লাল গর্ত।

আর্তুর র‍্যাঁবো ১৮৫৪ সালের ২০ অক্টোবর ফ্রান্সের শার্লভিল-মেজিয়ের শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার অধিকাংশ কবিতাই কিশোর বয়সে লেখা।


একজন মানুষ
মিগুয়েল এঞ্জেল সেভিলা

একজন মানুষ হেঁটে আসছে, আমি জানি না তিনি গত যুদ্ধে বেঁচে যাওয়াদের একজন কি না!
লোকটা দেখতে একই সাথে বৃদ্ধ এবং তরুণ,
যেমনটা গত মহাযুদ্ধ সময় আর স্থানকে বিলুপ্ত করে দিয়েছিল।
সে ক্রমাগত টেসি-সুখ-ভির রাস্তায় হাঁটছে। 

আসলে, সে রুটি খুঁজে বেড়াচ্ছিল,
তার মাথা রক্তাক্ত, তার কাঁধে একটা মেশিনগান।
আমি যদি তার চলার ভঙ্গি অনুভব করি, তাহলে সে একজন কালো মানুষ।
আমি যদি তার লাল রক্ত অনুভব করি, তাহলে সে দুনিয়ার সব মানুষের মতো। 

সে বুকের ওপর একটা লাল ফুল গুঁজে রেখেছে,
ওরা তার হৃদয় নিশানা করে গুলি করেছিল, 
মাথায় মোড়ানো ব্যান্ডেজ ছাপিয়ে তার পুরো মাথা রক্তাক্ত হয়ে গেছে। 

সে হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়
সে বেশ ভালো অবস্থাতেই আছে 
সে রুটি খুঁজতে বেরিয়েছে।

মিগুয়েল এঞ্জেল সেভিলা ১৯৪৫ সালে আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া ফরাসি ভাষার কবি। ফরাসি নাগরিকত্ব পাওয়া এই সাহিত্যিক ১৯৭৬ সাল থেকে ফ্রান্সে বসবাস করছেন।