জাঁ ককতোর চারটি কবিতা

জাঁ ককতো একাধারে কবি, নাট্যকার, চিত্রনাট্যকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ঔপন্যাসিক। তিনি ফরাসি আভাঁ-গার্দ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।  উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে নাটক ‘La Machine infernale’, চলচ্চিত্র ‘La Belle et le bete’ ও ‘La Sang d’un Poete’ এবং উপন্যাস ‘Les Enfants terrible’।


ত্রিশে কবি

এখন আমি আমার জীবনের মাঝখানে
আমার সুন্দর বাড়িটার সামনে বসে আছি
দুই দিকের ল্যান্ডস্কেপ নিজেদের পুনরাবৃত্তি করে,
তবে একই মৌসুমের পুনরাবৃত্তি করতে ব্যর্থ তারা।

অল্পবয়সী রাই হরিণের মতো এই লাল পৃথিবীটার
শিং গজিয়ে উঠেছে লতাপাতায়। ঝুলিয়ে রাখা
অন্তর্বাস বাতাসে বার্তা দেয়, স্বাগত জানায় দিনকে।
সেখানে শীত আসে, আর সম্মানটা যে আমার পাওনা।

আমি বিশ্বাস করতে প্রস্তুত আছি তুমি আমাকে ভালোবাসো;
ভেনাস। কিন্তু আমি যদি তোমার ব্যাপারে না লিখি,
যদি তোমার কবিতায় আমার ঘর গড়ে না ওঠে
শূন্যতা গ্রাস করে আমি পড়ে যাব ছাদ থেকে।


নীলের রহস্য

নীলের রহস্য ভালোমতোই লুকিয়ে রাখা আছে। নীল অনেক দূর থেকে আসে। আসার পথে, এটা কঠিনতর হয়ে পাহাড়ে পরিণত হয়ে যায়। সিকাডা কাজ করে এটায়। পাখিরাও সাহায্য করে। বাস্তবে, কেউই জানে না আসলে। কেউ একজন প্রুশিয়ান ব্লুয়ের কথা বলে। নেপলসে আকাশ যখন দূরে সরে যেতে থাকে, তখন দেওয়ালের ফাটলে থাকে ভার্জিন।
তবে এসবই একটা রহস্য। স্যাফায়ারের রহস্য, সান্তে-ভিয়েখজের রহস্য, শিফনের রহস্য, নাবিকের কলারের রহস্য, সে রশ্মির রহস্য যেটা মানুষকে অন্ধ করে দেয়, আর তোমার নীল চোখ যা আমার হৃদয় ভেদ করে যায়।


প্রেম

কাউকে হতাশ করা একটা গোলাপ পাওয়ার যোগ্য।
তোমাকে হত্যা করতে দাও আমাকে, ধীরে ধীরে,
সুনিপুণভাবে; তোমার প্রেমিক
তোমাকে বৃদ্ধ এক নারীতে পরিণত করে,
রূপান্তরিত করে তোমাকে একটা স্তনে, একটা দোয়াতে,
যতক্ষণ পর্যন্ত না তুমি চিৎকার করে ওঠো।


টেস্টামেন্ট

বেমানান ছিলাম শুধু আমি,
তারা ভাবতো এসব হতো আমার কৌশলে।
আমার বামপাশটা জোর করে,
বলে আমি যেন আমার ডানপাশটা ব্যবহার করি।

আমার জীবন এরকমই–
ছেড়ে যাওয়ার চিন্তা হাজির করে হতাশা,
আমার সামনে নানা জিনিসের আড়ম্বর,
যাই না কোথাও, কখনও।

স্থিতিশীলতার মৃত্যু ফিরে আসুক,
আমাদের সঠিক জায়গায় নিয়ে যাক।
নিজ ফেরেশতাকে বিস্মিত করতে আমার ভয় করে,
আমার চেহারায় যে আঁকা আমার খাপছাড়া শিল্প।