কুহরণ কালে

noname

এক

তখন সমাপ্ত শীতে পাথরে পাথরে উষ্ণতা নিতে

আবিরের রাঙাটুকু নিয়ে গেল গোলাপ

সুবাসে সুবাসে রেণুতে তাহার কীসের আলাপ!


অভিমানে চলে যায় বাতাসের পালে

রেণুগুলো বাসা বাঁধে তাহাদের গালে

গালে গালে গেঁথে যায় কামনার তাপ


তাপ গলে এসে পড়ে হিমালয় চাপে

সকল কোমল দেখ অধরের মাপে

 

দুই

ক্যাম্পে তখন দুর্গম স্বাক্ষর

পাখিরা গেয়ে যায় অবসরের গান

ফিরে আসা গভীর বাতাস বলে ওঠে

সাগর সংক্রান্তির রাতে

পাখিরা সব চিল হয়ে যায়!


ফুল ছুঁয়ে দেখে, অন্ধকারে মধ্যদিনে কত
ঝড়ো হাওয়ায় ঝড়ো হাওয়ায় বিক্ষত

 

তিন

সে এক দুর্ঘটনা। কদম পাতায় ফেলে দেয়া রাতের আগুন। আগুনেরা হেঁটে এসে বলল, ওই যে দেখছো হলুদ ঘাসের নাম, তার পথ বেয়ে বেয়ে চলে গেলেই পৃথিবীর শেষ ঠিকানা।
আমি বললাম, ওগুলো তো পালকভরা সূর্যোদয়। তবু এত যে সংশয়, কখন তুমি বলবে এসে, আমার নেই কোনো পৃথিবী হারানোর ভয়

আমাদের ফুলগুলো বেসামাল বন্ধনী
ছুটি নিয়ে চলে যায় সকল নিঃশ্বাসে
আর নয় একটুও ছায়ালাপ
কখন আগুন যেন, লেগে যায় বাতাসে

 

চার

মাঝে মাঝে মনে হয় এইসব আগুন ও বাতাসের কোনো অর্থ নেই। যেমন নেই যেকোনো মিলিত অক্ষরের। কিন্তু আগুনমুখো পতঙ্গগুলো কিংবা বাতাসচেরা ধ্বনিগুলো কিংবা মিলিত অক্ষরের অভিঘাতগুলো মিলিত হয়ে কেমন বিচিত্র রং তৈরি করে। এলোমেলো রংগুলোর চোখের দিকে তাকালে নানাসব চেহারা ভেসে ওঠে। চেহারাগুলো স্পষ্ট করার জন্য যখনই মনোযোগ দেই গভীরে। তখনই এলোমেলো রংগুলোর ভেতর থেকে চকিত উড়ে যায় প্রজাপতি। চোখ রগড়ে তখন আবার তাকাই। দেখি ফাঁকা হয়ে যাওয়া রং- স্থান আবারো পূরণ হয়ে যাচ্ছে এলোমেলো রঙে।

চোখ ফিরিয়ে নেই। ভাবি তারচেয়ে উড়ন্ত প্রজাপতির দিকে তাকানো ভালো।


সকল সবুজ রঙে মিলিত অক্ষর

রঙের ভেতরে তার জ্বলন্ত স্বাক্ষর

 

পাঁচ

তাহলে কোন অভিঘাতে লিখেছিলাম এইসব কলরব! আবেগ-বিদ্ধ করে কে আমাকে লিখিয়ে নিয়েছিল এইসব উড়ন্ত স্বাক্ষর! কে আমাকে সংযত করেছিল যুক্তির শৃঙ্খলে! কে আমাকে সংহত করেছিল গতি বিনির্মাণে! কে আমাকে নিবিষ্ট করেছিল পরিমিত ব্যবহারে!


কতিপয় চিহ্ন তখন মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে আমার সামনে। আমি বলি, কী এমন বহন করো তোমরা। তারা বলে, আমরা বহন করি চোখের সমস্ত অন্ধকার। তাকিয়ে দেখো তোমার সবুজ বোতাম

 
তখন

সবুজ বোতাম ছুঁয়ে নেমে আসে জ্যোতি

জ্যোতির ভেতরে দেখি মুগ্ধ প্রজাপতি


আরও পড়ুন-

একটা বহু পুরনো নেই