অমুদ্রিত দূরের এপিক

Tushar-ok
মিউজিকরুম


জলের পয়ার বাজে ধীরে ধীরে

এই কাচঘেরা মিউজিকরুমে— 

পাখোয়াজ খুলে দিয়ে গান গায়

বিকেলের জলডাহুকের প্রাণ!


শাদা বেড়ালের আত্মা উঠে আসে

দ্যাখো প্লানচেট ভোরে— 

আর হরিণের ছালে ঢাকা পড়ে থাকে

শুধু একজোড়া ঠাণ্ডা স্তন!


ঘুঙুরের দানা যেন গড়িয়ে পড়ছে

তোমার শাড়ির ভাঁজ থেকে— 

দোয়েলের লগবুকে লেখা হতে থাকে

রাতচেরা আরক পেয়ালা!


কার্নিশের ছায়াভ্রমে দ্যাখো

বেজে যেতে থাকে ঘুমঘোর সুরের বেহালা!


সান্ধ্যভাষ


দোয়েলের সান্ধ্যভাষে

উড়ে আসে

যত পাতার প্রতিভা—


ভ্রমরের ভাঁজপত্রে

লেখা হয় দূরের লেফাফা—


তোমার না বলা কথা

জড়ো হতে হতে

খুলে যায় সুরের কুয়াশা—


যার ভাঁজে ভাঁজে

শুধু গাঁথা আছে

রক্তস্বর হরণ তিয়াসা!


লিপিকর


যেন আমি এক

লিপিকর—

না দেখতে পাওয়া

এক ব্রেইল শিক্ষক—

হোঁচট খাওয়া

কোনো সাঁটমুদ্রাক্ষরিক—

বসে আছি এই

সমুদ্রের তীরে—


একেকটা ঢেউয়ের পর

আছড়ে পড়া ঢেউয়ে

লিখে যাচ্ছি

অমুদ্রিত দূরের এপিক!


সিন্দুক


সিন্দুকের ডালা খুলে দেখা যায়

যত চকমকি জহরত,

দামি ধাতু, চাক চাক সোনা,

পিঙ্গল অঙ্গুরি—


লাল মখমলে শোভা পায়

হীরক জড়োয়া, বাহারি বোতাম,

তুলে রাখা ভূর্জপত্র—

তীরন্দাজের বাঁকানো তীর,

সোলেমানি তরবারি—

অভ্রদ্যুতি, কুমুদ মুকুট! 


নারীর ভেতরেও আছে

এক গোপন সিন্দুক—

সিন্দুকের ডালা খুলে দেখা যায়

জগতের রত্নবিভা

নক্ষত্রে নক্ষত্রে ঝলকানো প্রভা—

সুতনুকা দেহের প্রতিভা!


পানশালা

সব রাস্তা আজ বন্ধ, মধ্যরাতে, এই কুহক নগরে। রেস্তোরাঁর ঝাড়বাতিগুলো সব বন্ধ—

লণ্ঠনের নীলাভ আলোয় দ্যাখো অদ্ভুত দেখাচ্ছে এই প্রত্নশহরটাকে! হরিণের ছালে

ঢাকা শব্দাবলি নিয়ে আমি ধীর পায়ে হেঁটে যাচ্ছি মধ্যরাতের পানশালায়। জানি ওখানে

প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে কতিপয় শব্দগ্রস্ত কবি!


আচমকা হাওয়ায় হারিয়ে যাওয়া একটি ভায়োলিন উড়ে এল আমার হাতে, আমার

পুরনো শব্দগুলো ঘুরপাক খেতে খেতে করোটির রেখাপথে সুর হয়ে বাজতে থাকল!

 


আরও পড়ুন-

দিনান্তে কে খুলে দিল মুঠি