আমার শরীরে তোমার অনবদ্য আগুনশরীর

noname

বসন্ত

আমার জন্য সাত সাতটি দোজখ পুড়ছে

আর তুমি তার ভেতরে দাঁড়িয়ে হাসছ!

তোমার কিছুই পুড়ছে না

চুল না, মুখ না, কাঞ্চনজঙ্ঘাও পুড়ছে না

 

অথচ আমার প্রতিই খোলা রয়েছে তোমার

রাঙা-নাঙ্গা এক জোড়া চোখ

 

আমি কারও না কারও জন্য, নাকি ঠিক

তোমারই জন্য জানি না বসে আছি এই রঙ্গতীরে

বাঁশি বাজে, দোতরাও সঙ্গ দিয়ে যায়

আমার শরীরে তোমার অনবদ্য আগুনশরীর

 

বসে আছি : তুমি বের হয়ে এলে

যেন ফিরে যেতে পারি শীতপাহাড়ের দিকে

 

ইউসুফ

কীভাবে এ পাথরে এসে বসেছে বালক

আলোয় ভরে ওঠে এই কুয়াঘর

তাতে জলদাম আর পোকারাও দারুণ বিস্মিত 

কীভাবে এই শ্যামদেশে নেমে এল বালক ইউসুফ!

 

এখানে কে নেমে এসেছে জানি না

হাওয়াদূত না-কি সেই আদি বৃষ্টি-মিকাইল

 

একা বসে রয়েছে ইউসুফ

যার পায়ে দ্বাদশ তারকাপতন

 

হাতে তরমুজ ফেটে গেলে যেমন

লাল হয়ে ওঠে হাতের সুরত

আজ সেরকমই হয়ে আছে এই ছোট্ট কুয়াঘর

 

জলপোকাই-বা কেন,

এ আলোয় আমরাও কি কম বিস্মিত!

 

অকারণ

তুমি জলের উপরে দৌড়াচ্ছ

মেঘভর্তি এই রিঙরিঙে পায়ে

 

তহবন মোটেই ভেজে না!

 

গুমোট গাঙের তীরে কত শত লোক বসে আছে

 

তুমি ঘুমিয়েছ হাওয়ার ওপরে,

পাতা ভেসে এলে

এই একরতি পাতার ওপরে!

 

গুপ্ত জলগুল্ম জানে

জলের ওপরে

একা একা কেন দৌড়ে যাচ্ছ তুমি

 

মেঘে মেঘে হয়ে গেছে বেলা

চেরাপুঞ্জিতে তবু বৃষ্টিকণাও ঝরছে না

 

অবশেষ

একই গান গাইছ শুনি

দু-জনেই

একই ঘরে

সকালবেলায়

 

বেলা হয়ে এল

 

এ কী গান গাইছ বসে

দু-জনেই

গোধূলিবেলায়

 

হাসপাতালে

সাগরবেলায়

 

ছায়াবাজি

আমি কারও ছায়া ছুঁয়ে দেখিনি কখনো

 

একা হেঁটে হেঁটে তুমি যেখানে গিয়েছ

তার চারপাশে কালো হরফেরা দল বেঁধে ঘোরে

তোমার পেছনে শত বিদ্বানের ভিড়

ঘাড়ের পেছনে সাপ, এলোমেলো করমচা-হিজল

 

ছায়া ছুঁয়ে দেখিনি কখনো। তাই

হেঁটে হেঁটে চলে গেছি পাতার শয্যায়;

দেখেছি পাখির মেলা, জলবর্ণঝোপ,

দেখেছি ফুলদল, আলো প্রজাপতি

ফের ঝাঁপ দিতে গেছে প্রাচীন প্রথায়

 

দেখি বেড়ে গেছে ভিড়:

আমি ছায়া ছুঁতে আজ শব্দকর পেছনে দৌড়াই