শোকগুলোকে চোখ বানিয়ে নাও
পেয়ে যাওয়া সমস্ত শোক, চোখ বাড়িয়ে দিয়েছে আমার। আর তোমার
দুটো চোখই রয়ে গেছে, থেকে থেকে কান্না ঝরে বহু শোক পেয়ে।
শোকগুলোকে চোখ বানিয়ে ফেল, কান্না আর থাকবে না তোমার
বহুচোখে। মৃত্যু যে জয়ধ্বনি দিয়ে চলে যায় লাল রাস্তায় পা ফেলে
ফেলে, ভয় জ্বেলে জ্বেলে তা দেখে আর চোখ বন্ধ করতে হবে না।
খুলে যাবে অন্তরমহল
খাঁচা থেকে হারানো এক হরিয়াল আমি। সন্ধে পার হয়ে গেলেও খাঁচায়
ফিরিনি বলে বসে বসে ভেবে ভেবে ঘুমিয়ে গেছ। ঘুমিয়ে থেকো, এ
হরিয়াল আর ফিরবে না, যতক্ষণ না সব মানুষের বুকে পুঁতে দিতে
পারবে হৃথিবীর বাণী।
তোমার হাড়ের গুঁড়া, আমার হাড়ের গুঁড়া বাতাসে উড়ে উড়ে ঘুরে এসে
মানুষের চোখে একদিন লাগবে কাঁটার মতো আর অন্ধ হয়ে যাবে
পৃথিবীর সব মানুষেরা। তুমি যদি ইচ্ছে কর, আমি যদি ইচ্ছে করি
জেগে ওঠা হবে। আমাদের এসব হৃকথায় খুলে যাবে তাদের চোখের
অন্দরমহল, অন্তরমহল।
পৃথিবীরও পাখা আছে
রৌদ্রের ভেতর হাঁটতে গিয়ে ফোস্কা পড়িল শরীরে—এই শরীরেই। আর
তুমি দিব্যি সূর্যের গায়ে হাত বুলিয়ে বল—‘কী ঠাণ্ডা এই শান্ত সূর্য’
যেমনভাবে একজন কৃষককে গরুর গায়ে হাত বুলিয়ে বলতে
শুনেছিলাম—‘শান্ত স্বভাবের প্রিয় গরু আমার আর কিছুক্ষণ লাঙ্গল
টানো।’
আমি কিন্তু স্বীকার করি লবণ থেকেই সবকিছুর সৃষ্টি হয়ে গেছে। ছোট
ছোট সোনার মাছ নদীতে সাঁতরায়, প্রাণটা কাতরায়। এই পৃথিবী
কোনো একদিন থাকবে না, কারণ, পৃথিবীরও পাখা আছে।