অবরুদ্ধ সময়ের কবিতা

দূর যাত্রা

noname

১.

গোপন স্বপ্ন। নিঃশব্দ গৃহের চারপাশে ছায়া-মৃত্যু। পৃথিবীটা রোগা-পাতলা হয়ে গেছে। আতঙ্কে ছড়িয়ে আছে ইথার অশ্রু। বহিঃস্থ মানচিত্র ভূগোলের সমার্থক হয়ে ওঠে। অন্তঃস্থ মানচিত্র যেন মনো-ভূগোলের বোঝাপড়া। আহরিত অভিসম্বন্ধের নকল, ঈশ্বরের ঔদ্ধত্য। যেন পৃথিবী থেকে দেখা যায় এক মহাশুন্য। স্বর্গহীন নিঃসঙ্গ। দরজার সীমারেখায় কবিতার শিরোনাম। দূরযাত্রার সর্ম্পকে একটি স্টপওয়াচ ও রক্ষিত স্বপ্নরা বর্হিগামী...

২.

চারদিকে অশ্রুহীন মৃত্যু। বিচারহীন অপরাধ।যুদ্ধ নয়; শাস্তি ও নয় তবুও মানুষ সঙ্গ-নিরোধ। বিভেদ নয় তবুও একসাথে দূরে থাকার গল্প দেশে থেকে দেশে। দূরত্বই যেখানে ভালো থাকার একমাত্র উপায়। দূরে সরে যায় মানুষ আবার কাছে আসবে বলে। জ্বর-ঠোঁট ভয়ে কাতর। শেষ চুমুর জন্য ছুঁতে চায় না প্রেমিকের ঠোঁট। শ্রেণিহীন অসুখে সুখ খোঁজে তিনফুট দূরতায়। জীবন এখানে একটু দূরে থাকুন, ভালো থাকুন

শ্লোগানে মুখর!...

৩.

যখন জাগলাম তখন দুপুর। মধ্য বসন্ত। কাকহীন ফুটপাত। শব্দহীন নির্জনতার ধারাপাত রাস্তা জুড়ে। মানুষ-পাগুলি গৃহবন্দি। পাহাড়ের বুক নাচে। সমুদ্রের ডলফিন মনের সুখে সাঁতার কাটে। সৈকতে কচ্ছপেরা রোদ পোহায়। খবরের কাগজের শীর্ষে যূথবদ্ধ জয় জীবানুর ঘুর্ণিপাক। লাফানো গুজব ও মানবীয় রাত্রিরা এক বিছানায় নিদ্রারত। কুয়াশাময় গভীরতায় কচি সিরীষের ডালের ফাঁকে চিকন চাঁদ। তারাদের কোমল ফুল পাহাড়ের চূড়োয় উপচে পড়ে যা ছিলো বাক্সবন্দি। পাখিরা গান করে, পাতারা শিষ দেয়। পৃথিবীর যুদ্ধের পাগুলো মাড়িয়ে যায় মাটি। মানুষের বুকের গভীরে তৈরি  হয় নীল গর্ত। দূরযাত্রার ঠিকানা অজানা। মানুষের চেনা শব্দ কেবল লকডাউন।