অবরুদ্ধ সময়ের কবিতা

যদি এইবার বেঁচে উঠি

noname

যদি এইবার বেঁচে উঠি

তৃণলতার কাছে দয়া ভিক্ষা চাইব

বৃক্ষের শিকড়ের কাছে আনত প্রার্থনায় মগ্ন হব

আমার অনাদি সুর ও স্রোতে ভাসতে চাই বলে

কণ্ঠ কাঁপিয়ে স্বরতন্ত্রী ছিঁড়েখুঁড়ে

আমি রক্তপাত ঘটাবো

 

যে নারীর আঙুল খসে পড়া বীজ একদিন

মাটির অন্তর ছিঁড়ে শস্যদানা হয়ে উঠেছিল

সেই আদি মেঠো কৃষক মায়ের কাছে

আমি হাঁটুগেড়ে বসে করুণা চাইব

 

নদী ও বৃক্ষ থেকে আমি পলাতক

পবনের নাও আর বাইতে পারি না

সেখানেও ফেরারি আমি

শুদ্ধতম নিশ্বাসের দাবি গ্রাহ্য না করায়

নবজাতকের কাছে

দাগী আমার হুলিয়া জারি

 

সাদা হাতি, চিতল হরিণ, বাঘের পৃথিবীকে

জিঘাংসু শিকারি যে কাপুরুষ যোদ্ধা

বীরের আহ্লাদিত বরমাল্য হাতে পায়

আমি তারজন্য যে কোনো প্রায়শ্চিত্ত মেনে নেব

 

নিরবিচ্ছিন্ন লোভ আর হটকারিতায়

ঊনমানুষকে মানবিক রূপান্তরে আদিবিদ্যায়

নতমুখে দুহাত পাতব আজীবন

জরা মারী মড়কের পৃথিবীতে

ডাক্তার মইনের কাছে করজোরে ক্ষমা চাইব

 

যদি এই বার বেঁচে যাই

মানবিক বাগানখানি তছনছ করার দায়ে

অসংকোচে ফাঁসির দণ্ডে

অবলীলায় ঝুলে যাব

 

তবে দয়ার্দ্র হওয়ার জন্যে

তবে ক্ষমা চাইবার জন্যে

তবে প্রায়শ্চিত্ত করবার জন্যে

পৃথিবীর সমস্ত প্রাণের জন্যে

আরেকটি জীবন আমার বড়ো প্রয়োজন।