করোনায় আমরা ভীত নই। বরং মোকাবেলা করছি গৃহে অন্তরীণ থেকে। এতে হয়ত কিছুটা বাড়তেও পারে মানসিক চাপ। তাই আসুন, খুলে দেই মনঘরের জানালা। নিজেকে চালিত করি সৃজনশীলতায়। আপনি নিয়মিত লিখছেন, বা এটাই হতে পারে আপনার প্রথম গল্প। লিখুন ফেসবুকে। চটজলদি ৫০০ শব্দের গল্প, বাংলা ট্রিবিউনের জন্য। একইসঙ্গে নমিনেট করুন আপনার পছন্দের আরও ১০ জন লেখককে। সেরা ১০ জন লেখক পাচ্ছেন কাগজ প্রকাশনের বই। আর অবশ্যই হ্যাশট্যাগ দিন #বাংলাট্রিবিউনসাহিত্য
তারা পরেরদিন বের হবার সিদ্ধান্ত নিল, রাতুলের নানাবাড়ি আর দাদাবাড়ি একই জায়গায় তাই তেমন ভ্রমণ নিয়েও ঝামেলা হবে না। একবার শুধু যাবে, আরেকবার আসবে। কিন্তু এই সুখ আর সইল না তাদের। দেশে করোনাভাইরাস আক্রমণ নেয়ার খবরে সকল ডাক্তারদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আর সকল পরিবহন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে, তাই তাদের আর যাওয়া হচ্ছে না। দুঃখের বিষয় হলো তাদের শহরেই করোনা রোগী ধরা পড়েছে। পরেরদিন থেকে করোনা ইউনিটে ডিউটি শুরু করল নাসিম আর ইভা। ছেলেটাকে আগে রাতের বেলা বুকে জড়িয়ে ঘুমাতে পারত তারা। এখন আর তাও পারে না। তাদের শরীরেও চলে আসতে পারে করোনাভাইরাস, সেই ভয়ে তারা ছেলের কাছেও আসে না। বাসায় না এসে তারা বাইরেই কোথাও একটা থাকা শুরু করল। ছেলেকে মাঝেমধ্যে দেখতে আসে তারা। ছেলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকে আর বাবা-মা বাইরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অঝরে কাঁদে। রাতুল ছেলেটা হয়তো কাঁদে না, ও বুঝেই নিয়েছে যে কেঁদে আর কোনো লাভ নেই। এইটুকু বয়সেই জীবনের নির্মম পরিণতি বুঝে নিয়েছে সে। এখন না কাঁদলেও বাবা-মায়ের আসার সময়ের অপেক্ষা করে রাতুল। কিন্তু ইদানিং তার মা একাই আসে, বাবা সঙ্গে আসে না। সে মায়ের কাছে জিজ্ঞেস করে, বাবা কেন আসে না?
মা উত্তরে বলে, বাবা অনেক ব্যস্ত। আসার সুযোগ পাচ্ছে না।
আচমকা একদিন বাবাও আসে কিন্তু হেঁটে নয়, অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে। বাবাকে একটা সাদা কাপড়ে মোড়ানো। নাসিম বিদায় নিয়েছে করোনাভাইরাসে। ছেলেকে তার আর আদর করা হলো না। ছেলে হয়তো বুঝতেই পারছে না যে বাবা আর আসবে না!