কবিতা

অস্তিত্ববাদাম

অস্তিত্ববাদাম

কেন তরজমাহীন, এইভাবে বসে আছি হাড়ের বন্দরে
মাছরাঙা, কি জানে কিভাবে বাঁচি পৃথিবীর কন্দরে

বেহুদা জীবন নিয়ে হাঁটতে থাকি পায়ের ধুলো দিয়ে
অনিমিখ চোখ মুছে নেই, সারাৎসার জল দিয়ে ধুয়ে

প্রতিদিন শরীর তো ঢেকে রাখি প্রিয় পোশাক পরে
তবে জানি না, মনকে আড়ালে রাখব কী করে

প্রত্যেকের হাড়ের হারমোনিয়াম বাজায় কে অন্যান্য
আর এই দেহের দোকান জুড়ে সাজানো সব বিচিত্র পণ্য।

 

কঅন্তর্গত বাস্তুহারা

এই পৃথিবী ছেয়ে গেছে অজস্র উজান যাত্রীর ভিড়ে
এদিকে গানপ্রিয় প্রাণও, গান ভুলে বসে আছে মীড়ে

এই জীবন পারাবার থেকে হৃদয়ঘন হয়ে আসা মুহূর্ত
ফুরিয়ে যায়, সম্ভোগের সূর্যাস্তের আগে পুড়ে যায় বিমূর্ত

রোদের ঘ্রাণ নিয়ে উড়ে উড়ে চলে যায় দূরগামী, কেউ
ভাঙা জাহাজের নাবিক সামুদ্রিক দিগ-নির্ণয় মুছে দেয় ঢেউ

কত কালো উপসর্গ নিয়ে আলো-হাওয়া ঘুরে যায় বৃত্তের ব্যাসার্ধ
স্পন্দন, মচ্ছবের মতো কাকতালীয় বিবর্তন থেকে উঠে আসে আরাধ্য

নিবিড় আর নীরব পাহাড়ের বুক চিড়ে নেমে আসে অপেক্ষা-নদী
যেন কুমারীর স্তন বেয়ে কোনো ভারবাহী উর্বর করে তোলে সমভূমি অবধি

পাহাড়ের প্রদোষ ডিঙিয়ে উঠে আসে জলপাই রঙের ছাউনি
জন্ম নেয় সবুজ বিষাদ, বাস্তুহারার কাতর কার্পাস মহলের চাহনি...

 

জীবন-জিইয়ে

মানুষ, মূলত ভেতরে ভেতরে হাউস
জিইয়ে রেখে বাঁচে, আর হাউই ফুরিয়ে
গেলে মরে পড়ে থাকে মাটির মশানে।

জানি না, কেন যে এই যাপন-যন্ত্রণা থিতিয়ে যায়
প্রতিদিন, তবু কেবলই বয়ে যায় সময়ের স্রোত-সিম্ফনি
জলজ জীবন-বহরের অবতল।

তবুও, এই জীবন মুড়িয়ে রাখি, ফেলে আসা
সেই বিগত জীবন দিয়ে, জিইয়ে রাখি আমৃত্যু,
তাই জলের আয়নায় বারবার ভেসে ওঠে প্রচ্ছায়া।

বিভিন্ন বসন্ত পারাপারের ছল করে করে, আমরা
কাটিয়ে দিচ্ছি, এ যেন রং-বেরঙের জীয়ন কাঠি ভুলে
প্রিজমের মতো আয়ু খুঁজে ফিরি, অন্তরিন নি'সীমতায়।