জাবিতে ‘বিভাগ উন্নয়ন ফি’ বাতিলের দাবিতে ব্যাংক অবরোধ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে ‘বিভাগ উন্নয়ন ফি’ বাতিলের দাবিতে অগ্রণী ব্যাংকের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটায় প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ব্যানারে ব্যাংকের সামনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ব্যাংক অবরোধঅবরোধের কারণে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম কার্যত স্থগিত রয়েছে। ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রমেও দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। অবরোধ চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নানা আশ্বাসে সমঝোতার চেষ্টা করলেও আন্দোলনকারীরা তাদের দাবিতে অনড় রয়েছেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের প্রতিনিধি দলের বৈঠক চলছে।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ক্ষেত্রে মূল ভর্তি ফি’র বাইরেও বিভাগগুলো ‘বিভাগ উন্নয়ন ফি’র নামে নগদ অর্থ আদায় করে থাকে। বিভাগভেদে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণহীন এই ফি’র পরিমাণ ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। অধিকাংশ বিভাগের জন্য কোনও রশিদ সরবরাহ করে না। এছাড়া প্রতিবছর এই ফি বৃদ্ধির অভিযোগও রয়েছে। মূলত এই ফি’কে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে তা বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুক হেলাল অনিক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি ফরম বিক্রির মাধ্যমে ১০ কোটি টাকার ওপরে আয় করেছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভাগ উন্নয়ন ফি আদায়ের কথা কোথাও উল্লেখ নেই। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এই অবৈধ নীতি চলে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে।’

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আবিদ সরকার সোহাগ বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি থেকে আয়ের ৪০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে ইউজিসির। সেটি কার্যকর হলে এভাবে অবৈধভাবে উন্নয়ন ফি আদায় করতে হতো না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ টাকা কোষাগারে জমা না দিয়ে প্রতিবছর নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’

বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটির সচিব ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আলী (শিক্ষা) বলেন, ‘বিভাগগুলো যাতে সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকার বেশি উন্নয়ন ফি না নেয় সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের দাবি এই অঙ্ক শূণ্যে নামিয়ে আনা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেছে।’

/এমও/